মঙ্গলবার ১৮ নভেম্বর ২০২৫
৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ক্ষমতার চূড়া থেকে ফাঁসির ফেরারি
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৫, ১:০৩ এএম আপডেট: ১৮.১১.২০২৫ ১:২৪ এএম |



 ক্ষমতার চূড়া থেকে  ফাঁসির ফেরারিবাংলাদেশে আর কোনো রাজনৈতিক নেতা এত দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকেননি। বাংলাদেশে আর কোনো রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানের মাথার ওপর ঝোলেনি মৃত্যুদণ্ডের খাঁড়া। বাবার উত্তরাধিকারে তিনি উঠে এসেছিলেন শীর্ষ রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পদে, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের জনপ্রিয়তাকে সঙ্গী করে একসময় পৌঁছান ক্ষমতার চূড়ায়। একসময়ের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের নেত্রী, সেই শেখ হাসিনাই স্বৈরশাসকের তকমা নিয়ে ক্ষমতাচ্যুত হন রক্তক্ষয়ী গণআন্দোলনে।
টানা সাড়ে ১৫ বছর দেশ শাসনের পর চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারিয়ে তাকে পালাতে হয়েছে ভারতে। সেই আন্দোলন দমাতে প্রায় ১৪০০ মানুষকে হত্যার ‘নির্দেশদাতা’ হিসেবে দোষী সাব্যস্ত হয়ে শেখ হাসিনা এখন মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ফেরারি আসামি।
চার মাসের বিচার প্রক্রিয়া শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সোমবার এ মামলার রায় ঘোষণা করে, যে আদালত শেখ হাসিনার সরকার গঠন করেছিল একাত্তরের যুদ্ধাপরাধরীদের বিচারের জন্য।
তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, এটা ‘স্পষ্ট’ যে শেখ হাসিনা ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্য দিয়েছিলেন এবং আন্দোলনকারীদের ‘হত্যা এবং নির্মূল’ করতে তার দলের কর্মীদের ‘নির্দেশ’ দিয়েছিলেন।
বাংলাদেশে যারা রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানের ভূমিকায় ছিলেন, তাদের মধ্যে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দুর্নীতি মামলায় জেলে যেতে হয়েছে। তবে আদালতের রায়ে কাউকে ফাঁসির আসামি হতে হয়নি। হত্যার দায় মাথায় নিয়ে কাউকে বিদেশেও পালাতে হয়নি।
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে শেখ হাসিনা এর আগে একবারই গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে গিয়েছিলেন ২০০৭ সালে, সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার তখন ক্ষমতায়। ওই বছরের ১৬ জুলাই ভোরে ধানমন্ডির বাসা ‘সুধা সদন’ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় চাঁদাবাজির এক মামলায়।
গ্রেপ্তার করেই তাকে সরাসরি আদালতে নেওয়া হয়েছিল, সেখান থেকে নেওয়া হয়েছিল জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় বিশেষভাবে তৈরি সাবজেলে। প্রায় এগার মাস বন্দি থাকার পর ২০০৮ সালের ১১ জুন তিনি জামিনে মুক্তি পেয়ে বিদেশে যান চিকিৎসার জন্য।
শেখ হাসিনা জেলে যাওয়ার প্রায় দুই মাস পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকেও দুর্নীতির মামলায় জেলে যেতে হয়। তাকেও রাখা হয়েছিলো সংসদ ভবন এলাকার আরেকটি সাবজেলে। পরে তিনিও জামিনে মুক্তি পেয়ে বের হন।
২০১৮ সালের নির্বাচনে তারা দুজনই অংশ নেন, যে নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের দেড় দশকের শাসনের সূচনা হয়। তিনটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন পেরিয়ে ২০২৪ সালে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তার অবসান ঘটে।
৭৮ বছর বয়সী শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে গত বছর অক্টোবরে ভারতকে চিঠি দিয়েছিল অন্তর্র্বতী সরকার। সেই চিঠির কোনো জবাব ভারত সরকার দেয়নি।
২০০৬ সালের বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মেয়াদের শেষ প্রান্তে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন নিয়েই বাধে রাজনৈতিক বিরোধ।
সে সময় বিধান ছিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হবেন সদ্য অবসরে যাওয়া প্রধান বিচারপতি। বিএনপি সরকারের আমলে বিচারপতিদের অবসরের বয়স সীমা দুই বছর বাড়ানোর পর কে এম হাসানের তত্ত্বাবধায়কের প্রধান হওয়ার বিষয়টি সামনে আসে।
কে এম হাসান একসময় ছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। এই কারণ দেখিয়ে আওয়ামী লীগ তাকে মেনে না নিয়ে আন্দোলনে যায়। একেবারে শেষ সময়ে কে এম হাসান দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি জানান।
পরে সংবিধানে উল্লেখিত আরও কিছু ধাপ বাদ দিয়ে সে সময়ের রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন।
এর মধ্যে ২৮ অক্টোবর বিএনপি সরকারের ক্ষমতা হস্তান্তরের দিন সকাল থেকে শুরু হওয়া আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের লগি-বৈঠার আন্দোলনে রাজপথে সংঘাত হয়।
এর মধ্যে এক দফা পিছিয়ে ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি স্থির হয় ভোটের তারিখ। নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে কর্মসূচি চালিয়ে যায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট।
ভোটের ১১ দিন আগে পাল্টে যায় পরিস্থিতি। হস্তক্ষেপ করে সেনাবাহিনী, প্রধান উপদেষ্টার পদ ছাড়েন ইয়াজউদ্দিন। ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে শপথ নেয় নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার। কিন্তু ৯০ দিনে ভোটের আয়োজন না করে তারা সময় নেয় প্রায় দুই বছর।
