কুমিল্লার
হোমনায় থানা হেফাজতে গলায় ওড়না পেচিয়ে হামিদা বেগম ওরফে ববিতা নামে এক
নারী আসামির আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে
৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া ববিতা হোমনা উপজেলার ঘনিয়ারচর গ্রামের
সৌদি প্রবাসী খলিল মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী। সতীনের সাথে ঝগড়া ও সতীনের ছেলেকে
ছুরিকাঘাতের ঘটনায় পুলিশ বুধবার ওই নারীকে আটক করে থানায় হেফাজতে নিয়ে
আসে। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে সোপর্দ করার কথা ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।
কিন্তু এদিন ভোরেই থানা হেফাজতে মৃত্যু হয় তার।
বিষয়টি নিশ্চিত করে
হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, হামিদা
বেগম ববিতা নামে ওই নারী বুধবার সকালে তার সতীনের সাথে ঝগড়ার এক পর্যায়ে
সতীনের ছেলে সায়মনকে (১১) ছুরিকাঘাত করে। পরে সায়মনকে প্রথমে হোমনা উপজেলা
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে অবস্থার অবনতি দেখে ঢাকা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। আহত ওই ছেলে বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন ববিতাকে আটক করে গাছের সাথে বেঁধে রাখে। খবর পেয়ে
পুলিশ বুধবার বিকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে ববিতাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ওই নারী গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে।
তিনি
আরো জানান, ছুরিকাঘাতের ঘটনায় আহত সায়মনের চাচা স্বপন মিয়া বাদী হয়ে রাতেই
থানায় মামলা দায়ের করেন। আটকের সময় ওই নারীর সাথে ৪ বছরের একটি বাচ্চা
ছিল, তাই তাকে নারী ও শিশু সহায়তা ডেস্কে রাখা হয়েছিল। এছাড়া তার সাথে অন্য
নারী আসামী ও নারী গ্রামপুলিশ ছিল। যেহেতু থানা হেফাজতে এ ঘটনা ঘটেছে, তাই
বিষয়টি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে অবহিত করা হয়েছে।
কুমিল্লার হোমনা
সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আবদুল করিম সাংবাদিকদের জানান,
“সতীন ও তার সন্তানকে ছুরিকাঘাতে আহতের ঘটনায় স্থানীয়রা ববিতাকে গাছের সাথে
বেঁধে রাখে-খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে থানায়
নিয়ে আসে।দু'জনকে ছুড়িকাঘাতের ঘটনায় অভিযোগ দিলে তাকে হাজতে রাখা হয়-সেখানে
জেসমিন আক্তার নামে আরো একজন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ছিলো। বৃহস্পতিবার ভোরে
ববিতা ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেন। সকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের
উপস্থিতিতে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি)
মামলা দায়ের করা হয়েছে।
