প্রধান
নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব ও রিটার্নিং
অফিসারসহ দেশের সব নির্বাচন অফিসে নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ দিয়েছে
নির্বাচন কমিশন।নির্বাচন পরিচালনা শাখা থেকে শনিবার আইজিপিসহ সংশ্লিষ্টদের
কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ সংসদ
নির্বাচন ও গণভোট হবে। বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির
উদ্দিন তফসিল ঘোষণা করেছেন।
তফসিল ঘোষণার পরদিনই ঢাকায় একজন সম্ভাব্য
প্রার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং লক্ষ্মীপুর নির্বাচন অফিসে অগ্নিসংযোগের
ঘটনা ঘটেছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে নিরাপত্তা জোরদারের উদ্যোগ নিল
সাংবিধানিক সংস্থাটি।
ইসির এক কর্মকর্তা বলেন, চার নির্বাচন কমিশনার ও
ইসি সচিবের ‘পুলিশ এসকর্ট’ বাড়ানো; ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা রিটার্নিং
অফিসারদের জন্য ‘গানম্যান’ নিয়োগ ও অন্য রিটার্নিং অফিসারদের নিরাপত্তা
বাড়ানো এবং সারা দেশের নির্বাচন অফিসের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য চিঠি
দেওয়া হয়েছে।
নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশনার আগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা,
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, স্বরাষ্ট্র সচিব, মহাপুলিশ পরিদর্শক,
ডিএমপি পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে শুক্রবার ও শনিবার আলাপ সেরেছেন ইসি সচিব
আখতার আহমেদ।
তিনি বলেন, “গতকালের ঘটনা (হাদির ওপর গুলি), লক্ষ্মীপুর,
মঠবাড়িয়ায় দুটি নির্বাচন অফিসে অগ্নিকাণ্ড ও সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি
বিবেচনায় নিয়ে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
তফসিল ঘোষণা হওয়ায় বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ইসির নানা পদক্ষেপের পাশাপাশি রাজনৈতিক দল ও সম্ভাব্য প্রার্থীসহ সবার সহযোগিতা চান তিনি।
শনিবার
রাতে ইসি সচিব বলেন, “নির্বাচন কমিশন, রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাচন অফিসের
নিরাপত্তায় চিঠি দেওয়া হয়েছে। সার্বক্ষণিকভাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, সচিব,
বিশেষ সহকারী, আইজিপির সঙ্গে নিয়মিত কথা বলেছি।
“ভোটের এ সময়ে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। পরিস্থিতির উত্তরণ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে।”
নির্বাচনে আচরণবিধি প্রতিপালনে রাজনৈতিক দলসহ সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিজ নিজ উদ্যোগে আগাম পোস্টার অপসারণের অনুরোধ জানান তিনি।
রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা:
ত্রয়োদশ
সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে ৬৯ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা থাকছেন। সহকারী
রিটার্নিং কর্মকর্তা থাকছেন পাঁচ শতাধিক। রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব
পালন করবেন ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, ঢাকা-চট্টগ্রাম-খুলনার
আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং ৬৪ জেলা প্রশাসক।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ
বলেন, “জেলা প্রশাসকদের স্থানীয়ভাবে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে এবং
রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নিচ্ছেন। পাশাপাশি
আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা রয়েছেন তিনজন। তাদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা
নিশ্চিতের জন্য বলা হয়েছে।”
ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ
কমিশনারকে পাঠানো ইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, রিটার্নিং অফিসার হিসেবে
নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় ‘গানম্যান’ নিয়োগের জন্য
ইসি সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
নির্বাচন অফিসের নিরাপত্তা:
আগারগাঁওয়ে ইসি
সচিবালয়, সারা দেশে ১০টি আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস, ৬৪ জেলা নির্বাচন অফিস ও
৫২২টি উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিস রয়েছে। আইজিপিকে ইসির চিঠিতে বলা হয়েছে,
তফসিল ঘোষণার পর লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাচন অফিস ও পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া
নির্বাচন অফিসে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। সব আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস, জেলা
নির্বাচন অফিস, উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে গুরুত্বপূর্ণ নথি, নির্বাচনি
সরঞ্জাম সংরক্ষিত আছে। ফলে সরঞ্জামসহ আঞ্চলিক, জেলা, উপজেলা নির্বাচন
অফিসের কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ মোতায়েনের
জন্য ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
সিইসি, ইসি ও ইসি সচিবের বিশেষ নিরাপত্তা:
প্রধান
নির্বাচন কমিশনার, চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিবের বাসভবন, নির্বাচন
ভবন ও অফিস যাতায়তে পুলিশি নিরাপত্তা দিতে ডিএমপি কমিশনারকে নির্দেশনা
দিয়েছে ইসি। ইসি বলেছে, তফসিল ঘোষণার পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য
চার নির্বাচন কমিশনার এবং সিনিয়র সচিবের বিশেষ নিরাপত্তা বিধান প্রয়োজন।
বর্তমানে
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের জন্য গাড়িসহ ‘পুলিশি এসকর্ট’ থাকলেও
নির্বাচনকালীন তার জন্য অতিরিক্ত আরও একটি গাড়িসহ ‘পুলিশি এসকর্ট’ প্রয়োজন।
এ ছাড়া চার নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিবের
ঢাকাস্থ বাসভবন ও অফিসে যাতায়াতসহ সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার জন্য গাড়িসহ
‘পুলিশি এসকর্ট’ প্রয়োজন।
