নিজস্ব
প্রতিবেদক: কুমিল্লা-৬ (সদর) আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে হাজী আমিন উর
রশিদ ইয়াছিনকে চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত
হয়েছে।
রোববার (৯ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় নগরীর টাউন হল মাঠের বীর
মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম মঞ্চে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন গত ১৭ বছরে
রাজনৈতিক মামলাসহ বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার বিএনপি নেতাকর্মীদের পরিবারের
সদস্যরা। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম
আহ্বায়ক মাহবুব চৌধুরীর স্ত্রী নাসরিন খানম।
তিনি বলেন, গত এক যুগেরও
বেশি সময় ধরে কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপি সমর্থন করার কারণে বহু পরিবারের
স্বামী, বাবা, ভাই ও সন্তানেরা মামলা, হামলা, কারাবরণ ও হত্যার শিকার
হয়েছেন। সেই কঠিন সময়ে এসব পরিবারের পাশে থেকে আইনি সহায়তা, আটক নেতাকর্মী ও
তাদের পরিবারের ভরণপোষণ, আহতদের চিকিৎসা, নিহতদের পরিবারের পুনর্বাসনসহ
মানবিক সহায়তা দিয়েছেন আমিন উর রশিদ ইয়াছিন।
লিখিত বক্তব্যে নাসরিন খানম
দাবি করেন, কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে এ সময়ে শত শত মামলা
হয়েছে এবং হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাবরণ করেছেন। নেতাকর্মীরা পরিবারের
সঙ্গে থাকতে পারেননি, নিরাপত্তাজনিত কারণে নিজ বাড়িতে রাত যাপন করতে
পারেননি, এমনকি স্বজনদের জানাজা ও সামাজিক অনুষ্ঠানেও অংশ নিতে পারেননি। সে
সময় পরিবারগুলোর অন্যতম ভরসা ছিলেন আমিন উর রশিদ ইয়াছিন।
সংবাদ
সম্মেলনে বক্তারা অভিযোগ করেন, গত ৩ নভেম্বর বিএনপির মহাসচিব ঘোষিত
সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় কুমিল্লা-৬ আসনে আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের নামের
পরিবর্তে মনিরুল হক চৌধুরীর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাকে এ অঞ্চলের
নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের কাছে “কম পরিচিত” বলে উল্লেখ করেন তারা।
বক্তাদের দাবি, গত ১৭ বছর রাজনৈতিক সংকট ও নির্যাতনের সময়ে মনিরুল হক
চৌধুরী এলাকায় নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন না।
তারা বলেন, “গুরুত্বপূর্ণ এই আসনে দলের ত্যাগী, জনপ্রিয় ও কর্মীবান্ধব নেতাকে মনোনয়ন না দিলে বিজয় অর্জন কঠিন হয়ে পড়বে।”
সংবাদ
সম্মেলনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উদ্দেশে দাবি জানানো
হয়-কুমিল্লা বিএনপির দুঃসময়ে নেতাকর্মীদের অভিভাবকের ভূমিকা রাখা ত্যাগী
নেতা আমিন উর রশিদ ইয়াছিনকে চূড়ান্তভাবে কুমিল্লা-৬ আসনে দলীয় প্রার্থী
হিসেবে ঘোষণা করা হোক।
সংবাদ সম্মেলনে মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি
ফখরুল ইসলাম মিঠুর স্ত্রী আনা আজিজা বলেন, আমার স্বামীর নামে ৩২টি মামলা
ছিলো। প্রতিটি মামলার আইনী সহায়তা জেলখানায় পিসির টাকা, চিকিৎসা, জামিন,
পরিবারের দেখাশুনাসহ সকল কিছুই দায়িত্ব নিয়েছিলেন হাজী ইয়াছিন। জেল খানায়
থাকাবস্থায় অসহায় এই পরিবারের সর্বক্ষনিক দেখাশুনাসহ সকল কিছুই করেছেন
তিনি। বিগত ১৭ বছর তিনি আমার মত শত শত নির্যাতিত নেতাকর্মীর অভিভাবক হয়ে বট
বৃক্ষের মত ছায়া হয়েছিলেন। আমরা দেশ নায়ক তারেক রহমানের প্রতি অনুরোধ
জানাই আমাদের বট বৃক্ষকে যেন উপড়ে না ফেলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও
বক্তব্য দেন, মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেনের স্ত্রী আবিদা
সুলতানা প্রমী, বিএনপি নেতা ইকরাম হোসেনের স্ত্রী নাসিমা বেগম, মনির
হোসেনের স্ত্রী লাকি আক্তার, মো. আক্তার হোসেনের স্ত্রী নাসরিন আক্তার,
আবুল কাশেমের স্ত্রী জাহেলা বেগম, মহানগর যুবদল নেতা মনছুর নিজামীর স্ত্রী
মহিমা আক্তারসহ অন্যরা।
এসময় গত ১৭ বছরে রাজনৈতিক মামলাসহ বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার বিএনপির নেতাকর্মীদের পরিবারের তিন শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
