কুমিল্লার
দেবিদ্বারে প্রথমবারের মতো পুষ্টিসমৃদ্ধ চিকন জাতের ব্রি-১০২ ধানের
পরীক্ষামূলক চাষে মিলেছে সাফল্য। স্থানীয় কৃষি অফিস বলছে, এ ধান উৎপাদন
বাড়ানোর পাশাপাশি কৃষিতে বিপ্লব ঘটাবে। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত
করবে। সোমবার দুপুরে উপজেলার গুনাইঘর দক্ষিণ ইউনিয়নের পদ্মকোট গ্রামে
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মাঠ ভর্তি এ ধান চাষের সফলতার গল্প। ব্রি-১০২
ধানের বাম্পার ফলন পেয়ে খুশি স্থানীয় কৃষকরা।
ব্রি-১০২ ধান চাষী
পদ্মকোট গ্রামের রেজাউল করিম, মো. ফুল মিয়া সরকার ও মো. সফিকুল ইসলাম বলেন,
স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শে ১০০ শতাংশ জমিতে এবারই প্রথম পরীক্ষামূলক
ভাবে ব্রি-১০২ জাতের ধান চাষ করেছি। এটির ফলন ব্রি-২৯ থেকেও অনেকগুণ বেশি।
প্রতি গোছায় কুশির পরিমাণ গ্রড়ে ২৬-২৮ টি। এ ধানে চিটা’র পরিমাণ নাই বললেই
চলে। আমরা অল্প খরচে বাম্পার ফলন পেয়েছি। আমাদের দেখে অনেক চাষী এ ধান
চাষের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
দেবিদ্বার উপজেলা কৃষি অফিস
সূত্রে জানা গেছে, নতুন উদ্ভাবিত জাত ব্রি-১০২ প্রিমিয়াম কোয়ালিটি সম্পন্ন
উফশী বালাম জাতের বোরো ধান। এটির প্রতি কেজিতে ২৫.৫ মিলি গ্রাম জিংক রয়েছে।
ব্রি-২৯ ধান থেকেও এটির ফলন বেশি। এ ধান চিকন, লম্বা ও ভাত ঝরঝরে হয়। এটির
চাষে প্রতি শতাংশ জমিতে ৩০ কেজি বা তার চেয়েও বেশি শুকনা ধান পেয়েছে
চাষীরা। মাত্র সাড়ে চার মাসের মধ্যে এ ধান পেকে যায়। প্রতি গোছায় কুশির
পরিমাণ গড়ে ২৬-২৮টির বেশি হয়। এ ধানের ভাতের সাথে জিংক এর ঘাটতি পূরণ করে
শরীরের শর্করা, আমিষ ও চর্বি জাতীয় খাবারে সহায়তা করে। এছাড়াও শিশুদের
ক্ষুধামন্দা দূর করা, বেটে হয়ে যাওয়া, ডায়রিয়া হতে রক্ষা করাসহ অন্যন্য
রোগবালাই মুক্ত হওয়া যায়। স্বাস্থ্যগত ভাবে ব্রি-১০২ জাতের ধান মানুষের
জন্য বেশ উপকারী।
দেবিদ্বার উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ বানিন রায়
বলেন, লম্বা, চিকন প্রিমিয়াম কোয়ালিটির এই ধানের ভাত ঝরঝরে এবং খেতে
সুস্বাদু। স্বল্প খরচে ধানের বাম্পার ফলন পেয়ে লাভবান হয়েছেন কৃষকরা। খাদ্য
ও পুষ্টির চাহিদা মেটাতে ও লাভজনক কৃষির জন্য নতুন নতুন উফশী জাত চাষের
কোন বিকল্প নেই। দেবিদ্বার উপজেলায় এ বছর ব্রি ধান ১০১, ব্রি ধান ১০২, ব্রি
ধান ১০৪, ব্রি ধান ১০৫ ও ব্রি ধান ১০৭ পরীক্ষামূলক চাষ হয়েছে। এর মধ্যে
ব্রি ধান ১০২ এর মাঠ পরিদর্শন করে দেখা যায়, ধান পাকলেও জাতটির ডিগ পাতা
সবুজ আছে, খাড়া, চিটার পরিমাণ একেবারেই কম। এগুলো উফশী জাতের বৈশিষ্ট্য।
কৃষক ফলনে বেশ খুশি। কৃষকদের বীজ সংরক্ষণের জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে। তবে
স্থানীয় উপসহকারি কৃষি অফিসারদের সাথে যোগাযোগ করে এখনই বীজ সংরক্ষণ করা
যাবে বলেও জানান তিনি।