বড়
ভাই মাকে গালাগাল করতো। উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করতো। তাই বোন, দুলাভাই ও আপন ছোট
ভাই মিলে হত্যা করে বড় ভাইকে। পরদিন সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয়রা।
ঘটনাটি কুমিল্লার বরুড়া পৌরসভার শালুকিয়া গ্রামের।
বৃহস্পতিবার (২৮
মার্চ) রাতে তিন জনকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বরুড়া থানার
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী এসব তথ্য জানান।
জানা
গেছে, বুধবার (২৭ মার্চ) বরুড়া পৌরসভার শালুকিয়া এলাকার নিজ ঘর থেকে শরীফ
হোসেন (৩৫) নামের এক যুবকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর
নিহত শরীফ হোসেনের মা রৌশন আরা বেগম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।
এ
ঘটনায় গ্রেফতার আসামিরা হলেন হত্যাকা-ের শিকার শরীফের ছোট ভাই আরিফ হোসেন
(২২), দুলাভাই মো. নাছির উদ্দিন (৪৩) ও বোন খুকি আক্তার (৩৫)।
পুলিশ
জানায়, গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা হত্যাকা-ে জড়িত থাকার কথা
স্বীকার করে। তারা জানায়, শরীফ উচ্ছৃঙ্খল ছিল। সে মাদক সেবনসহ বিভিন্ন
অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিল। শরীফ তার মাকে প্রায়ই গালিগালাজ ও মারধর করতো।
ছোট ভাই আরিফ হোসেনের সঙ্গেও তার ঝগড়াঝাঁটি ছিল। কিছুদিন আগে আরিফের একটি
অটোরিকশা শরীফ জোর করে বিক্রি করে। এরপর থেকে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ
সৃষ্টি হয়। তা ছাড়া শরীফ এলাকার লোকজনের বিভিন্ন রকম ক্ষতি করায় লোকজন তার
বড় বোন খুকি আক্তারের কাছে বিচার দেয়। এ কারণে বড় বোন শরীফকে শাসন করার
জন্য বিভিন্ন কথাবার্তা বলতো। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বড় বোন খুকি
আক্তার, স্বামী মো. নাছির উদ্দিন ও ছোট ভাই আরিফ হোসেন তাদের একজন
প্রতিবেশীকে নিয়ে পরিকল্পনা করে যে, শরীফ হোসেনকে মারপিট করে পঙ্গু করে ঘরে
বসিয়ে খাওয়াবে।
এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) রাতে স্থানীয়
একটি পুকুরপাড়ে শরীফ হোসেনকে একা পেয়ে তারা রড, দা ও টর্চলাইট দিয়ে তার
মাথা, হাত-পা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। পরে তার হাত-পা বেঁধে
আসামি নাছির উদ্দিন বাড়ির উঠানে নিয়ে যায়। সেখানে আবারও মারপিট করে। এতে সে
দুর্বল হয়ে গেলে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় শরীফ হোসেনকে তার ঘরে ফেলে আসে।
সকালে তাকে মৃত উদ্ধার করা হয়। হত্যাকা-ে ব্যবহৃত দা, রড, টর্চলাইট উদ্ধার
করেছে পুলিশ।
ওসি মো. রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী জানান, গ্রেফতার আসামিদের
আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আরিফ ও নাছিরের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি লিপিবদ্ধ
করা হয়েছে।