এখনো
ধরাছোঁয়ার বাইরে নরসিংদী জেলা কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া সাত জঙ্গিসহ ১৪৫
জন বন্দি। দুই নারী জঙ্গি আত্মসমর্পণ করলেও তারা জামিনে মুক্ত হয়ে কারাগার
থেকে বের হয়ে গেছেন। উদ্ধার হয়নি কারাগার থেকে লুট হওয়া ২৯টি অস্ত্র ও
পাঁচ হাজারেরও বেশি গুলি। কয়েদিদের পাশাপাশি লুট হওয়া অস্ত্র ও গুলি বাইরে
থাকায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
নরসিংদী জেল সুপার মো. শামীম
ইকবাল বলেন, হামলা ও অগ্নিসংযোগের পর কারাগারের সব নথিপত্র পুড়ে গেছে। তাই
জঙ্গি বিষয়ে কোনো তথ্য এই মুহূর্তে আমাদের কাছে নেই। তবে আমি যোগ দেওয়ার পর
দুজন নারী জঙ্গি পেয়েছি। তারা জামিন নিয়ে বের হয়ে গেছেন।
এদিকে সহিংসতা
এড়াতে পালিয়ে থাকা কয়েদি, অস্ত্র ও গোলা-বারুদ উদ্ধারে পুলিশি কার্যক্রম
অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হান্নান।
সংশ্লিষ্ট
সূত্রে জানা যায়, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগে ২০২৪ সালের ১৯
জুলাই নরসিংদী জেলা কারাগারে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এসময়
কারাগার থেকে পালিয়ে যান ৯ জঙ্গিসহ ৮২৬ জন কয়েদি। এসময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র ও
১০ হাজার ১৯টি গুলি লুট হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে আইনজীবী, আদালত ও স্থানীয়
থানা পুলিশের মধ্যে ৬৪৬ জন হাজতি ও কয়েদি আত্মসমর্পণ করে কারাগারে ফিরে
আসেন। পলাতক আরও ৩৫ জন বন্দিকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়।
সূত্র
বলছে, পলাতক বন্দিদের মধ্যে এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে ১৪৫ জন। ৮৫টি লুট করা
অস্ত্রের মধ্যে ৫৬টি অস্ত্র উদ্ধার করা গেছে। তবে এখনো উদ্ধার করা যায়নি
২৯টি আগ্নেয়াস্ত্র ও পাঁচ হাজারের বেশি গুলি। কয়েদিদের পাশাপাশি লুট হওয়া
অস্ত্র ও গুলি বাইরে থাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে জনমনে।
এ বিষয়ে নরসিংদী
কোর্টের আইনজীবী নিগার বলেন, ‘অপরাধীরাও বাহিরে, অস্ত্রও বাহিরে। এটা একটা
আতঙ্কের ব্যাপার। কারণ অপরাধীরা এসব অস্ত্র ছিনতাই-রাহাজানি, খুন-খারাবির
কাজেও ব্যবহার করতে পারেন। অস্ত্রগুলো খারাপ মানুষের হাতে থাকলে দেশের
শান্তি-শৃঙ্খলা ভঙ্গ হতে পারে। এসব অস্ত্র দ্রুত উদ্ধার হওয়া দরকার।’
নরসিংদী
জেল সুপার শামীম ইকবাল বলেন, হামলা ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত কারাগারের
পরিত্যক্ত ভবনকে আপাতত ব্যবহার উপযোগী করা হয়েছে। কারাগার থেকে পালিয়ে
যাওয়া ৮২৬ বন্দির মধ্যে ৬৪৬ জন ফিরে এসেছেন।
নরসিংদী পুলিশ সুপার মো.
আব্দুল হান্নান বলেন, অগ্নিসংযোগে কাগজপত্র পুড়ে যাওয়ায় আসামি গ্রেফতারে
কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। তবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে পলাতক বন্দিদের গ্রেফতারের
পাশাপাশি অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হবে।