কুমিল্লার
চান্দিনা উপজেলায় ভুয়া সার্টিফিকেট দেখিয়ে, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার নামে
প্রায় ৪৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে রোগীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কথিত
আয়ুর্বেদিক এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। এঘটনায় ভুক্তভোগী আব্দুল্লাহ আল মামুন
নামের এক ব্যক্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ
দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী আব্দুল্লাহ আল মামুন (৪৩) উপজেলার বরকইট ইউনিয়নের
খিরাসার মোহনপুর গ্রামের বাসিন্দা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবরে
লিখিত অভিযোগের অনুলিপি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, চান্দিনা থানার
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবং স্থানীয় সেনা ক্যাম্প কমান্ডারের কাছেও
পাঠানো হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আব্দুল্লাহ আল মামুন দীর্ঘদিন পাইলস
রোগে ভুগছিলেন। স্থানীয় এক ব্যক্তির পরামর্শে তিনি চান্দিনার মহিচাইল
ইউনিয়নের জামিরাপাড়া গ্রামের মো. ওমর ফারুক নামে এক ব্যক্তির কাছে চিকিৎসা
নিতে যান। ফারুক নিজেকে “বাংলাদেশ বোর্ড অব ইউনানী অ্যান্ড আয়ুর্বেদিক
সিস্টেমস অব মেডিসিন” এর সার্টিফিকেটধারী চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে তিন মাসের
মধ্যে সম্পূর্ণ আরোগ্যের আশ্বাস দেন। প্রথমে ফারুক মামুনের কাছ থেকে ৫
হাজার টাকা নিয়ে কিছু ভেষজ ওষুধ দেন। কিন্তু কোনো উন্নতি না হওয়ায়
পরবর্তীতে আরও ২০ হাজার টাকা এবং পরে “ভারত থেকে ওষুধ আনতে হবে” বলে আরও ২০
হাজার টাকা দাবি করেন। এভাবে তিন দফায় মোট ৪৫ হাজার টাকা নিলেও রোগের কোনো
উন্নতি হয়নি।
খোঁজ নিয়ে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওমর ফারুক ভুয়া
সার্টিফিকেট দেখিয়ে মানুষকে ফাঁদে ফেলে দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে ‘আয়ুর্বেদিক
চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে এলাকায় রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। অনেকে প্রতারণার
শিকার হলেও লোকলজ্জা ও ভয়ভীতির কারণে কেউ অভিযোগ করেননি।
ভুক্তভোগী
আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রথমে তিনি খুব আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেছিলেন
তিন মাসের মধ্যে ভালো করে দিবেন। ভালো না হলে টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাসও দেন
তিনি। কিন্তু আমার রোগ ভালো না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে তিনি উল্টো হুমকি
দেন। পরে গত ১৮ অক্টোবর বিকেলে স্থানীয় কয়েকজন গন্যমান্য ব্যক্তিকে নিয়ে
ওমর ফারুকের বাড়িতে যাই। তিনি টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং
প্রকাশ্যে হুমকি দেন। আমি চাই না অন্য কেউ আমার মতো প্রতারিত হোক। প্রশাসন
যেন দ্রæত পদক্ষেপ নেয়।
এঘটনায় অভিযুক্ত ওমর ফারুককে একাধিক কল দিলেও তিনি কল রিসিভ না করায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এব্যাপারে চান্দিনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জাবেদ উল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আরিফুর রহমান বলেন, অভিযোগ
পেয়েছি, অনুমোদনবিহীনভাবে কেউ চিকিৎসা কার্যক্রম চালালে আইন অনুযায়ী
ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ
আশরাফুল হক বলেন, ভুক্তভোগী যদি প্রতারিত হয়ে থাকেন থানায় মামলা করলে এই
বিষয়ে থানা প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে।
