দেবিদ্বার
প্রতিনিধি: কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নাম
ব্যাঙ্গ করে ফেসবুকে দীর্ঘ এক পোস্ট দিয়েছেন বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির
সভাপতি। সভাপতির দায়িত্বে থেকে নিজ বিদ্যালয় ও গ্রাম নিয়ে ব্যাঙ্গত্বক
পোস্ট দেয়ায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তবে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠার
আগেই সভাপতি তার স্ট্যাটাসটি মুছে ফেলেন। এর আগে পোস্টর শত শত স্ক্রীন সট্
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে গতকাল বুধবার দুপুরে সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যমে নানা সমালোচনা ও তোলপাড় শুরু হয়।
জানা গেছে,
দেবিদ্বার উপজেলার মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের এডহক কমিটির
সভাপতি খোরশেদ আলম সম্প্রতি স্কুলের প্রধান শিক্ষক কাজী মো. আলমগীর সরকারের
বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির খবর প্রকাশ হলে সভাপতি প্রধান শিক্ষককে
কারণদর্শানোর নোটিশ দেন। প্রধান শিক্ষক সময় পার হলেও তিনি কারণ দর্শানোর
কোন জবাব দেননি। তাকে ওই স্কুলের কয়েকজন সেল্টার দিচ্ছে এমন কিছু বিষয়
নিয়ে সভাপতিতার ব্যক্তিগত ফেসবুকে বিদ্যালয়কে ব্যঙ্গ করে একটি দীর্ঘ
স্ট্যাটাস দেন। স্ট্যাটাসটি মুর্হুতেই ভাইরাল হয়ে পড়ে। সভাপতি তার পোস্টে
লেখেন,
“বাটপারপুর (মোহনপুর) হাই স্কুলে জ্ঞান নয়, এখন চলে চুলকানি
সেশন। একসময় যেখানে বইয়ের গন্ধে ক্লাসরুম ভরে থাকত, সেখানে এখন বাতাসে ভেসে
বেড়ায় ‘চক্রান্তের সুবাস’। এই স্কুলের তিন তারকা মিঃ পণির বিখাউজ, মিঃ
চুলকানি একজিমা, আর মিঃ প্যারালাইসিস গলা ভাঙ্গা চ্যাগান আলীতিনজনই যেন
নাটকের প্রধান চরিত্র।”সভাপতির ফেসবুকে প্রায় ৪২ লাইনের এই স্ট্যাটাস নিয়ে
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও এলাকার মানুষ
ক্ষুদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ জানান।
আল আমিন নামের সাবেক এক শিক্ষার্থী লিখেন,
“আমার প্রিয় গ্রাম ও প্রানের বিদ্যাপিঠ ঐতিহ্যবাহী মোহনপুর উচ্চবিদ্যালয়
নিয়ে যে ভাবে ব্যঙ্গ করে ফেসবুকে পোস্ট করে স্কুলের বর্তমান এডহক কমিটির
সভাপতি খোরশেদ আলম যা আমাদের ব্যথিত করেছে। আমি গ্রামের সন্তান হিসেবে তার
তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে তাকে গ্রামবাসীর কাছে প্রকাশ্যে
ক্ষমা চাইতে হবে।”
সাবেক শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলাম কমেন্টে লিখেন, “এই
স্কুলের সভাপতি হয়ে মনের স্বাদ মিটায়, আবার এই স্কুল ও গ্রামকে ব্যঙ্গ করে।
তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে বলবে সে মানসিক প্রতিবন্ধী। তাকে ক্ষমা না
চাওয়া পর্যন্ত স্কুলে ঢুকতে দেওয়া উচিত না।”
মোহনপুর ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান সহিদুল ইসলাম বলেন, “বিদ্যায়য়ের একজন সভাপতি হয়ে বিদ্যালয়কে
ব্যঙ্গ করে স্ট্যাটাস দেওয়ার ঘটনার নিন্দা জানাই এবং আমরা সভাপতির গ্রামের
(তালতলা) কিছু মুরুব্বীদের কাছে এর বিচার চেয়েছি। আমরা তাদের জানিয়েছি এ
ঘটনার বিচার না হলে যে কোন মুহুর্তে তা নিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে।”
বিদ্যালয়ের
পরিচালনা পর্ষদের এডহক কমিটির সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, “এটি একটি গল্প
মাত্র, গল্পকে কেন্দ্র করে রাগ হওয়া যাবে না। আমি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গল্প
লিখি।” । এ বিষয়ে দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিবুল ইসলাম
বলেন, “বিদ্যালয়ের সভাপতির সাথে ফেইসবুকে আমার এড নাই, তবে একজন আমাকে একটি
স্ট্যাটানের স্ক্রিনসট পাঠিয়েছে। আমি বিষয়টি খোজ খবর নিচ্ছি।”