সোমবার ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
১৪ আশ্বিন ১৪৩২
বদলা নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার ইউএস ওপেনের রানি সাবালেঙ্কা
প্রকাশ: সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:২৬ এএম |


বদলা নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার ইউএস ওপেনের রানি সাবালেঙ্কা


ম্যাচ শুরুর আগে হঠাৎই আকাশ ভেঙে নামল বৃষ্টি। আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামের সঙ্কোচনীয় ছাদ টেনে দেওয়া হলো। বৃষ্টি থামল এক পর্যায়ে। কিন্তু শুরু হলো ঝড়। না, প্রকৃতি আর অশান্ত হয়নি। কোর্টে ঝড় তুললেন আরিনা সাবালেঙ্কা। প্রথম সেট জিতে নিলেন তিনি দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে। দ্বিতীয় সেটে অবশ্য লড়াই জমে উঠল। তবে অপ্রতিরোধ্য সাবালেঙ্কাকে থামানো গেল না। এ বছর দুটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে হেরে অবশেষে শিরোপার সুখে মাখামাখি হলেন তিনি বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যামে।
তার হাতে বাঘের ট্যাটু আঁকা আছে। নিজেকে তিনি ‘টাইগার’ পরিচয় দিতেই পছন্দ করেন। ফাইনালে সেই মানসিকতা মেলে ধরেই আমান্দা আনিসিমোভাকে ৬-৩, ৭-৬ (৩) গেমে হারিয়ে ইউএস ওপেনের শিরোপা ধরে রাখলেন সাবালেঙ্কা।
গ্র্যান্ড স্ল্যাম টুর্নামেন্টে সাবালেঙ্কার শততম জয় এটি। বিশ্বের এক নম্বর তারকা মাইলফলকটি রাঙালেন কাঙ্ক্ষিত শিরোপায়।
সেরেনা উইলিয়ামসের ১১ বছর পর কোনো খেলোয়াড় পিঠেপিঠি ইউএস ওপেন জিততে পারল। কিংবদন্তি সেরেনা টানা তিনবার ট্রফি জিতেছিলেন ২০১২ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত।
চ্যাম্পিয়ন হয়ে এই সময়ে হার্ড কোর্টের অবিসংবাদিত রানির খেতাবও ধরে রাখলেন সাবালেঙ্কা। বেলারুশের তারকার চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপাই হার্ড কোর্টে। ইউএস ওপেনে এই দুটি ট্রফির সঙ্গে আছে ২০২৩ ও ২০২৪ অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ট্রফি। ২০২২ থেকে কোনো হার্ড কোর্ট আসরের ফাইনালের আগে থামেননি তিনি।
ফাইনালে সাবালেঙ্কাই ছিলেন ফেভারিট। তবে চ্যালেঞ্জও তার কম ছিল না। গ্যালারির বেশির ভাগ অংশের সমর্থন অনুমিতভাবেই ছিল তার প্রতিপক্ষের প্রতি। আনিসিমোভার বাবা-মা রাশিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এলেও তার জন্ম-বেড়ে ওঠা নিউ জার্সিতে। আমেরিকানদের ঘরের মেয়েই তিনি। সমর্থন বেশি পাওয়াটা তাই স্বাভাবিক।
সাবালেঙ্কার চ্যালেঞ্জ ছিল নিজের কাছেও। এই বছর অস্ট্রেলিয়ান ও ফরাসি ওপেনের ফাইনালে উঠেও ট্রফির দেখা পাননি তিনি। উইম্বলডনের সেমি-ফাইনালে আটকে গেছেন এই আনিসিমোভার কাছেই হেরে। মানসিক একটা বাধা তাই ছিল তার।
সব প্রতিবন্ধকতা টপকে জিতে গেলেন তিনি। জয়ের পর মেতে উঠলেন বাঁধনহারা উল্লাসে। ২৭ বছর বয়সী তারকা বললেন, তার মূল লড়াইটা ছিল নিজের সঙ্গে।
“অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে হারার পর মনে হয়েছিল, এটি ভুলে গিয়ে সামনে তাকানোই হবে উপযুক্ত। কিন্তু ফরাসি ওপেনের ফাইনালেও একই কাজ হলো। এরপর মনে হলো, হয়তো পেছন ফিরে ওই ফাইনালগুলোয় তাকিয়ে কিছু শিক্ষা নেওয়া উচিত।” 
“এই ফাইনালে নামার আগে ঠিক করেছিলাম, নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখব আমি। ম্যাচে যা কিছুই হোক না কেন, আবেগে ডুবে যাব না। আমার মানসিকতা ছিল, কোর্টে নেমে প্রতিটি পয়েন্টের জন্য লড়াই করা। পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন, নিজের দিকে মনোযোগ রাখা এবং ম্যাচ জয়ের জন্য যা কিছু করা দরকার, সবকিছু করা।”
নিয়ন্ত্রণ যে সবসময় রাখতে পেরেছেন তিনি, তা নয়। ম্যাচ পয়েন্টে গিয়ে অতি উত্তেজনার বশেই কি না, স্ম্যাশ করতে গিয়ে গুবলেট পাকিয়ে ব্রেক উপহার দিয়ে বসেন আনিসিমোভাকে। তবে শেষ পর্যন্ত খেই হারাননি তিনি। আসল সময়েই নিজেকে শক্তভবে ধরে রাখেন রেকর্ড টানা ১৯তম টাইব্রেক জিতে।
সেই সময়ে নিজেকে সামাল দেওয়ার গল্পও শোনালেন সাবালেঙ্কা।
“একটা সময় নিয়ন্ত্রণ প্রায় হারাতে বসেছিলাম। তবে নিজেকে বলেছি, ‘নাহ, এটা হতে দেব না। সব ঠিকঠাক আছে।’ নিজেকে প্রায় হারিয়েই ফেলেছিলাম, কারণ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অমন ভুল করা যায় না। আমার অভিজ্ঞতা বলে, এসবের খেসারত দিতে হয়। তবে নিজেকে সামলেছি, গভীর একটা শ্বাস নিয়ে বলেছি, ‘ঠিক আছে, এরকম হতেই পারে। এখন এটা অতীত, পরেরটাতে মনোযোগ দেই।’ এভাবেই নিজেকে সামলেছি।”

