কুমিল্লায় পানিতে ডুবে নিহত তিন শিশু কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে শুক্রবার দুপুরে কুমিল্লার গোমতী নদীর টিক্কাচর ব্রিজ এলাকা থেকে নাঈম নামে একই সরের মরদহ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ব্রাহ্মণপাড়ায় দুই শিশুর মরদহ উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, ফুটবল খেলা শেষে সহপাঠীদের সাথে গোমতীনদীতে গোছল করতে নেমে তলিয়ে যায় হাফেজ মোঃ নাইম নামে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোর। শুক্রবার সকাল ১০ টার দিকে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার জগন্নাথপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিকাল তিনটায় সদর উপজেলার টিক্কারচর এলাকায় নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া, ব্রাহ্মণপাড়ায় পুকুরে ডুবে নুসরাত (৮) ও আরিয়ান (৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার ১৬ মে দুপুরে সদর ইউনিয়নের কল্পবাস (পূর্বপাড়া ) সিদ্দিক মেম্বারের বাড়ির পুকুরে নুসরাত এবং কাইমপুর (কসবা) গ্রামের ডোবায় ডুবে আরিয়ানের মৃত্যুর খবর জানা গেছে। নিহত নুসরাত কল্পবাস পূর্বপাড়া এলাকার সাইফুল ইসলামের মেয়ে। আরিয়ান ব্রাহ্মণপাড়া সীমান্তে কাইমপুর গ্রামের ফারুকুল ইসলামের ছেলে। 
নিহত নাইমের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গোসলের সময় নদীতে কম গভীরতার এলাকা থেকে নাইম ও তার বন্ধুরা হঠাৎ বেশি পানিতে পড়ে যায়। চেষ্টা করে অপর দুই বন্ধু সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও পানির স্রোতে তলিয়ে যায় নাইম৷ ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় মানুষ ও স্বজনেরা মিলে চেষ্টা করে তাকে খুজে পায় নি। ব্যর্থ হয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা চলে যাবার সময় হঠাৎ বিকেল ৩ টায় ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে টিক্কারচর সেতু এলাকায় ভেসে ওঠে নাইমের মরদেহ৷ স্থানীয় বাসিন্দা কয়েকজন মরদেহটি দেখে ফায়ার সার্ভিসকে আবারো ডেকে আনে। পরে ফায়ার সার্ভিস ও স্বজনরা নাইমের মরদেহ উদ্ধার করে৷
নিহত হাফেজ নাইম কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার বাজার চৌয়ারা এলাকার বাসিন্দা জহিরুল ইসলামের ছেলে। জহিরুল ইসলামের দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে নাইম সবার ছোট।
হাফেজ নাঈমের স্বজন রাশেদুল ইসলাম বলেন, নাইম সদর উপজেলার বালুতুপা এলাকায় একটি মাদ্রাসা থেকে কোরআন হাফেজ হয়েছেন। গতকাল সে মাদ্রাসা থেকে গ্রামের বাড়িতে যায়। সেখান থেকেই আজ গোমতী নদীর তীরে বন্ধুদের সাথে ফুটবল খেলতে যায়। খেলা শেষে গোসল করতে গিয়ে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। তার মরদেহ স্বজনেরা বাড়ি নিয়ে গিয়েছে। 
অন্যদিকে নিহত শিশু নুসরাতের ফুফু মিনুয়ারা বেগম জানান, ঘটনার দিন দুপুরে নুসরাত বাড়ীর পাশের কয়েকজন শিশু সাথে খেলার ছলে পুকুরে পরে যায়। পরে তার সাথে থাকা অন্যান শিশুরা বাড়িতে গিয়ে বলে নুসরাত পুকুরের পানিতে পরে যায়। নুসরাতের পরিবারের লোকজন পুকুরে গিয়ে অনেক খোজাখুজি পর ডুবন্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে। মুমূর্ষু অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মৃত্যু ঘোষণা করেন। নুসরাত কল্পবাস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। 
অপরদিকে কসবা উপজেলার কাইমপুর গ্রামের ফারুকুল ইসলামের ছেলে আরিয়ান (২ বছর ৯ মাস) বয়সি এক শিশু একই দিন বিকেলে বাড়ির পাশে ডোবায় পরে ভেসে ওঠে পরে স্বজনরা তাকে কে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকেও মৃত্যু ঘোষণা করে। 
এ ব্যপারে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডাক্তার শঙ্খজিৎ সমাজপতি বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই শিশু নুসরাত ও আরিয়ানের মৃত্যু হয়েছে।