কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় পার্টনার প্রোগ্রামের অংশ হিসাবে দেবিদ্বার উপজেলায় কৃষক-কৃষণীদের সমাবেশ ‘পার্টনার কংগ্রেস’ উপজেলা পরিষদ হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২৩ জুন) উপজেলা কৃষি অফিসারের কার্যালয় দেবিদ্বার এর আয়োজনে উক্ত কংগ্রেসে পার্টনার ফিল্ড স্কুলের অন্তর্ভুক্ত কৃষক-কৃষাণী ও পার্টনার ফিল্ড স্কুল এর বাইরের কৃষক-কৃষাণী, সাংবাদিক, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, এনজিও প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধি ও উপসহকারি কৃষি অফিসারবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ বানিন রায়ের সভাপতিত্বে উক্ত কংগ্রেসে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক কৃষিবিদ আইউব মাহমুদ। দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদের প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আবুল হাসনাত খাঁন সকালে উদ্বোধনী সেশনে অংশগ্রহণ করে পার্টনার কংগ্রেস এর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি কৃষকদের উদ্দেশ্য করে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা ও পরিকল্পনা নিয়ে দেবিদ্বারের কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। পরবর্তীতে পার্টনার প্রোগ্রামের কুমিল্লা অঞ্চলের মনিটরিং অফিসার মো. সারোয়ার জামান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) শেখ আজিজুর রহমান ও উপজেলা সমবায় অফিসার মাইনুদ্দিন সেশন পরিচালনা করেন ও কৃষক-কৃষাণীদের পার্টনার প্রোগ্রামের নানা দিক, কৃষক সেবা কেন্দ্র সংগঠনের কার্যক্রম, নথি ব্যস্থাপনা ও রেজিস্ট্রেশন বিষয়ে আলোচনা ও দিক নিদের্শনা প্রদান করেন।
পার্টনার কংগ্রেসে উপস্থিত কৃষক-কৃষাণীগণ তাদের নিজেদের ও কৃষক সেবা কেন্দ্রের নানা সফলতার কথা তুলে ধরেন। একদিকে, ইউসুফপুর পার্টনার ফিল্ড স্কুল ও কৃষক সেবা কেন্দ্রের কৃষক এমদাদুল হক তাদের সমিতিতে সাড়ে আট লক্ষ টাকা সঞ্চয়ের পাশাপাশি ইউনিয়নের ৩০ হেক্টর জমিতে জিংক সমৃদ্ধ ব্রি ধান১০২ জাতের ধান চাষের সফলতার গল্প শুনান। অপরদিকে, পৌরসভার ছোট আলমপুর পার্টনার ফিল্ড স্কুল ও কৃষক সেবা কেন্দ্রের কৃষক ওসমান সরকার সংগঠনের দেড় লক্ষ টাকা সঞ্চয়ের পাশাপাশি উত্তম কৃষি চর্চা (জিএপি) এর আওতায় সবজি উৎপাদনকারী কৃষক বনে যাওয়ার গল্প শুনান। সুলতানপুর ইউনিয়নের কুরছাপ গ্রামের ভূমিহীন কৃষক ব্রি ধান১০০ পরবর্তী ১০ টন বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণের গল্প যেমন কংগ্রেসে উঠে আসে, বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের প্রায় ১০ টন ব্রি ধান১০৮ বীজ উৎপাদন ও সরবরাহের বিষয়টি কংগ্রেসে আলোচিত হয়।
উপজেলা কৃষি অফিসার বানিন রায় জানান, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেবিদ্বার উপজেলায় ব্রি ধান ১০০ পরবতীতে ধানের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে ১৯৮ হে. জমিতে, ধানের পরিবর্তে অন্যান্য ফসলের চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে ১২০ হেক্টর জমিতে ও সেচ সাশ্রয়ী প্রযুক্তি সম্প্রসারিত হয়েছে ৩৮ হেক্টর জমিতে। তাছাড়া, শুধু দেবিদ্বার নয় দেশের অন্তত ৩০ টি উপজেলায় ২ টনের বেশি ব্রি ধান১০০ পরবর্তী আমন ও বোরো ধানের বীজ সরবরাহ করে বিভিন্ন এলাকায় ব্রি ধান১০০ পরবর্তী জাত সমূহ সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখছে।