নিজস্ব
প্রতিবেদক: দর বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার পর সরকারের পক্ষ থেকে ‘কারণ দর্শাও’
নোটিস ও বৈঠকের জন্য আমন্ত্রণ পাওয়া ব্যবসায়ীরা নতুন দরে বোতলের সয়াবিন তেল
বাজারে ছেড়েছেন, যেখানে প্রতিটি বোতলের গায়ে প্রিন্ট করা দর লেখা রয়েছে।
শুক্রবার ঢাকার মহাখালী কাঁচবাজারে পুরনো দরের সঙ্গে নতুন দরের সয়াবিন তেলের বোতলও পাওয়া যায়।
গ্রাহকদের
‘পছন্দ’ অনুযায়ী নতুন ও পুরনো দরে সয়াবিন তেল নেওয়ার সুযোগ রাখার কথা
বলেছেন এই বাজারের রাজিব জেনারেল স্টোরের স্বত্বাধিকারী রাজিব হোসেন।
তিনি
বলেন, “পুরনো দরের সব তেল আছে। যে নতুনটা নেবে তার জন্য নতুন রেট, পুরনোটা
নিলে আগের রেটই। আমরা তো কাস্টমারের লগে ক্যাচাল করতে পারবো না-তাই দুইটাই
রাখছি।”
আগের দর অনুযায়ী প্রতি লিটার বোতলের সায়বিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮৯ টাকা। এখন ৯ টাকা বাড়িয়ে ১৯৮ টাকা দরে বাজারে ছাড়া হয়েছে।
প্রতি পাঁচ লিটারের বোতলের দর ৯২২ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৯৬৫ টাকা।
দুই লিটারের বোতলে ৮ টাকা বাড়িয়ে ৩৯৬ টাকা দর ঠিক করা হয়েছে।
একই
বাজারের শাহরিয়ার ভ্যারাইটিজ স্টোরের কর্মী মাসুদ রানা বলেন, “আমরা কি
করুম। কারণ নাই, জানা নাই-হঠাৎ বাড়াইলো তেলের দাম। এহন বেশি দামে আনলে তো
বেশি দামেই বিক্রি করা লাগবে।”
সরকারের অনুমোদন ছাড়াই ভোজ্য তেলের দাম
বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া ব্যবসায়ীদের ‘কারণ দর্শাও’ নোটিস দিয়ে বৈঠকে বসার
আমন্ত্রণ জানানোর কথা আগের দিন সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ
বশিরউদ্দীন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফার্ম গেইটের খামার বাড়িতে বস্ত্র
অধিদপ্তরের উদ্যোগে ‘জাতীয় বস্ত্র দিবস’ উদযাপনে আয়োজিত কর্মশালা শেষে
সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “ব্যবসায়ীরা আমাদের সঙ্গে কথা বলেননি। আমরা
তাদের কারণ দর্শানোর নোটিস জারি করেছি। একই সাথে, আমরা তাদের একটি সভায়
আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছি।”
গত ১৪ অক্টোবর ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর
ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি
ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন।
বোতলের সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে
ছয় টাকা এবং খোলা তেল আট টাকা করে বাড়ানোর ঘোষণা আসে। তার এক দিন আগে
খুচরা বাজারে বোতলের সয়াবিন তেলের দাম ১৮৯ থেকে বেড়ে ১৯৮ টাকা হয়ে যায়।
খোলা তেলের লিটারে বাড়ে ৫ টাকা।
কিন্তু সরকারের তরফে সেই সিদ্ধান্তে সায়
মেলেনি। সরকারকে না জানিয়েই আমদানিকারক ও বাজারজাতকারী কোম্পানিগুলো
ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়েছে বলে দাবি করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
দেশি পেঁয়াজের ঝাঁজ আরও বেড়েছে:
মুড়িকাটা
পেঁয়াজ উঠলেও পুরনো দেশি পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি
হচ্ছে ১৪০ টাকায়। ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন বাজারের দৈনিক নিত্য প্রয়োজনীয়
পণ্যের দর প্রকাশ করে রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ
(টিসিবি)।
সংস্থাটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার দেশি পেয়াঁজ প্রতি কেজি ১২০-১৪০ টাকা বিক্রি হয়েছে।
মহাখালী
কাঁচাবাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা ইদ্রিস আলী বলেন, “পেঁয়াজের প্যাচ যে কবে
খুলবে কে জানে। ৭০-৮০ টাকা থাকার কথা পেঁয়াজের দাম। শীত আসলেও দাম কমছে না,
উল্টো এক কেজিতে ১০ টাকা বাড়লো। আমাদের উপায় নাই, বেশি দামেই কিনতে হবে।”
