দেশের
শিশুদের টাইফয়েড থেকে সুরক্ষা দিতে আগামীকাল (১২ অক্টোবর) শুরু হচ্ছে
দেশের প্রথম জাতীয় টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন। এক মাসব্যাপী এই কর্মস‚চিতে
৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী প্রায় পাঁচ কোটি শিশুকে বিনাম‚ল্যে ইনজেকটেবল
টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে।
শনিবার (১১ অক্টোবর) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আগামীকাল স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানা, আজিমপুর কেন্দ্রে উদ্বোধন হবে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৫।
অনুষ্ঠানে
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা
ন‚রজাহান বেগম। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু
বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
জানিয়েছে, জন্মসনদবিহীন শিশুরাও এই টিকার আওতায় থাকবে যাতে কেউ বাদ না পড়ে।
এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম জাতীয় টাইফয়েড টিকা কর্মস‚চি। ভারতের সেরাম
ইনস্টিটিউট তৈরি করেছে এই টিকা, যা সরকার পেয়েছে আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন
সহায়তা সংস্থা গ্যাভির সহযোগিতায়।
অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার
বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে) অধ্যাপক
ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদনপ্রাপ্ত এই
টিকাটি সম্প‚র্ণ নিরাপদ। ইতিমধ্যে নেপাল, পাকিস্তানসহ আটটি দেশে সফলভাবে
ব্যবহার হয়েছে। কোনো দেশেই বড় ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
স্বাস্থ্য
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রাক্-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত
শিক্ষার্থীরা ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্কুল ও মাদ্রাসায় এই টিকা পাবে। এরপর ৯
মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী অন্যান্য শিশুরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিকা পাবে।
শহরের পথশিশুদের টিকাদানের দায়িত্বে থাকবে বিভিন্ন এনজিও।
সরকারের
লক্ষ্য- এই ক্যাম্পেইনের আওতায় ৪ কোটি ৯০ লাখ শিশুকে টিকা দেওয়া। ইতিমধ্যে ১
কোটি ৬৮ লাখ শিশু নিবন্ধন করেছে, এবং নিবন্ধন প্রক্রিয়া এখনো চালু রয়েছে।
জন্মসনদ না থাকলেও নিকটস্থ টিকাকেন্দ্রে স্বাস্থ্যকর্মীদের সহায়তায় নিবন্ধন
করা যাবে।
অভিভাবকেরা সন্তানদের নিবন্ধনের জন্য
যঃঃঢ়ং://াধীবঢ়র.মড়া.নফ/ৎবমরংঃৎধঃরড়হ/ঃপা ওয়েবসাইটে গিয়ে ১৭ সংখ্যার
জন্মনিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। নিবন্ধনের পর
সরাসরি ভ্যাকসিন কার্ড ডাউনলোড করা যাবে।
ইপিআই (সম্প্রসারিত টিকাদান
কর্মস‚চি) প্রোগ্রামের ম্যানেজার ডা. আবুল ফজল মো. শাহাবুদ্দিন খান জানান,
১২ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই ক্যাম্পেইনের প্রথম ১০ দিন স্কুল ও মাদ্রাসায়
ক্যাম্প করে টিকা দেওয়া হবে এবং পরবর্তী ৮ দিন ইপিআই সেন্টারে টিকাদান
কার্যক্রম চলবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আশা করছে, এই ক্যাম্পেইন সফল হলে
টাইফয়েড প্রতিরোধে বাংলাদেশ একটি নতুন অধ্যায় স‚চনা করবে। দীর্ঘদিন ধরে
উপেক্ষিত এ ব্যাধি থেকে শিশুদের সুরক্ষায় এটি হবে সরকারের একটি ঐতিহাসিক
পদক্ষেপ।
