প্রদীপ মজুমদার :
কুমিল্লার
লালমাই উপজেলার নির্বাহী অফিসার হিমাদ্রি খীসা, উপজেলায় যোগদানের পর থেকে
হাতে সময় পেলেই ছুটে যান কোনো বিদ্যালয় বা মাদরাসায়। শুরু করেন ক্লাস
নেওয়া। একজন পেশাদার শিক্ষকের মতোই বাচ্চাদের সঙ্গে মিশে গিয়ে মজার সব
গল্পের মাধ্যমে শিক্ষাদানে পটু তিনি। শুধু পড়ানোর ক্ষেত্রে নয়,
শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতিতেও নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। মাদরাসা পরিদর্শনে
গিয়ে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের শিখালেন গণিত। মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুরে উপজেলার
বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের আল ইসরা মাদরাসা (বালিকা) পরিদর্শনে গিয়ে তিনি
চতুর্থ শ্রেণির গনিত ক্লাস নিয়েছেন।
গনিত ক্লাস চলা অবস্থায় তিনি
শিক্ষার্থীদের পূর্ববর্তী অধ্যায় থেকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। এসময় তিনি শিশু
শিক্ষার্থীদের গনিত রপ্তের বিভিন্ন নিয়ম শেখান।
পরে তিনি মাদরাসার প্রথম শ্রেণি, দ্বিতীয় শ্রেণি ও তৃতীয় শ্রেণির ক্লাসে গিয়ে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার খোঁজ খবর নেন।
পরিদর্শনকালে
তিনি মাদরাসাটির আবাসিক শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার পাশাপাশি নিয়ম মেনে ঘুম,
খেলা, এবাদত, খাওয়া ও স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন। শিক্ষকদের সাথেও
তিনি মতবিনিময় করেন।
আল ইসরা মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মাছুম বিল্লাহ
মুহাজির বলেন,পরিদর্শনে এসে ইউএনও স্যার আমাদের মাদরাসার বিভিন্ন
শ্রেণিকক্ষে যান এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার খোঁজ খবর নেন। পরিদর্শনের এক
পর্যায়ে ম্যাডাম চতুর্থ শ্রেণির ক্লাসে যান। সেখানে গনিতের পাঠদান চলছিল।
তখন ম্যাডাম নিজেই শিক্ষার্থীদের গনিতের বিভিন্ন নিয়ম শেখাতে শুরু করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। তিনি ক্লাসে যাওয়ার
খবরে শিক্ষার্থীরা ভয় পাওয়ার কথা। কিন্তু আজ ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের তিনি
একজন শিক্ষিকা ও মায়ের আদরে গনিত শেখালেন।
পাঠদানের বিষয়ে ইউএনও বলেন,
‘বাচ্চাদের পড়াতে খুব ভালো লাগে। শিক্ষাজ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়ার মতো আনন্দ আর
কিছুতে নেই। ছোট ছোট বাচ্চাদের পড়ানো অসাধারণ ব্যাপার। এতে দুটি লাভ হয়।
এক, বাচ্চাদের পড়াতে পারছি আবার ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো সমস্যা আছে কি
না, সেটাও সরেজমিনে দেখতে পারছি।’
ইউএনও হিমাদ্রী খীসা বলেন, সুযোগ
পেলেই আমি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে বের হই। শিক্ষার্থীদের পাঠগ্রহণের
খোঁজ খবর নিই। আল ইসরা মাদরাসা পরিদর্শনে গিয়ে চতুর্থ শ্রেণির
শিক্ষার্থীদের গনিতের ক্লাস নিয়েছি। শিক্ষার্থীরাও ক্লাসে আমাকে সাড়া
দিয়েছে।