চৌদ্দগ্রাম
প্রতিনিধি: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে দুইটি বসতঘর পুড়ে ছাই
হয়েছে। সকল কিছু হারিয়ে দুই পরিবারের নয় সদস্য বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে
বসবাস করছে। তাদের কান্নার আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। উপজেলার
চিওড়া ইউনিয়নের সাঙ্গিশ^র গ্রামের মধ্যমপাড়ায় গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ
ঘটনা ঘটে। বুধবার সরেজমিন পরিদর্শন করে এ তথ্য জানা গেছে।
স্থানীয়
সূত্রে জানা গেছে, সাঙ্গিশ^র গ্রামের মধ্যমপাড়ার মৃত শফিকুর রহমানের ছেলে
ফিরোজ ভুঁইয়ার ঘর থেকে বুধবার সন্ধ্যায় বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে
আগুনের সূত্রপাত ঘটে। মুহুর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখায় ফিরোজ ভুঁইয়া ও
আফসার মিয়ার টিনসেড ঘর পুড়ে যায়। এতে ঘরে থাকা আলমারি, সুকেশ, নগদ টাকা,
স্বর্ণালঙ্কার, ফ্রিজ, টিভিসহ সকল মালামাল ভস্মীভুত হয়েছে। এতে দুই
পরিবারের ৩৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত ফিরোজ ভুঁইয়া
বলেন, আমি বাড়ির বাইরে ছিলাম। মোবাইলে ফোনের মাধ্যমে জানতে পারি, ঘরে আগুন
লেগেছে। আমার মা, স্ত্রী, সন্তানরা হাউমাউ করে কাঁদছে। আগুনের তাপের কারণে
আমরা কেউ ভিতরে প্রবেশ করতে পারিনি। ঘরে থাকা নগদ ২ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকাসহ
সব মালামাল পুড়ে ছাই হয়েছে।
অপর ক্ষতিগ্রস্ত আফসার মিয়া বলেন, গত ২২-২৩
বছর যাবৎ আমি আবদুল মমিন মাস্টারের বাড়িতে থাকি। এ সুবাদে আমি এ গ্রামেই
বিয়ে করে বসবাস করছি। আগুনে আমার ঘরের পরনের কাপড় ছাড়া এক সুতাও বের করতে
পারিনি। আমার কষ্টের জমানো ৬০ হাজার টাকা, তিন ভরি স্বর্ণ, চারটি খাট,
আলমারি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন
করছি।
আফসার মিয়ার স্ত্রী কুলসুম বেগম বলেন, ধোড়করা বাজার থেকে শখ করে
শাপলা কিনে আনছি। ডিম দিয়ে রান্না করেছি। কিন্তু খাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি।
আগুনের লেলিহান শিখায় আমার ঘরে থাকা সকল জিনিসপত্র ছাই হয়ে যায়।
স্থানীয়
এয়াকুব মিয়া বলেন, আগুনে দুইটি পরিবারের সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেলেও
আল্লাহর কোরআন পুড়েনি। এটা আল্লাহর নির্দশন। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দুইটি
পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোরদাবি
জানাচ্ছি।
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ হানিফ বলেন, খবর পেয়ে আগুনে
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সাথে সাক্ষাত করেছি। দুইটি পরিবার খোলা আকাশের নিচে
বসবাস করছে। এ মুহুর্তে তাদের পাশে বিত্তবানদেরকে এগিয়ে আসার আহবান
জানাচ্ছি।
চৌদ্দগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ মেহেদী হাসান সুজন বলেন,
ঘটনাস্থলে পৌছার আগেই আগুনের লেলিহান শিখায় তাদের মূল্যবান জিনিসপত্র পুড়ে
ছাই হয়ে যায়। বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে মনে
হচ্ছে।