বৃহস্পতিবার ২৯ মে ২০২৫
১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
ধ্বংসের পথে শিল্প-বিনিয়োগ
প্রকাশ: বুধবার, ২৮ মে, ২০২৫, ১:৩৬ এএম |



  ধ্বংসের পথে শিল্প-বিনিয়োগবাংলাদেশের অর্থনীতি এক কঠিন সংকটের মুখোমুখি। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী আশাবাদ ফিকে হতে হতে আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি অনেকটা দুরাশার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়েছে আজ। চলমান বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট, ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদহার এবং শিল্পবিরোধী নীতির কারণে দেশের বেসরকারি খাত, বিশেষ করে বস্ত্রশিল্প গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘১৯৭১ সালে খুঁজে খুঁজে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছে আর ২০২৫ সালে শুধু শিল্প নয়, শিল্পোদ্যোক্তাদের মেরে ফেলা হচ্ছে।’ বিটিএমএ সভাপতি রূপকার্থে বললেও তাঁর মন্তব্যটি বর্তমান পরিস্থিতির ভয়াবহতার চিত্রই তুলে ধরে।
সম্মেলনে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, এলএফএমইএবি, বিসিআই ও আইসিসি-বাংলাদেশের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা অভিযোগ করেছেন যে বিপুল পরিমাণ গ্যাস বিল পরিশোধ করার পরও পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। ৬০ শতাংশের বেশি উৎপাদন বন্ধ রয়েছে, ব্যাংকঋণের সুদ বেড়েছে এবং আইন-শৃঙ্খলার অবনতি শিল্প বন্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার একদিকে শিল্প চালাতে সহায়তা করছে না, অন্যদিকে সময় বেঁধে দিয়ে বেতন দিতে বলছে। সরকার নিজেই স্থানীয় কাগজকলগুলোকে গলা টিপে মেরে ফেলছে। চিনিকল থাকার পরও চিনি আমদানি করা হচ্ছে। সরকার একদিকে বিদেশি বিনিয়োগের আশা করছে, অন্যদিকে দেশীয় উদ্যোক্তাদের ভিকটিম করছে।
কিন্তু আমরা মনে করি, দেশীয় উদ্যোক্তারা ভালো না থাকলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা উৎসাহ পাবেন না। সার্বিক পরিস্থিতিতে কর্মসংস্থান ঝুঁকির মুখে পড়ছে, জনমনে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে।
আশার কথা যে সরকার এলএনজি আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহতির উদ্যোগ নিয়েছে। এই ইতিবাচক পদক্ষেপ এলএনজির দাম অন্তত ২০ শতাংশ কমিয়ে দেবে, যা বিদ্যুৎ উৎপাদন, শিল্প উৎপাদন এবং পরিবহন খাতে কিছুটা স্বস্তি আনবে। অন্তর্র্বতী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সরকারের ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে লাগাম টেনে ধরার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল।
কিন্তু গত প্রায় ১০ মাসে সরকারের অর্থনৈতিক প্রবণতা শুধু ঋণমুখী। এই ঋণ করতে গিয়ে বিভিন্ন স্বার্থের জালে জড়িয়ে যাচ্ছে দেশ। অর্থনীতিবিদদের মতে, জিডিপির ৪০ শতাংশের বেশি ঋণনির্ভর হওয়া একটি দেশের অর্থনীতির জন্য খারাপ। বাংলাদেশের জিডিপির ৪৫ শতাংশ এখন ঋণনির্ভর। আমরা মনে করি, দেশের অর্থনীতিকে প্রকৃত অর্থে স্বাবলম্বী করতে হলে বেসরকারি খাতকে সম্পূর্ণ সমর্থন দেওয়া প্রয়োজন।
আমরা মনে করি, দেশ ও দেশের অর্থনীতির স্বার্থে বেসরকারি খাতকে আস্থায় নিতে হবে। বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগ নিতে হবে। এ জন্য বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের হয়রানি বন্ধ করা, তাঁদের বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার মতো পদক্ষেপগুলো অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। কোনো প্রকার হয়রানিই কাম্য নয়। এভাবে চলতে থাকলে শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে এবং দেশের অর্থনীতি বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হবে।












সর্বশেষ সংবাদ
ঈদুল আজহা ৭ জুন
কুমিল্লায় বাহার-সূচির বিরুদ্ধে আরো এক হত্যা মামলা
বাংলা একাডেমি নজরুল পুরস্কার পাওয়ায় বিশিষ্ট নজরুল গবেষক প্রফেসর ড. আনোয়ারুল হককে সংবর্ধনা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
দখলে-দূষণে মিতল্লা খাল, বর্ষায় ভোগান্তির আশঙ্কা
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লায় মা ও ভাবীকে হত্যায় যুবকের মৃত্যুদণ্ড
কুমিল্লার বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেনের মৃত্যু
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের সাবেক কর্মকর্তা আব্দুল খালেক আর নেই
কুমিল্লায় জন্মবার্ষিকীর সমাপনী অনুষ্ঠিত
শিশু মৃত্যুর এক বছর পর মরদেহ উত্তোলন
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২