শনিবার ২২ নভেম্বর ২০২৫
৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
উৎসবমুখর নির্বাচন করতে সশস্ত্র বাহিনীর সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা
প্রকাশ: শনিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৫, ১২:৪০ এএম |


 উৎসবমুখর নির্বাচন করতে সশস্ত্র বাহিনীর  সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টাবাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘নির্বিঘ্ন ও উৎসবমুখর করতে’ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত বৈকালিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “আমরা শিগগিরই একটা নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি। নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশের পথে যাত্রা করব। সেটিই আমাদের স্বপ্ন। নির্বাচন যেন সুন্দর, আনন্দমুখর, উৎসবমুখর হয়, সুন্দর যাত্রাপথ রওনা করে দিতে পারে, সেটার জন্য আমরা সবাই চেষ্টা করব।
“বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে আসন্ন নির্বাচন একটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসাবে ভূমিকা রাখবে। নির্বিঘ্ন ও উৎসবমুখর নির্বাচন হবে বলে আমার বিশ্বাস। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা দক্ষতা ও পেশাদারত্বের সঙ্গে এই দায়িত্ব পালন করবে।”
সশস্ত্র বাহিনী দিবসের দিনব্যাপী কর্মসূচিতে বীরা মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধে আহত ও শহীদদের পরিবারের সদস্য, সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ও তাদেরে পরিবারের সদস্য, কূটনীতিক, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও গত বছর অভ্যুত্থানের শহীদদের পরিবার ও আহতদের পরিবারের সদস্যরা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন।
গতবছরের মত এবারও সেনাকুঞ্জের এই আয়োজনে যোগ দেন বিএনপির চেয়ারাপারসন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
বিকাল ৪টা ১০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মঞ্চে আসার পর বিউগলে জাতীয় সংগীতের সুর বেজে উঠে। পরে ভূমিকম্পে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন আমন্ত্রিত অতিথি ও দর্শনার্থীরা।
আমন্ত্রিত অতিথিদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেওয়ার পর চা চক্র পর্বে সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা।
সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় তিনি মুক্তিযুদ্ধের শহীদ এবং ২০২৪ সালের জুলাই অগাস্ট মাসে ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের সব শহীদ, আহত ও অংশ নেওয়া সব মানুষকে স্মরণ করেন।
মুক্তিযুদ্ধে সেনাবাহিনীর অবদান স্মরণ করতে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “একাত্তর সালের রণক্ষেত্রে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর জন্ম। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ হানাদার বাহিনীর নৃশংস আক্রমণের পরপরই ২৭ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে তৎকালীন মেজর ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন।
“এরই ধারাবাহিকতায় ২১ নভেম্বর সেনাবাহিনীর সঙ্গে নৌ ও বিমান বাহিনী সম্মিলিতভাবে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে। এ কারণেই ২১ নভেম্বরকে মুক্তিযুদ্ধের একটা মাইলফলক হিসাবে গৌরবের সাথে পালন করা হয়।”
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “মুক্তিকামী সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা জীবনের পরোয়া না করে, পরিবারের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা না করে এদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।
“এদেশের আপামর জনসাধারণকে সাহস যুগিয়েছে। মানুষের সাথে কঁধে কাঁধ মিলিয়ে জল, স্থল ও আকাশ পথে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলে দেশমাত্রিকাকে পরাধিনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করে এনেছেন।”
২০২৪ সালে ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানেও সেনাবাহিনীর ‘অসামান্য অবদানের’ কথা স্মরণ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “দুহাজার চব্বিশের ছাত্রজনতার অভ্যুত্থান ও চলমান দেশ পুনর্গঠন ও সংস্কারের কাজেও সশস্ত্র বাহিনী বরাবরের মত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে অব্যাহতভাবে মানুষের আস্থার প্রতিদান দিয়ে যাচ্ছে। গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক নেতৃত্বের প্রতি অনুগত বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী পেশাগত দক্ষতা ও দেশপ্রেমের সমন্বয়ে দেশের জন্য ত্যাগ ও তৎপরতার ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখবে।”
দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সেনাবাহিনীকে সদা প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “একটি শান্তিপ্রিয় জাতি হিসাবে আমরা সব বন্ধু রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্মানজনক ও শান্তিপূর্ণ সহঅবস্থানে বিশ্বাসী। তথাপি যে কোনো আগ্রাসী বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আমাদেরকে সদা প্রস্তুত থাকতে হবে।”
আগামী দিনে সেনাবাহিনীকে আরও আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার প্রত্যয় জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “দুঃখের সাথে বলতে হয়, ফ্যাসিস্ট আমলে বাহিনীগুলোর দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়গুলো উপেক্ষিত ছিল।
“অন্তর্র্বতী সরকার সব বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। একই সঙ্গে দেশরক্ষা জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যাপক সংখ্যক ছাত্র ও যুব সম্প্রদায়কে সম্পৃক্ত করার উদ্দেশ্যে বিএনসিসির কার্যক্রম বহুগুণ বৃদ্ধির নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
অনুষ্ঠানের দিন সকালে বাংলাদেশে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কয়েকজন হতাহত এবং বহু স্থাপনা বিধ্বস্ত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে সেই দুর্যোগের কথা স্মরণ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “আজকে এমন একটি আনন্দের দিনেও আমরা সবাই ব্যথিত। হঠাৎ ভূমিকম্পে কয়েকজন ইন্তেকাল করেছেন। বহুমানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, আহত হয়েছেন, সম্পদের ক্ষতি হয়েছে, আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তাদের প্রতি আমরা সমবেদনা জানাচ্ছি।”
অন্তর্র্বতী সরকারের উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা সস্ত্রীক অনুষ্ঠানে এসেছিলেন।
বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি ও অন্যান্য দলের নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের কূটনীতিবিদরা এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।














http://www.comillarkagoj.com/ad/1752266977.jpg
সর্বশেষ সংবাদ
১০৭ বছর আগে প্রতিদিনই ভূমিকম্প হয়েছে কুমিল্লায়
সর্বোচ্চ ঝাঁকুনিতেকাঁপলো দেশ
কুমিল্লায় ভূমিকম্পে আতঙ্ক
ছুটির দিনে মাংস খাওয়া হলো না বাবা-ছেলের, মর্গে মিলল লাশ
লাকসামে বহুতল ভবনগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
আমি ভেসে আসা কিংবা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ানো লোক না: হাজী ইয়াছিন
শঙ্কায় শুরু,স্বস্তিতে সমাপ্তি
আমাকে একটিবার সুযোগ দিন, হতাশ করব না- মনির চৌধুরী
লালমাইয়ে বিএনপি নেতৃবৃন্দের সাথে আবদুল গফুর ভূঁইয়ার মতবিনিময় সভা
চাচাতো ভাই গ্রেফতার হলেও মীম হত্যার কারণ নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: newscomillarkagoj@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২