আল্লাহর শুকরিয়া বা কৃতজ্ঞতা আদায় অনেক
গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আল্লাহ তার বান্দাদের দুই ভাগে ভাগ করেছেন। এক অংশকে
বলেছেন ‘শাকের’ বা কৃতজ্ঞ, আরেক অংশকে বলেছেন ‘কাফুর’ বা অকৃতজ্ঞ। আল্লাহ
বলেন, আমি তাকে পথ দেখিয়ে দিয়েছি; হয় সে কৃতজ্ঞ হবে, না হয় অকৃতজ্ঞ হবে।
(সুরা দাহর: ৩) কোরআনের আরেকটি আয়াতে শুকরিয়া আদায়ের নির্দেশ দিয়ে ও
অকৃতজ্ঞ হতে নিষেধ করে আল্লাহ বলেন, তোমরা আমার শুকরিয়া আদায় করো, অকৃতজ্ঞ
হয়ো না। (সুরা বাকারা: ১৫২)
আয়েশা (রা.) থেকে বলেন, আল্লাহর নবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রাতে এত বেশি নামাজ আদায় করতেন যে তার
দুই পা ফুলে যেতো। একদিন আমি বললাম, আল্লাহর রাসুল! আল্লাহ তো আপনার আগের ও
পরের সব গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। তবু আপনি কেন এত কষ্ট করছেন? নবীজি
(সা.) বললেন, এত নেয়ামতের পরও আমি কি আল্লাহর কৃতজ্ঞ বান্দা হতে আগ্রহী হবো
না? (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)
আল্লাহর শুকরিয়া বা কৃতজ্ঞতা আদায়ের
প্রকৃত উপায় হলো দৃঢ় ইমান, নেক আমল, সব ক্ষেত্রে আল্লাহর আনুগত্য করা ও
নাফরমানি পরিত্যাগ করা। এ ছাড়া বিভিন্ন জিকির ও দোয়ার মাধ্যমেও বারবার
আল্লাহর নেয়ামতের কথা স্বীকার করা, আল্লাহর প্রশংসা ও শোকর আদায় করা উচিত।
সুনানে
আবু দাউদে সংকলিত একটি হাদিসে রাসুল (সা.) একটি দোয়া শিখিয়েছেন, যে দোয়াটি
পড়ে আমরা সকাল সন্ধ্যা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে পারি। দোয়াটি হলো,
উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা মা আসবাহা বী মিন নি’মাতিন আও বিআহাদিম-মিন খলকিকা, ফামিনকা
ওয়াহদাকা লা শারীকা লাকা, ফালাকাল-হামদু ওয়া লাকাশ-শুকরু।
অর্থ: হে
আল্লাহ! ভোরে আমার ওপর ও আপনার অন্য যে কোনো সৃষ্টির ওপর যে নিয়ামত
পৌঁছেছে তা শুধু আপনার পক্ষ থেকেই, এতে আপনার কোনো শারিক নেই। তাই আপনারই
প্রশংসা ও আপনারই কৃতজ্ঞতা।
আবদুল্লাহ ইবনে গন্নাম (রা.) থেকে বর্ণিত
আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি ভোরে
(ঘুম থেকে) উঠে এ দোয়া পড়ল, সে ওই দিনের শুকরিয়া আদায় করল। যে সন্ধ্যায় এ
দোআ পড়ল, সে তার ওই রাতের শুকরিয়া আদায় করল। (সুনানে আবু দাউদ: ৫০৭৩)
