ধন-সম্পদ, প্রভাব-প্রতিপত্তি কে-না চায়। জীবনে একটু স্বস্তি, শান্তির জন্য সবাই সম্পদ উপার্জনে আগ্রহী। আজকাল দিন-রাত এক করে প্রতি মুহূর্তে মানুষ ছুটছে সম্পদের নেশায়। এতো বেশি সম্পদের নেশা পেয়েছে পরিবার, নিজেকে দেওয়ার মতো সময় নেই কারো হাতে।
জীবনযাপনের জন্য সঙ্গতি থাকা জরুরি। তাই সম্পদ উপার্জনও দোষণীয় কিছু নয়। তবে সম্পদের পেছনে মাত্রাতিরিক্ত সময় ব্যয় করা উচিত নয়। জীবন চলার মতো হালাল উপার্জনই যথেষ্ট একজন মানুষের জন্য। সম্পদের আধিক্য আল্লাহর কাছে হিসাবের মুখোমুখি করে তুলবে। এর সঠিক ব্যয় না হলে পরকালের পাকড়াও থেকে বাঁচা দায় হয়ে যাবে। তাই সম্পদ উপার্জনের ক্ষেত্রে পরিমিতভাবে রাখা জরুরি। একইসঙ্গে এ সম্পর্কিত কোরআন-হাদিসের বাণী জেনে রাখতে হবে।
সম্পদের মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধিকে রাসূল সা. কিয়ামতের আলামত বলে উল্লেখ করেছেন। হাদিসে ভাষ্য অনুযায়ী কিয়ামতের অন্যতম আলামত হচ্ছে মানুষের ধন-সম্পদ বৃদ্ধি পাবে। ফকীর-মিসকীন খুঁজে পাওয়া যাবেনা। সদকা ও জাকাতের টাকা নিয়ে খোঁজাখোঁজি করেও নেওয়ার মত কোন লোক পাওয়া যাবে না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
‘কিয়ামত সংঘটিত হবে না, যে পর্যন্ত না তোমাদের মধ্যে এত প্রাচুর্য দেখা দেবে যে তা উপচে পড়বে। এমনকি সম্পদের মালিক তখন চিন্তা করবে-কে তার সদকা গ্রহণ করবে? সদকা নেওয়ার জন্য মানুষকে ডাকা হবে। তখন সে বলবে, আমার প্রয়োজন নেই।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৫৭; বুখারি, হাদিস : ১৪১১) অন্য হাদিসে রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, ‘কিয়ামত সংঘটিত হবে না, যে পর্যন্ত না তোমাদের মধ্যে এত প্রাচুর্য দেখা দেবে যে তা উপচে পড়বে। এমনকি সম্পদের মালিক তখন চিন্তা করবে-কে তার সদকা গ্রহণ করবে? সদকা নেওয়ার জন্য মানুষকে ডাকা হবে। তখন সে বলবে, আমার প্রয়োজন নেই।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৫৭; বুখারি, হাদিস : ১৪১১)
কিয়ামতের এই আলামতটি একাধিক সময়ে প্রকাশিত হবে। ওমর ইবনে আব্দুল আজিজের শাসন আমলে তা প্রকাশিত হয়েছিল।
ইয়াকুব ইবনে সুফিয়ান বলেন, ওমর ইবনে আব্দুল আজিজের শাসন আমলে লোকেরা প্রচুর সম্পদ নিয়ে আমাদের কাছে আগমন করতো। তারা আমাদেরকে বলতো তোমরা যেখানে প্রয়োজন মনে কর সেখানে এগুলো বিতরণ করে দাও। গ্রহণ করার মত লোক না পাওয়া যাওয়ার কারণে তাদের কাছ থেকে কেউ মাল গ্রহণ করতে রাজি হতো না। শেষে মাল ফেরত নিতে বাধ্য হতো। মোট কথা তাঁর শাসন আমলে জাকাত নেয়ার মতো লোক ছিল না।
কিয়ামতের এই আলামতটি ইমাম মাহদীর আমলে পুনরায় প্রকাশিত হবে বিশেষজ্ঞ আলেমরা মতামত দিয়েছেন। (ফাতহুল বারী, ১৩/৮৩)
এ বিষয়ে হাদিসে রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন, ‘শপথ সেই সত্তার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! অচিরেই তোমাদের মধ্যে ন্যায়বিচারকরূপে মারিয়াম তনয় [ঈসা (আ.)] অবতরণ করবেন। তারপর তিনি ক্রুশ ভেঙে ফেলবেন, শূকর হত্যা করবেন, জিজিয়া রহিত করবেন এবং ধন-সম্পদের এরূপ প্রাচুর্য হবে যে কেউ তা গ্রহণ করবে না।’ (বুখারি, হাদিস : ২২২২)