
কুমিল্লা
বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশনা দপ্তরের উদ্যোগে এবং
কুবি রোটারেক্ট ক্লাব এর সহযোগিতায় ‘ক্যাম্পাস মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড
ওয়েলবিইং’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) সকাল ১০টায় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সেমিনার কক্ষে এই কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
এতে
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.
মোঃ হায়দার আলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো.
আবদুল হাকিম। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল
কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. এ. এস. এম. মোর্শেদ এবং বাংলাদেশ সাইকিয়াট্রিক
কেয়ার লিমিটেড (বিপিসিএল) এর ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ড. আবদুল্লাহ জিয়াদ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ছাত্র পরামর্শক ও দিকনির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক
অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল্লাহ আল মাহবুব।
কর্মশালায় বক্তারা মানসিক
স্বাস্থ্যের গুরুত্ব, মানসিক সমস্যার ধরন, এসব সমস্যা সম্পর্কে প্রচলিত ভুল
ধারণা এবং সেগুলো প্রতিরোধ ও সমাধানের উপায় এবং মানসিক চাপ থেকে মুক্ত
থাকার কৌশল ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে দিকনির্দেশনা
প্রদান করেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, ‘যেকোনো চিন্তা
যেটি সামান্য দুশ্চিন্তা বাড়াতে পারে সেইটা দ্বিতীয়বার করা যাবে না। বার
বার দুশ্চিন্তা করতে থাকলে মানসিক স্বাস্থ্যের উপর গভীর প্রভাব ফেলে। যদি
বারবার দুশ্চিন্তা মাথায় আসে, তখন একা থাকা যাবে না বরং বন্ধুদের সাথে সময়
কাটানো প্রয়োজন। কারণ একাকিত্ব মানসিক স্বাস্থ্যের উপর চাপ বাড়ায়।’
প্রক্টর
অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল হাকিম বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বন্ধু সিলেকশন
খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে বন্ধু সিলেকশনে ভুল করেছে তার জীবন প্রায় শেষ। তোমার
বন্ধু হয়তো তোমার জীবন শেষ করবে অথবা উপরে উঠাবে। তাই, যে বন্ধু তোমাকে
মাদকাসক্তি, র্যাগিং শিখাবে সেই বন্ধু ত্যাগ করা উচিত। এছাড়াও সকালবেলা
নাস্তা না করা, সকালের সূর্যোদয় এবং সন্ধ্যার সূর্যাস্ত না দেখা এবং
নিয়মিত পিতামাতার সাথে যোগাযোগ না থাকা একজন শিক্ষার্থীর মানসিক সমস্যার
অন্যতম কারণ। তোমরা মাদককে না বলো, ঠিকমতো ঘুম যাও এবং র্যাগিংকে কুমিল্লা
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিতাড়িত করো।'
কর্মশালার সভাপতি ছাত্র পরামর্শক ও
দিকনির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল্লাহ আল মাহবুব বলেন,
'ছাত্র পরামর্শক দপ্তরের উদ্যোগে আমরা কয়েকটি কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছি।
প্রথমত প্রতিটি বিভাগকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ কাউন্সেলিংয়ের আওতায়
এনে আলাদা করে ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং, উচ্চশিক্ষা কাউন্সেলিং ও মেন্টাল হেলথ
কাউন্সেলিংয়ের পৃথক প্রোগ্রাম করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বড় সার্ভে
চালু করা হচ্ছে। মেন্টাল হেলথ, সেফটি ও ক্যারিয়ার সম্ভাবনা নিয়ে একটি গুগল
ফর্ম প্রস্তুত করা হয়েছে, যা সব শিক্ষার্থীর জন্য বাধ্যতামূলক। এতে পাওয়া
তথ্যের ভিত্তিতে আমরা একটি পারসেপশন স্টাডি করে প্রশাসনকে প্রস্তাবনা দিতে
পারব।'
তিনি আরও বলেন, 'কো-কারিকুলাম কার্যক্রম পরিচালনাকারী ক্লাবগুলোর
তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। গত এক বছরে ৫০০-এর বেশি অনুষ্ঠান আয়োজন হয়েছে।
ক্লাব ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সহযোগিতায় ভবিষ্যতের অনুষ্ঠানও আয়োজন করা
হবে। মেন্টাল হেলথ সাপোর্টের জন্য যারা সমস্যায় আছে, তাদের শনাক্ত করে
প্রয়োজন হলে পেশাদার সাইকিয়াট্রিস্টের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করা
হবে।'
কর্মশালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