এরপর ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন শেখ হাসিনা। তার সাড়ে ১৫ বছরের শাসনে অর্থনৈতিক ও সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ বেশ অগ্রগতি অর্জন করলেও গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সঙ্কুচিত হওয়ার অভিযোগ করেন বিরোধীরা।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর ২০১১ সালে সংবিধান সংশোধন করে সেই ব্যবস্থাই বাতিল করে দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা হয় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায়।
এর মধ্যে দশম ও দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের নির্দলীয় সরকারের দাবি পূরণ না হওয়ায় নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপিসহ বেশিরভাগ বিরোধী রাজনৈতিক দল।
তাদের বর্জনের ফলে দশম নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য হয়ে যান। সেই সংসদকে ‘বিনা ভোটের সংসদ’ আখ্যা দেয় ভোট বর্জন করা বিএনপি।
বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর একটি অংশ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়ে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিলেও ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ উঠে। অধিকাংশ ভোট আগের রাতে হয়ে যাওয়ার অভিযোগের মধ্যে বিরোধীরা মাত্র সাতটি আসনে জয় পায়। সে নির্বাচনের নাম হয় ‘নিশিরাতের নির্বাচন’।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বিএনপি ও সমমনাদের বর্জনে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক দেখাতে শরিক ও বিরোধীদল জাতীয় পার্টির জন্য আসন ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের সঙ্গে দলের বিদ্রোহীদের। এ নির্বাচনের নাম হয় ‘আমি আর ডামি’ নির্বাচন।
প্রশ্নবিদ্ধ ওই তিন নির্বাচনেই আওয়ামী লীগ জয়ী হয় এবং ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে দেশ শাসন করে যায়। শেষ পর্যন্ত ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে।
গত বছরের ডিসেম্বরে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর আংশিক বাতিল করে রায় দেয় হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ। তাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরানোর পথ তৈরি হয়।
অবাধ ও নিরপেক্ষতা ‘নিশ্চিত করতে না পারায়’ আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত তিন জাতীয় নির্বাচনে ‘জনগণের আস্থা ধ্বংস করা হয়েছে’ বলে পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয় ওই রায়ে।
‘জনগণের ভোট ছাড়া’ ওই নির্বাচনগুলো আয়োজনের অভিযোগে গত জুনে একটি মামলা করেছে বিএনপি। ওই তিন নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা নির্বাচন কমিশনের সব পদাধিকারীর পাশাপাশি ক্ষমতচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আসামি করা হয়েছে সেখানে।
এসব নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটানা চার মেয়াদের শাসনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে ‘হার্ড পাওয়ার’ হিসেবে বর্ণনা করে টাইম ম্যাগাজিন, আর বিবিসির ভাষায় সেটা ‘ওয়ান উইমেন শো’।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দীর্ঘ শাসনে আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার দাবি করলেও তা ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানো বলে পরে অভিযোগ ওঠে।
অবকাঠামোখাতে বড় উন্নয়নের নামে দুর্নীতি, অর্থপাচার এবং সরকার-ঘনিষ্ঠদের ব্যাংক খাতে লুটপাটের একের পর এক অভিযোগ উঠতে শুরু করে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালেই।
ক্ষমতার শেষ দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে হাসিনা নিজেই বলেছিলেন, তার এক পিয়নই বনে গেছে ৪০০ কোটি টাকার মালিক।
তার শাসনামলে প্রতি বছর অন্তত ১৬ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচারের কথা বলা হয়েছে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠিত একটি টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনে। পূর্বাচলে ‘প্লট দুর্নীতির’ মামলায় বিচার চলছে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের।

‘হত্যার’ বিচার, ফেরারি আসামি:
শেখ হাসিনার পতনের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্র্বতী সরকার জুলাই অভ্যুত্থানে চলা হত্যাযজ্ঞের বিচারের উদ্যোগ নেয়। সেই সময়ের হত্যাকাণ্ডকে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ বিবেচনা করে বিচার চলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
প্রসিকিউশনে জমা পড়া সাড়ে চারশ অভিযোগের ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনালে যেসব মামলা হয়েছে, তার মধ্যে চারটিতে অভিযুক্ত করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
এর মধ্যে বিচারকাজ শেষ হওয়া প্রথম মামলায় শেখ হাসিনার সঙ্গে আসামি ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
তাদের মধ্যে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হন। তিন আসামির মধ্যে একমাত্র তিনিই কারাগারে আটক আছেন, বাকি দুজনকে পলাতক দেখিয়ে এ মামলার কার্যক্রম চলে।
