কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ৩নং চান্দলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে একাধিক খাত থেকে কমপক্ষে ৬০ লাখ টাকা আত্মসাৎসহ ২৩ টি অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় ১০ জন ইউপি সদস্য গতকাল মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) জেলা ও উপজেলা প্রশাসক বরাবর দুটি পৃথক স্মারকলিপিতে ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবী করেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ৩ নং চান্দলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক। এই ইউনিয়নের সেবা মূলক প্রতিটি খাত বর্তমানে চেয়ারম্যানের একক সিদ্ধান্তে বাস্তবায়িত হচ্ছে। যার কারণে ইউপি সদস্যদের সাথে যেমন জনগণের দূরত্ব বাড়ছে, তেমনি সেবা নিতে আসা হাজার হাজার নাগরিক প্রয়োজনীয় সকল প্রকার সেবা থেকে বঞ্চিত ও হয়রানী হচ্ছে। দীর্ঘদিন অনিয়মগুলোর প্রতিবাদ করলেও ইউপি চেয়ারম্যান কোন সাড়া দেয়নি। ফলে গতকাল মঙ্গলবার চান্দলা ইউনিয়ন পরিষদের রকিব উদ্দিন খান, নজরুল ইসলাম, মো সিপন, মো জাবেদ, মো শাহাবউদ্দিন, শাহ আলম, আলমগীর সরকার, সাইফুল ইসলাম ভূঞা, জরিনা বেগম, লুতফা বেগম এই ১০ জন সদস্য চেয়ারম্যান ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর দুটি পৃথক স্মারকলিপিতে ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবী করেন। তার বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য লিখিত অভিযোগগুলো হচ্ছে, ২০১৯ থেকে ২০২৫ (বর্তমান) পর্যন্ত স্বজনদের দিয়ে ট্যাক্স আদায় ও আত্মসাত, ১৩ মাস ধরে ইউপি সদস্যদের সন্মানি ভাতা না দেওয়াসহ তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার, গালমন্দ করা, কাবিকা, কাবিটা, টিআর, এলজিএসপির কাজ কোন সভা না ডেকে নিজের পছন্দমত বাস্তবায়ন, জলাশয়, ফসলী জমিতে টাকার বিনিময়ে ড্রেজার চালানোর অনুমতি, ঠিকমত অফিস না করায় নাগরিকদের সেবা পেতে ভোগান্তি, জন্ম নিবন্ধন, মৃত্যু সনদ, ওয়ারিশ সনদ, ট্রেড লাইসেন্স ইত্যাদি ইউপি সদস্যদের অজ্ঞাতসারে একক সিদ্ধান্তে আদায়, মহিলাদের গর্ভকালীন ভাতা পরিষদে কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই অর্থের বিনিময়ে নিজের পছন্দমত লোকদের প্রদান, ২০২১-২২ থেকে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের ১% টাকা আত্মসাৎ, বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ না করে অর্থ আত্মসাৎ টাকার বিনিময়ে বয়স সংশোধনের নামে বাল্য বিবাহ সম্পন্ন করা, ইউনিয়নের প্রতিটি বাড়িতে নেমপ্লেট প্রদানের নামে টাকা আত্মসাৎ মাদক সেবন, ইউপি সদস্যদের সাথে অসদাচরণ। রোববার সকালে প্রথমে ব্রাহ্মনপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ে ও দুপুরে কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কাছে ইউপি সদস্যরা স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চান্দলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক বলেন, আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। এর আগেও তারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল।আমি দুর্নীতিবাজ না, তাই আমার বিরুদ্ধে করা সকল অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হবে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা জাহান বলেন, চান্দলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে ওই ইউপির ১০ ইউপি সদস্যরা আমার কাছে ও জেলা প্রশাসক স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ খতিয়ে দেখে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।