
সান্তিয়াগো
বার্নাব্যুর সবুজ গালিচায় যেন এখন শুধু হতাশার দীর্ঘশ্বাস। ঘরোয়া লিগের
ব্যর্থতার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগেও পরাজয়ের তিক্ত
স্বাদ পেল রিয়াল মাদ্রিদ। গত রাতে (বুধবার, ১০ ডিসেম্বর) নিজেদের মাঠে
ম্যানচেস্টার সিটির কাছে ২-১ গোলের হারে শুধু পয়েন্ট খোয়ানোই নয়, কোচ জাভি
আলোনসোর ভবিষ্যৎ নিয়ে তীব্র জল্পনার আগুনে ঘি ঢেলে দিল।
লা লিগায়
ধারাবাহিক হোঁচট খাওয়ার পর এই ম্যাচটি ছিল লস ব্ল্যাঙ্কোসদের জন্য
আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার এক সুবর্ণ সুযোগ। কিন্তু চোটের কারণে রক্ষণভাগের
একাধিক স্তম্ভ- দানি কারভাহাল, ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আর্নল্ড এবং এদার
মিলিতাও মাঠের বাইরে থাকায় রিয়ালের দুর্বলতা প্রকট হয়ে ওঠে। এমনকি দলের
অন্যতম ভরসা কিলিয়ান এমবাপ্পে ফিট না থাকায় সাইডলাইনে বসে দেখতে হয়েছে
ম্যাচের পুরোটা।
ম্যাচের শুরুটা রিয়াল মাদ্রিদের জন্য আশার আলো নিয়ে
আসে। ২৮ মিনিটের মাথায় প্রতিপক্ষের রক্ষণকে ছিন্নভিন্ন করে দেওয়া জুড
বেলিংহামের থ্রু পাস থেকে দারুণ ফিনিশিংয়ে দলকে ১-০ গোলে এগিয়ে দেন
রদ্রিগো। এই মৌসুমের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে উইঙ্গারের প্রথম গোলটি
বার্নাব্যুতে সাময়িক স্বস্তি ফেরায়।
তবে সেই আনন্দ স্থায়ী হলো মাত্র
সাত মিনিট। রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়ার একটি তুলনামূলক দুর্বল সেভ কাজে
লাগিয়ে ম্যানসিটির নিকো ও’রিলি দ্রুত সমতা ফেরান। আর বিরতিতে যাওয়ার ঠিক
আগে, ৪৩ মিনিটে অ্যান্টনিও রুডিগারের হ্যান্ডবল থেকে পাওয়া পেনাল্টি থেকে
নিখুঁত শটে আর্লিং হালান্ড বল জালে জড়িয়ে পেপ গার্দিওলার দলকে ২-১ ব্যবধানে
এগিয়ে দেন।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফেরার মরিয়া চেষ্টা চালায় স্বাগতিক
রিয়াল। একাধিক আক্রমণ শাণালেও ম্যানসিটির জমাট রক্ষণে বারবার প্রতিহত হয়
তাদের প্রচেষ্টা। উল্টো, রিয়ালকে বড় ব্যবধানের লজ্জা থেকে বাঁচিয়েছেন থিবো
কোর্তোয়া। ম্যাচজুড়ে অবিশ্বাস্য মোট ছয়টি সেভ করে তিনি ব্যবধান ২-১ এ আটকে
রাখেন।
এই জয়ের ফলে ম্যানসিটি ৬ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় চতুর্থ
স্থানে উঠে এসেছে। অন্যদিকে, সমান সংখ্যক ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে রিয়াল
মাদ্রিদ নেমে গেছে সপ্তম স্থানে, যা দলের সামগ্রিক পারফরম্যান্সের ওপর আরও
চাপ বাড়ালো।
বার্নাব্যুতে এখন কোচ জাভি আলোনসোর দিন গোনা শুরু। এই হার হয়তো তার বিদায় ঘণ্টা বাজানোর পথটিকেই আরও প্রশস্ত করে দিল।
