কথাটা
হাসির খোরাক জোগাতে পারে। তবে এই ম্যাচ থেকে জিম্বাবুয়ের প্রাপ্তি একটাই
উইয়ান মুল্ডারের চেয়ে বেশি রান করা। সেটা অবশ্য দুই ইনিংস মিলিয়ে।
তবে
ফলো অনে পড়া জিম্বাবুয়ে দুইবারের চেষ্টায়ও দক্ষিণ আফ্রিকার এক ইনিংসের
রানের ধারেকাছেও যেতে পারল না। ইনিংস ও ২৩৬ রানে হেরে প্রোটিয়াদের কাছে ২-০
ব্যবধানে হলো ধবলধোলাই। সিরিজের প্রথম টেস্ট ৩২৮ রানে জিতেছিল সফরকারীরা। এ
নিয়ে জিম্বাবুয়ে সফরে টেস্ট খেলতে গিয়ে প্রতিবারই ম্যাচ বা সিরিজ জিতল
দক্ষিণ আফ্রিকা।
খেলাটা বুলাওয়ের কুইন্স স্পোর্টস ক্লাব মাঠে হলেও এটিকে
হয়তো ‘মুল্ডারের ম্যাচ’ বা ‘মুল্ডারের টেস্ট’ হিসেবেই মনে রাখবেন
ক্রিকেটপ্রেমীরা। দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথমবারের মতো নেতৃত্ব দিতে নেমেই
উইয়ান মুল্ডার উপহার দেন অপরাজিত ৩৬৭ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস, যা টেস্টে
অধিনায়কত্বের অভিষেকে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ।
চাইলে ব্রায়ান লারার অপরাজিত
৪০০ রানের কীর্তি ভেঙে টেস্ট ইতিহাসের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের মালিক
হওয়ারও চেষ্টা করতে পারতেন। কিন্তু দল যথেষ্ট রান করায় এবং কিংবদন্তি লারার
রেকর্ডটা অক্ষুণ্ন রাখতে তা করেননি।
গতকাল বুলাওয়ে টেস্টের দ্বিতীয়
দিনের মধ্যাহ্ন বিরতিতে সবাইকে চমকে দিয়ে লারার কীর্তি থেকে ৩৩ রান দূরে
থাকতে প্রথম ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করেন মুল্ডার। দক্ষিণ আফ্রিকার রান তখন ৫
উইকেটে ৬২৬।
প্রথমবার ব্যাটিংয়ে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার অভিষিক্ত অফ
স্পিনার প্রেনেলান সুব্রায়েনের ঘূর্ণিতে (৪/৪২) মাত্র ১৭০ রানে অলআউট হয়
জিম্বাবুয়ে। ফলো অনে পড়ে দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে নেমে ১ উইকেটে ৫১ রান তুলে
কাল দ্বিতীয় দিন শেষ করে স্বাগতিকেরা।
আজ তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে ২
উইকেট হারালেও মধ্যাহ্ন বিরতির পর করবিন বশের তোপে (৪/৩৮) ৬৭ রানের মধ্যে
শেষ ৭ উইকেট হারিয়ে ২২০ রানে অলআউট হয়।
প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয়
ইনিংসেও শূন্য রানে ফিরেছেন জিম্বাবুয়ের কুন্দাই মাতিগিমু। টেস্ট ইতিহাসের
১৪৮ বছরের ইতিহাসে মাতিগিমু ৪৬তম খেলোয়াড়, যিনি অভিষেকে দুই ইনিংসেই শূন্য
রানে আউট হয়েছেন।
জিম্বাবুয়ে দুই ইনিংস মিলিয়ে করেছে ৩৯০ রান। মানে
মুল্ডারের ৩৬৭–এর চেয়ে ২৩ বেশি। লারার প্রতি সম্মান না দেখালে জিম্বাবুয়ে
এক মুল্ডারের কাছেই টেস্ট হেরে যেত!
ম্যাচসেরা যে মুল্ডারই হয়েছেন, তা না বললেও চলত। দুই টেস্টে ৫৩১ রান করে ও ৭ উইকেট নিয়ে তিনিই হয়েছেন সিরিজসেরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ১১৪ ওভারে ৬২৬/৫ ডি. (মুল্ডার ৩৬৭*, বেডিংহাম ৮২, প্রিটোরিয়াস ৭৮; চিভাঙ্গা ২/১১২, মাতিগিমু ২/১২৪)।
জিম্বাবুয়ে: ১৭০ ও ৭৭.৩ ওভারে ২২০ (ওয়েলচ ৫৫, আরভিন ৪৯, কাইতানো ৪০; বশ ৪/৩৮, মুতুসামি ৩/৭৭, ইউসুফ ২/৩৮, মুল্ডার ১/২৪)।
ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংস ও ২৩৬ রানে জয়ী।
সিরিজ: ২ ম্যাচ সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকা ২-০ ব্যবধানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ ও সিরিজ: উইয়ান মুল্ডার (দক্ষিণ আফ্রিকা)।