ইসমাইল নয়ন।।
সহস্রাধিক
জনতা মিলে অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভের পর কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার
৩নং চান্দলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওমর ফারুককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এর আগে অপসারণের দাবিতে গতকাল সোমবার (২১ জুলাই) ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে
বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে ইউনিয়নের কয়েক হাজার
সাধারণ মানুষ।
সকাল থেকেই পরিষদ প্রাঙ্গণে অবস্থান নেন স্থানীয় জনগণ ও
পরিষদের সব ইউপি সদস্য। তারা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার
অপব্যবহার, মাদকসেবন ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে ধরে তার অপসারণ ও বিচার
দাবি করেন।
বক্তারা অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যান ফারুক ২০১৯ সাল থেকে ২০২৫
সাল পর্যন্ত বিভিন্ন খাতে দুর্নীতি করে অন্তত ৬০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
ট্যাক্স আদায়, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন, গর্ভকালীন ভাতা বিতরণ, সনদ
প্রদানসহ সব কিছু নিজের ইচ্ছেমতো পরিচালনা করে আসছেন। ইউপি সদস্যদের মতামত
উপেক্ষা করে এককভাবে সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এ ছাড়া সদস্যদের সম্মানিভাতা
দীর্ঘদিন ধরে পরিশোধ করেননি এবং তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।
বিক্ষোভ
চলাকালে উত্তেজিত জনতা চেয়ারম্যানের অফিস ঘেরাও করে এবং তাকে মারধর করে।
পরে তার অফিসের বিলবোর্ড, ছবি ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।
খবর পেয়ে দ্রুত
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় ব্রাহ্মণপাড়া থানা পুলিশ। তারা চেয়ারম্যান ওমর
ফারুককে জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার একটি
মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করে।
ছবিতে দেখা যায়, পুলিশ সদস্যদের পাহারায় চেয়ারম্যান ওমর ফারুককে কুমিল্লা কোর্টের বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতে।
এ
বিষয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থানার এসআই মেহেদী হাসান জানান, "ঘটনাস্থলে গিয়ে
উত্তেজিত জনতার হাত থেকে চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করে আমরা তাকে গ্রেপ্তার করি
এবং ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করি।"
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ দেলোয়ার হোসেন কে বার বার ফোনে চেষ্টা করলে ও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উপজেলা
নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা জাহান বলেন, “চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে
এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছেন, বিষয়টি জানার পর আমরা দ্রুত পুলিশ পাঠিয়েছি।
বর্তমানে তিনি ডিবি হেফাজতে রয়েছেন।”
স্থানীয়দের দাবি, শুধু গ্রেপ্তার নয়, চেয়ারম্যানের অপসারণ এবং তার সম্পদের ও অবৈধ কাজের নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন।