চৌদ্দগ্রাম
প্রতিনিধি: শিক্ষকের বেত্রাঘাতে শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর পুরনো। তবে
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মাদ্রাসা সুপারের বেত্রাঘাতে আহত হয়েছেন এক অভিভাবক।
মাদ্রাসার খাবারে আলু ভাজির বদলে আলুর ভর্তা দেয়ার সামান্য বিষয়ে প্রতিবাদ
করে মারধরের শিকার অভিভাবক মাদরাসা সুপারের হাত থেকে বাঁচতে কল দিয়েছেন
পুলিশের জরুরী সহায়তা নাম্বার ৯৯৯-এ। অতিষ্ঠ অভিভাবকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে
প্রতিবাদ করলে মাদ্রাসা থেকে সরে পড়েন সুপার মাও: হাবিবুর রহমান। এ ঘটনায়
এলাকায় দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
জানা গেছে, উপজেলার মুন্সীরহাট
ইকরা মহিলা মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণীর আবাসিক ছাত্র একই ইউনিয়নের বসন্তপুর
গ্রামের তানভীর আলম ও মাহিয়ান। শুক্রবার রাতের মেনুতে থাকা আলু ভাজির
পরিবর্তে আলু ভর্তা পরিবেশন করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি পরিবারকে কল
করে জানায় ওই দুই ছাত্র। সম্পর্কে তারা মামাতো ফুফাতো ভাই। শনিবার সকালে ওই
ছাত্রদের মামা বা চাচা বসন্তপুর গ্রামের মৃত আবদুল মতিনের ছেলে আলাউদ্দিন
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে যান মাদ্রাসা সুপারের কক্ষে। তখন মাদ্রাসা সুপার
হাবিব উত্তেজিত হয়ে বেত হাতে নিয়ে ওই ছাত্রদেরকে পিটিয়ে মাদ্রাসা থেকে
পিটিয়ে বের করে দেয়ার হুমকি দেন। এক পর্যায়ে আলাউদ্দিন বেত কেন নিলেন বলে
প্রতিবাদ করায় সুপার হাবিব মুষ্টাঘাত করেন। এরপর মাদ্রাসার অন্য শিক্ষক ও
কর্মচারীদের সহায়তায় আলাউদ্দিনকে এলোপাথাড়ি বেত্রাঘাত করেন। এ সময় ওই দুই
ছাত্র আলাউদ্দিনের ভাতিজা ও ভাগিনা ঘটনা প্রত্যক্ষ করে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে
পড়েন।
ওই দুই ছাত্র জানায়, আলু ভাজির বদলে আলুর ভর্তা কেন জানতে চাইলে
মাদ্রাসা সুপারের স্ত্রী হল সুপার আমাদেরকে ভীষণ বকাবকি করে। এরপর আমরা
বিষয়টি বাড়িতে জানাই।
স্থানীয়রা জানায়, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাতা ও সুপার হাবিব এর আগে বেশ কয়েকজন অভিভাবককে মারধর করেন।
তার
স্বেচ্ছাচারিতায় অনেকেই এখন সন্তানদেরকে অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়ে
যাচ্ছেন। গত মাসেও শিক্ষার্থীর মায়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করার কারণে
মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার আলাউদ্দিন
জানায়, সুপারের কক্ষে আমাকে শিক্ষক কর্মচারীরা জাফটে ধরে রাখে, এই সুযোগে
সুপার হাবিব আমাকে বেদম বেত্রাঘাত ও কিল ঘুষিতে নীলা ফুলা করে ফেলে। তারা
মাদ্রাসার কলাপসিবল গেট আটকে আমাকে অবরুদ্ধ রাখে। তখন আমি কৌশলে ৯৯৯ এ কল
করলে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে মাদরাসা
সুপার মাও: হাবিবুর রহমান উল্টো দোষ চাপান মারধরের শিকার আলাউদ্দিনের উপর।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তিনি জরুরী কাজে লাকসাম আছেন বলে জানান।
উপজেলা
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একেএম মীর হোসেন বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে
ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও আমার নজরে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করা হবে এবং মারামারির ঘটনায় কেউ যদি অভিযোগ করলে
ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
মোহাম্মদ হিলাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, ৯৯৯-এ কল পেয়ে পুলিশের একটি টিম
ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিভাবককে উদ্ধার করে এবং সমাধানের জন্য দুই পক্ষকে থানায়
আসার নির্দেশনা দেয়া হয়।
