ইতালিতে অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযানে এক বাংলাদেশিসহ পাঁচজনকে আটক করেছে দেশটির ফিন্যান্স পুলিশ।
তবে আদালতের নিয়ম অনুযায়ী আটককৃতদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। ঘটনাটি লা রিপাবলিকা-সহ ইতালির শীর্ষ গণমাধ্যমগুলো প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার তোসকানা বিভাগের গ্রোসেত্তো এলাকায় সিয়েনা প্রিফেকচারের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
তদন্ত
সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি ওই বাংলাদেশি প্রায় ৫২ হাজার ইউরো নগদ অর্থ
দিয়ে গ্রোসেত্তো শহরে একটি দোকান কিনেছিলেন। এ ঘটনায় ফিন্যান্স পুলিশের
সন্দেহ হলে তারা অনুসন্ধান শুরু করে।
এতে বেরিয়ে আসে, তার নেতৃত্বে একটি
সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘ডিক্রেতো
ফ্লুসসি’ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ভুয়া নথি জমা দিচ্ছিল।
চক্রটি নকল
নিয়োগকর্তা, কাল্পনিক কোম্পানির নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে প্রায় ২০০
বাংলাদেশিকে ইতালিতে প্রবেশ করিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। নিয়োগকর্তা হিসেবে
যাদের নাম ব্যবহার করা হয়েছে, তাদের অনেকেই বিষয়টি জানতেন না।
প্রতিটি
আবেদনের জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে ২ হাজার থেকে ৪ হাজার ইউরো পর্যন্ত নেওয়া
হতো। টাকা সংগ্রহ করা হতো বাংলাদেশ ও ইতালি, দুই জায়গাতেই। নগদ অর্থ দিতে
না পারলে অনেক ক্ষেত্রে পরিবারের কাছ থেকে জমি পর্যন্ত আদায় করত চক্রটি।
শুধু সিয়েনা ও গ্রোসেত্তো অঞ্চলে এই মাধ্যমে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে
বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
আদালত ঘটনাটিকে ‘অটো-মানি লন্ডারিং’ হিসেবে
চিহ্নিত করেছে। অর্থাৎ অপরাধ থেকে অর্জিত অর্থ বৈধ সম্পত্তি কেনায় ব্যবহার
করা হয়েছে। এ কারণে সংশ্লিষ্ট দোকানটি জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে
রোমে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে প্রথম সচিব আসিফ
আনাম সিদ্দিকী জানান, তারা এখনো বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানেন না। তবে
স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানার পর দূতাবাস পরবর্তী
পদক্ষেপ নেবে।
ফিন্যান্স পুলিশ জানায়, এই অভিযান শুধু অবৈধ অভিবাসন
নিয়ন্ত্রণের অংশ নয়, বরং ইতালির অর্থনীতিকে সুরক্ষিত রাখারও অংশ। কারণ অবৈধ
মূলধন বৈধ ব্যবসায় ঢুকে পড়লে তা সৎ উদ্যোক্তাদের ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং
প্রতিযোগিতা নষ্ট করে।
তদন্ত এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। ফলে আদালতের
চূড়ান্ত রায় না আসা পর্যন্ত আটক ব্যক্তিদের নির্দোষ হিসেবেই গণ্য করা হবে
বলে জানিয়েছে প্রশাসন।