বছরের আগের তিনটি গ্র্যান্ড স্ল্যামে কাছে গিয়েও ব্যর্থ হয়ে, এই আসরেও কঠিন পথ পেরিয়ে শিরোপা জিততে পেরেই সাফল্য বেশি মধুর লাগছে তার কাছে।
“এই জয়টাতে মনে হয়েছে, অনেক কিছু পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত জিততে পেরেছি। আমি জানতাম, যতটা পরিশ্রম করেছি, এই বছর একটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম আমার প্রাপ্য। শিরোপা ধরে রাখতে পারা ও কোর্টে দারুণ টেনিস মেলে ধরার মূল্য আমার কাছে অনেক। লড়াই করে যাওয়া ও ফাইনালে এভাবে নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারার মূল্যও অনেক। এই মুহূর্তে নিজেকে নিয়ে আমি দারুণ গর্বিত।”
আনিসিমোভা ছিলেন ঠিক উল্টো প্রান্তে। প্রথমবার গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে উঠেছিলেন তিনি গত জুলাইয়ে উইম্বলডনে। সেখাসে হেরেছিলেন বাজেভাবে। এবার হেরে গেলেন ইউএস ওপেনেও।
মানসিক অবসাদের কারণে আট মাসের বিরতি নেওয়ার পর ২০২৪ সালে কোর্টে ফেরার পর থেকে তিনি দারুণ উন্নতি করেছেন। এবার ফাইনালে উঠে র‌্যাঙ্কিংয়ে ক্যারিয়ার সেরা চারে উঠে যাবেন। কিন্তু ফাইনালে হারের বেদনা তো তাতে কমছে না!

হারার পর তার চোখে দেখা গেল জল। নিজের হতাশার কথাও লুকালেন না ২৪ বছর বয়সী তারকা। পাশাপাশি প্রশংসা করলেন প্রতিপক্ষের।
“দারুণ এক মৌসুম ছিল। টানা দুটি ফাইনালে ওঠা ছিল দারুণ, তবে হেরে যাওয়াটা প্রচণ্ড কঠিন। আমার স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দেওয়ার জন্য যথেষ্ট লড়াই আজকে করতে পারিনি।”
“আরিনা, তুমি দারুণ ও অবিশ্বাস্য। প্রতিবারই তোমার মুখোমুখি হলে তা বুঝতে পারি। তুমি যা কিছু অর্জন করেছো, আমি মুগ্ধ।”












http://www.comillarkagoj.com/ad/1752266977.jpg
সর্বশেষ সংবাদ
‘কুমিল্লা’ নামেই বিভাগ প্রতিষ্ঠার পথে এগোচ্ছে অর্ন্তবর্তি সরকার
হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির কুমিল্লা গড়তে চাই- হাজী ইয়াছিন
চৌদ্দগ্রামের সীমান্ত দিয়ে পাসপোর্ট ও ভিসা ছাড়াই ভারতে আসা যাওয়ায় আটক ৩
কুমিল্লার সীমান্তের ১৬১ টি পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তায় বিজিবি
শারদীয় দুর্গোৎসবেরআজ মহাসপ্তমী
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লা নামেই বিভাগ প্রতিষ্ঠার পথে এগোচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার
বাংলাদেশে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন সমাধান না বিপর্যয়
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি সুমন সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিম
গুপ্ত স্বৈরাচারের আবির্ভাব ঘটতে পারে: তারেক রহমান
ষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে পাঁচ দিনের শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: newscomillarkagoj@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২