কুমিল্লার
বৃহত্তর মুরাদনগর উপজেলার প্রশাসনিক বিভাজন ও উন্নয়নের দাবিতে নতুন করে
আন্দোলনের ঢেউ উঠেছে। উপজেলাটির বাঙ্গরা বাজার থানাকে একটি পৃথক উপজেলা
হিসেবে প্রতিষ্ঠার দাবিতে শনিবার এক জনসামাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সমাবেশ
থেকে এলাকাবাসী অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস
এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার কাছে জোর আবেদন
জানিয়েছেন, যাতে দ্রুত তাদের দীর্ঘদিনের এই দাবি বাস্তবায়ন করা হয়।
জানা
যায়, মুরাদনগর উপজেলাটির বিশাল আয়তন (২২টি ইউনিয়ন) এবং বিপুল জনসংখ্যার
(প্রায় ৭ লক্ষ) কারণে দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনিক সমস্যায় জর্জরিত। এই বিশাল
এলাকার মানুষের জন্য সেবা গ্রহণ করা প্রায়শই কঠিন হয়ে পড়ে। ২০১৬ সালে এই
সমস্যা সমাধানের আংশিক পদক্ষেপ হিসেবে মুরাদনগর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে
বাঙ্গরা বাজার থানা গঠিত হয়। কিন্তু, এলাকাবাসীর দাবি, শুধুমাত্র থানা গঠনই
যথেষ্ট নয়। ২০২২ সালের জনশুমারি অনুযায়ী, বাঙ্গরা বাজার থানার আওতাধীন
এলাকার জনসংখ্যা ২ লাখ ৪৭ হাজার ১১২ জন, যা একটি নতুন উপজেলা গঠনের জন্য
যথেষ্ট। বাঙ্গরায় একটি নতুন উপজেলা প্রতিষ্ঠিত হলে মানুষের হয়রানি কমবে এবং
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগসহ সকল ক্ষেত্রে উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।
শ্রীকাইল
হাইস্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন,
শিক্ষানুরাগী ও সমাজ সেবক আলহাজ্ব গোলাম কিবরিয়া সরকার। ইউপি চেয়ারম্যান
মোঃ ইকবাল বাহারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার নারী পুরুষ অংশ
নিয়ে বাঙ্গরাকে উপজেলা করার পক্ষে যৌক্তিক কারণ তুলে ধরেন এবং সরকারের
কাছে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন,
রাজনৈতিক নেতা কামরুল হাসান কেনাল, এনামুল আলম, শফিকুল ইসলাম ভুইয়া, শেখ
আলমগীর হোসেন, এডভোকেট তাহমিনা আক্তার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আহমদ, মাওলানা
মুজিবুর রহমান, আবদুস ছাত্তার, আবদুর রাজ্জাক রাজন, সাংবাদিক এমকেআই
জাবেদ, নজরুল ইসলাম, প্রবাসী সাজ্জাদ হোসেন, তানভীর আহমেদ ভুইয়া, ইউপি
সদস্য গোলাম কিবরিয়া ও সাবেক সদস্য বাকিস মিয়া প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি
উপস্থাপনা করেন, মাহাবুল হাসান সরকার কমল।
উল্লেখ্য, উপজেলা বাস্তবায়ন
বাংগরাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশার প্রতিফলন। স্থানীয়দের বিশ্বাস, যদি এই
দাবিটি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে বাঙ্গরা শুধু একটি প্রশাসনিক কেন্দ্রই হবে না
বরং এই অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের একটি নতুন দিগন্ত
উন্মোচিত হবে। এখন সবার দৃষ্টি অন্তর্বতী সরকারের সিদ্ধান্তের দিকে।
বাঙ্গরাবাসীর ভাগ্য শেষ পর্যন্ত কোন দিকে মোড় নেয়, তা সময়ই বলে দেবে।
