মুরাদনগর
উপজেলা হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি মানসুর কবিরের উপর
সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে শনিবার বিকেলে
কুমিল্লার বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আদালতের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল
ম্যাজিষ্ট্রেট তাদেরকে কুমিল্লার কেন্দ্রিয় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
শনিবার দুপুরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
স্থানীয়
ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার রাতে মাহফিলের বয়ানে যোগ দেওয়ার
উদ্দেশ্যে উপজেলার কোম্পানীগঞ্জের নগরপাড়ের বাসা থেকে বের হন মুফতি মানসুর
কবির। বাসা থেকে কিছুদূর এগোলে পূর্ব থেকে ওতপেতে থাকা একদল মুখোশধারী
দুর্বৃত্ত দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তার ওপর অতর্কিত ঝাঁপিয়ে পড়ে।
সন্ত্রাসীরা তাকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন
স্থানে গুরুতর জখম করে। এ সময় তার আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে
হামলাকারীরা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
রক্তাক্ত অবস্থায়
স্থানীয়রা মুফতি মানসুর কবিরকে উদ্ধার করে প্রথমে মুরাদনগর উপজেলা
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে
কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে (কুমেক) স্থানান্তর করেন। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন
রয়েছেন।
উক্ত হামলার ঘটনায় শনিবার সকালে ভুক্তভোগী শিক্ষক পরিবারের পক্ষ
থেকে মুরাদনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে
মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান জামিল খানের নির্দেশনায় পুলিশের
একাধিক টিম বিভিন্ন স্থানে সাঁড়াশি অভিযান চালায়। অভিযানে ঘটনায় জড়িত
থাকার অভিযোগে নগরপাড় গ্রামের মৃত বাদল হোসেনের ছেলে মারুফ হোসেন (২৯),
খোকন মিয়ার ছেলে জুয়েল (২৫) ও হুমায়ুন কবিরের ছেলে সুমনকে (৩৪) গ্রেপ্তার
করা হয়।
মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান জামিল খান ঘটনার
সত্যতা নিশ্চিত করে দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে জানান, "শিক্ষকের ওপর হামলার
খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ তৎপরতা শুরু করে। মামলার পর দ্রুততম সময়ে আমরা
তিনজনকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেছি। এই ঘটনার সাথে আর কেউ জড়িত আছে কি
না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপরাধী যেই হোক, তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।"
উল্লেখ্য,
সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত মুফতি মানসুর কবির উপজেলার করিমপুর মাদরাসার
সহকারী পরিচালক ও শিক্ষক হিসেবে কর্মরত এবং এলাকায় একজন সজ্জন আলেম হিসেবে
পরিচিত। তার ওপর এই ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনায় স্থানীয় আলেম সমাজ ও সাধারণ
মানুষের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