আন্দোলন দমনে ১৪০০ জনকে হত্যার উসকানি, প্ররোচনা ও নির্দেশ দান, ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবলিটি’ এবং ‘জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজের’ মোট ৫ অভিযোগ আনা হয় তিন আসামির বিরুদ্ধে।
জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনালের পাশাপাশি প্রসিকিউশন টিমও পুনর্গঠন করে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার। ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের দায়িত্ব পান তাজুল ইসলাম, যিনি যুদ্ধাপরাধের দায়ে সাজা পাওয়া জামায়াত নেতাদের আইনজীবী ছিলেন।
শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে পলাতক দেখিয়ে চলা এই মামলায় আইন অনুযায়ী তাদের পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ করে রাষ্ট্রপক্ষ। তাদের পক্ষে আদালতে লড়েন আইনজীবী আমির হোসেন।
রাজসাক্ষী মামুনের জবানবন্দির পাশাপাশি জুলাই আন্দোলনে আহত, নিহতের পরিবার এবং সম্মুখসারির নেতাসহ ৫৪ জনের সাক্ষ্য আদালতে হাজির করে প্রসিকিউশন। আন্দোলনের সময়ে বলপ্রয়োগের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার ‘নির্দেশের’ বেশ কিছু অডিও কথোপকথন শুনানিতে উপস্থাপন করা হয়।
গত ১৩ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল জানায়, শেখ হাসিনার মামলার রায় দেওয়া হবে ১৭ নভেম্বর। তখন থেকেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত বোমাবাজি আর গাড়ি পোড়ানো শুরু হয়ে যায়। রায় ঘিরে রবি ও সোমবার কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ।
কড়া নিরাপত্তার মধ্যে সোমবার এ মামলার রায় ঘোষণা করে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত রায় ঘোষণার কার্যক্রম এজলাস থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
‘উসকানিমূলক’ বক্তব্য দিয়ে ছাত্র-জনতাকে হত্যার প্ররোচনা, উসকানি, সহায়তা, সম্পৃক্ততা, অপরাধ সংঘটন প্রতিরোধে ব্যর্থতার জন্য রায়ে শেখ হাসিনাকে দেওয়া হয় আমৃত্যু কারাদণ্ড।
আর হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের ‘হত্যা করে নির্মূলের নির্দেশ’, চাঁনখারপুলে ছয় হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যা ও লাশ পোড়ানোর ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করে শেখ হাসিনাকে দেওয়া হয় মৃত্যুদণ্ড।
চাঁনখারপুলে ছয় হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যা ও লাশ পোড়ানোর ঘটনায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও দোষী সাব্যস্ত করে ট্রাইব্যুনাল।
তাদের মধ্যে কামালকে দেওয়া হয় সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড। আর মামুন রাজসাক্ষী হিসেবে তথ্য দিয়ে অপরাধ প্রমাণে সহযোগিতা করায় তাকে ৫ বছরের কারাদণ্ডের লঘুদণ্ড দেওয়া হয়।
শেখ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান খান কামালকে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশে তাদের সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে জব্দের নির্দেশ দেয় আদালত। পাশাপাশি জুলাই আন্দোলনে নিহতদের পরিবার এবং আহতদের জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয় রায়ে।
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের এই রায় এল তার বিয়ে বার্ষিকীর দিনে। ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর পরমাণু বিজ্ঞানী এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল।
ঢাকায় রায় হওয়ার পরপরই ভারত থেকে বিবৃতি দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ফেরারি আসামি শেখ হাসিনা। তার সেই বিবৃতি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো প্রকাশ করে।
এ রায়কে ‘পক্ষপাতদুষ্ট এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ আখ্যা দিয়ে হাসিনা সেখানে বলেন, “আমাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ঘৃণ্য আদেশের মধ্য দিয়ে অন্তর্র্বতী সরকারের চরমপন্থি ব্যক্তিরা আমাকে হত্যার যে মনোভাব প্রকাশ করছে-বাংলাদেশের সর্বশেষ নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে সরিয়ে দেওয়া এবং আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয় করার লক্ষ্যই সেখানে স্পষ্ট।”















http://www.comillarkagoj.com/ad/1752266977.jpg
সর্বশেষ সংবাদ
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড
শেখ হাসিনা ও কামালের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের রায়
দণ্ডপ্রাপ্তহাসিনাকে আবার ফেরত চাইল বাংলাদেশ
ক্ষমতার চূড়া থেকে ফাঁসির ফেরারি
চৌদ্দগ্রামে জামায়াত নেতার গাড়ি পুড়ে দিয়েছে দূর্বৃত্তরা
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লায় পুলিশের অভিযানে৪৪ জন আটক
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড
গোমতী নদীর চর থেকে অটোচালক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার; গ্রেপ্তার ১
হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার রায় আজ
রায় যাই হোক তা কার্যকর হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: newscomillarkagoj@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২