নামাজ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান। ঈমানের পরই নামাজের অবস্থান। প্রাপ্ত বয়স্ক সবার ওপর নামাজ আদায় করা ফরজ। গুরুত্ব বুঝে নামাজ আদায়ের চেষ্টা করতে হবে। অনেকে নামাজ আদায়ের চেষ্টা করেন, শুরু করেন। কিন্তু কিছুদিন পর আবার অনিয়মিত হয়ে যায়। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায় কী?
এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য প্রথমেই নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে বুঝতে হবে। কখনো কোনো কারণে নামাজ পড়া কঠিন মনে হলেও শয়তানের কুমন্ত্রণা এড়িয়ে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। নামাজের গুরুত্ব, নামাজ আদায়ের পুরস্কার ও না পড়ার শাস্তি সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। মনে রাখতে হবে, হাদিসে মুসলিম ও অমুসলিমের মধ্যে পার্থক্য করা হয়েছে নামাজের মাধ্যমে। বলা হয়েছে, ইসলাম ও কুফরের মধ্যের পার্থক্যই হলো সালাত পরিত্যাগ করা।
নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো খুশুখুযু বা নামাজে মনোযোগ ধরে রাখা। কখনো কোনো কারণে যদি নামাজে মনোযোগ কম থাকে, তবুও সময়মতো নামাজ আদায় করা খুব জরুরি।
ধীরস্থিরতার সঙ্গে নামাজ পড়া উচিত। কিন্তু যদি তাড়াহুড়ো থাকে বা মনোযোগ না আসে বা নামাজের মধ্যে ভিন্ন কোনো চিন্তাভাবনা মাথায় ঘুরপাক খাও তাহলে প্রয়োজনে দ্রুত হলেও নামাজ পড়তে শুরু করুন এবং পুরো নামাজ শেষ করুন। কারণ, খুশুখুযুসহকারে নামাজ পড়লে তা প্রাণবন্ত নামাজ হয়; কিন্তু খুশুখুযু না থাকলেও নামাজ হয়ে যায় এবং মানুষ ফরজ তরকের গুনাহ থেকে বেঁচে যায়।
কোরআনে আল্লাহ বলেন, আর তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয় তা (নামাজ) বিনয়ী ছাড়া অন্যদের উপর কঠিন। (সুরা বাকারা, আয়াত : ৪৫)
অনেক সময় আমরা খুব মনোযোগের সঙ্গে নামাজ আদায় শুরু করি। কিন্তু পরবর্তীতে আবার অবহেলা শুরু হয়। এটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় না ভুগে কোরআন-হাদিস থেকে অনুপ্রাণিত হওয়ার চেষ্টা করুন। আলেমদের সংশ্রবে থাকার চেষ্টা করুন এবং মনে রাখুন ঈমান বাড়ে, কমে এবং পরিস্থিতি ভেদে ঈমান কখনো শক্তিশালী হয়, কখনো দুর্বল হয়। আর এটাই মানবজীবনের বাস্তবতা। তাই হতাশ হওয়ার কিছু নেই।
নামাজ শুরু করার পর আবারো কখনো অনিয়মিত হয়ে গেলে কোন কারণে নামাজ অনিয়মিত হচ্ছে তা খুঁজে বের করুন—কর্মব্যস্ততা, পড়াশোনা বা অনুপযুক্ত পরিবেশ—কারণ যা-ই হোক, তা চিহ্নিত করুন। প্রয়োজনে নিজের কাজ ও ব্যস্তার সঙ্গে সমন্বয় করুন এবং নামাজ আদায় করে নিন। এর পাশাপাশি নিজের কাছে এবং আল্লাহর সামনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করুন যে আর কখনো নামাজ বাদ দেবেন না।
নামাজে একনিষ্ঠতা ও নিয়মিত হওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন। কোরআনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ুন। ভালো মানুষ এবং যারা নিয়মিত নামাজ পড়েন তাদের সঙ্গে সময় কাটান। মসজিদের বয়ান ও ইসলামিক আলোচনায় অংশ নিন।
আল্লাহর কাছে সবসময় দোয়া করুন তিনি যেন আপনার জন্য নামাজ আদায় করা সহজ করে দেন।
