ভারত
সরকারের নিষেধাজ্ঞায় বেনাপোল স্থলবন্দরে আটকা পড়েছে রপ্তানিমুখী
গার্মেন্টসসহ কয়েক প্রকার পণ্যের শতাধিক ট্রাক। এসব পণ্যবাহী ট্রাক যদি
ভারতে প্রবেশের অনুমতি না দেওয়া হয়, তাহলে ঢাকায় ফেরত নিয়ে যাওয়া ছাড়া কোনো
উপায় থাকবে না বলছেন আমদানিকারকরা। এতে লোকসান গুনতে হবে তাদের।
বেনাপোল
ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক
সাজেদুর রহমান বলেন, ‘ভারতের পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং
এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তীর সঙ্গে
যোগাযোগ চলছে। যেসব পণ্যের এলসি/টিটি এরইমধ্যে হয়ে গেছে, সেসব পণ্য যাতে
ভারতে রপ্তানি করা যায়, সেজন্য ভারতীয় কাস্টমসে আলোচনা চলছে। দিল্লিতে চিঠি
পাঠানো হয়েছে। আমরাও অপেক্ষায় আছি।’
বাণিজ্য সংশিষ্টরা জানান, দেশের
২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য
হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় ৮০ শতাংশ বাণিজ্য হয় বেনাপোল ও
ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ২৫০-৩০০ ট্রাক
বিভিন্ন পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়। যার মধ্যে শতাধিক ট্রাকে থাকে তৈরি পোশাক।
তবে শনিবার (১৭ মে) একটি প্রজ্ঞাপনে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে
গার্মেন্টস শিল্পের তৈরি পোশাক, সুতা, প্লাাস্টিক, কাঠের তৈরি আসবাবপত্র
এবং ফল ও ফলজাতীয় পণ্য আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত সরকার। এতে বেনাপোল
বন্দরে আটকা পড়েছে এসব পণ্য। ভারতের নবসেবা ও কলকাতা বন্দর দিয়ে পণ্য
রপ্তানির সুযোগ রাখলেও ওইসব বন্দরের সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা কঠিন ও ব্যয়বহুল
হওয়ায় ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যে আগ্রহ কমেছে।
বেনাপোল বন্দর সূত্র জানায়,
গতবছর (২০২৩-২৪ অর্থবছর) বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রায় ১৫৭ কোটি ডলারের পণ্য
রপ্তানি হয়েছিল। বছরে ১০-১৮ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি
হয় ভারতে। যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেশিরভাগ আমদানিকারকরা বেনাপোল বন্দর
ব্যবহারে আগ্রহী। এ পথে রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে প্রক্রিয়াজাত
খাদ্যপণ্য, পাট, পাটের তৈরি পণ্য, তৈরি পোশাক, কাঠের আসবাবপত্র, কেমিক্যাল,
বসুন্ধরা টিস্যু, মেলামাইন, মাছ ইত্যাদি।
রপ্তানিকারকদের একজন ইদ্রিস
আলী। তিনি বলেন, ‘কলকাতা ও নবসেবা সমুদ্র বন্দর দিয়ে রপ্তানি কঠিন ও
ব্যয়বহুল। এখন আটকে পড়া রপ্তানি পণ্য নিয়ে বিপাকে পড়েছি।’
বেনাপোল
আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, শনিবার ভারত সরকারের
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে গার্মেন্টস, তুলা, সুতির বর্জ্য, কার্ড ও
প্লাস্টিক ও কাঠের তৈরি আসবাবপত্র, ফলজাতীয় পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া
হয়। ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞার পর বেনাপোল বন্দরে শতাধিক রপ্তানিমুখী
গার্মেন্টস পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়েছে। ভারত সরকারকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার
করে বাণিজ্য সহজ করার দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস
কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা আশরাফ আলী বলেন, ‘ভারত সরকারের
নিষেধাজ্ঞার পর শনিবার সকাল থেকে গার্মেন্টস শিল্পের কোনো পণ্য ভারতে
ঢোকেনি। তবে বেশ কিছু ট্রাক বন্দর ও বন্দর সড়কে দাঁড়িয়ে আছে বলে জানতে
পেরেছি।’