অনু গল্প
বেকু এবং সোলেয়মানের স্মৃতি

কাজী মোহাম্মদ আলমগীর ।।
সোলেয়মানের বেকু মানুষ জমাতে পার তো। বেকু সোলেয়মানের পোষা বানর। তার দাদার দেয়া বানর। আমরা ভেবে অবাক হতাম একটা লোক সারা জীবন বানর নাচিয়ে লোক জমিয়ে শালসা এবং তাবিজ বিক্রি করে কিভাবে বাঁচবে! কিন্তু সোলেয়মানের মুখে কখনো দুশ্চিন্তা দেখিনি। সোলেয়মানের পূর্ব পুরুষরা সচ্ছল ছিল। সেই সচ্ছলতার ভেতর থেকে সে একধরনের সাহস তার রক্তের ভেতর নিয়েছিলো। তাই আমাদের মনে হতো সোলেয়মান যদি আর কোনদিন বানর নিয়ে বের না হতে পারে, ঘরেই বসে থাকতে হয় তবু সে কারো কাছে হাত পাতবে না। এমন মানুষের সংখ্যা যদি বৃদ্ধি পেতো তাহলে আমাদের সমাজের মেরুদণ্ডটা আরো শক্ত হতো।
বেকু প্রায় অচল হয়ে পড়লে সোলেয়মান ভাবে তাকে ছেড়ে দিবে। কিন্তু কোথায় ছাড়বে? দুষ্ট ছেলেরা বেকুকে ঢিল ছুঁড়ে মেরে ফেলবে। এ কথা ভেবে সোলেয়মান নিজেই সিদ্বান্ত নেয় কাউকে দিয়ে দিবে অথবা বনে ছেড়ে দিয়ে আসবে ।
একদিন সোলেয়মান বেকুকে নিয়ে বের হলো। বাড়ির সামনে একজন অপরিচিত লোককে সে বানর নিবে কিনা জিজ্ঞেস করলে লোকটি নিবে না বলে দ্রুত সোলেয়মানকে অতিক্রম করে । সোলেয়মান হাঁটতে শুরু করে। সে কোথায় যাবে জানে না। কিন্তু তার চোখে মুখে কোন দুশ্চিন্তা নেই। শহর থেকে পুবদিকে টানা একঘন্টা চলার পর সোলেয়মান বিশ্রাম নেবার জন্য একটি বটতলায় বসেছিল।
আজ সঙ্গে তাবিজ কবজ শালসা ডুগডুগি কিছু নেই। বেকু নিজের কর্তব্য মনে করে বিস্ময় দৃষ্টিতে সোলেয়মানের দিকে তাকিয়ে থাকে।
ওস্তাদ তাকে আজ ডিগবাজি দিতেও বলে না।
তারপর সোলেয়মান নিজ হাতে বেকুর গলার শিকল ছাড়িয়ে বলেছিল, ‘ যা, তুই মুক্ত।’ কিন্তু বেকু ততদিনে মুক্তি কী জিনিষ ভুলে গেছে। বেকুর শরীরের পশম কমে গেছে। পাছার অংশ গোলাবি-লালছে ভাব, তাও ম্লান হয়ে গেছে। পাছাড় দিকে তাকালে বেকুর বয়স টের পাওয়া যায়। এই বয়সে বেকু কোথায় যাবে!
বেকু এবং সোলেয়মান মুখোমুখি।
বটতলায় লোক জমতেছিল। মানুষ এবং বানর কী কারণে এভাবে মুখোমুখি বসে আছে তা দেখার জন্য খুব অল্প সময়ে লোকের ভিড় বেড়ে যায়।
তারপর সোলেয়মান উঠে দাঁড়িয়ে ছিল। মনে হয়েছিল বক্তৃতা দিবে।
লোকজনের আগ্রহ ক্রমশ বাড়ছিলো, হয়তো সোলেয়মান কিছু করে দেখাবে।
সোলেয়মান বলা শুরু করে, ‘আমি এই বানরটি দিতে চাই, কেউ নিবার আছেন , হাত তোলেন।’
সোলেয়মানের কথা শোনে কেউ হাত তোলে না।
‘ বুঝতে পারছি, আপনারা কেউ বানর নিতে আগ্রহী না। কিন্তু দেখতে আগ্রহী। আমিও দেখার মানুষ ছিলাম। প্রথম জীবনে সংসার করবো না বলে সিদ্বান্ত নিয়ে ছিলাম। কোন কিছুতে স্থিরতা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। বাড়ি থেকে পালালাম। কেউ আমাকে খুঁেজ পায় না। বাড়িতে এলে আমাকে বিয়ে করিয়ে দিবে। তাই আমি লুকিয়ে রইলাম। বন্ধু বান্ধবদের বাড়িতে থাকি। কিছুদিন পরপর বাড়ি পাল্টাই। লক্ষ্য করলাম কেউ আমাকে বেশি দিন সহ্য করতে পারে না। আমার অসুবিধা নেই। নির্লজ্জের মতো ঋণ করি। যারা ঋণ দেয় তারাও জানে আমি ঋণ পরিশোধ করবো না। ইচ্ছা থাকলেও আমার সামর্থ্যরে সিমাবদ্ধতার কারণেই পারবো না। বেদনাহীন ঋণে লজ্জাজনকভাবে জড়িয়ে যাই। বুক থেকে জোরে নিঃশ্বাস ছাড়ি আর পুণরায় স্থান পাল্টাই। কিন্তু এভাবে কতদিন? একদিন বাড়ি ফিরে আসি।
আমার বাবার ছিল সরকারি চাকরি। বড় চাকরি। আমার আগমনে বাবা বলেছিলেন, পড়া লেখা করো তারপর রাজনীতি করো। রাজনীতি করলে লোকজন চিনবে- সম্মান পাবে- মনে রাখবে। চরিত্র ঠিক রাখতে পারলে বিয়ে করো না। সম্ভব হলে বেশি বেশি রোজা রেখো। আমার মা বলেছিলেন, তোর বাবার কথা মানতে পারবি না। রাজনীতি করতে গেলে তুই দিশা পাবি না । তুই একটা বিয়ে কর, তোর বউ পালনের দায়িত্ব আমার। আহা! মা আমার।
আমার দাদা বলেছিলেন, কিছু করতে মন না চাইলে তুই একটা বাঁদর লালন পালন কর। বাঁদর নাচা। বাঁদর নাচালে তোর ভিতরের বাঁদরামি চলে যাবে।
সেই রাতে আমি স্বপ্নে দেখলাম আমি লেখা পড়া শেষ করে - বিয়ে করে, রাজনৈতিক নেতা হয়ে, বাঁদর নাচিয়ে মরে গেছি। আমি হলাম স্বপ্নে মরে যাওয়া সেই সোলেয়মান যে মানুষের অভিশাপের দস্তান বলে বেড়াই। এখন বলেন তো কে আমার বেকুকে নিতে রাজি আছেন, বিনা টাকায়।’
কেউ আগ্রহী হয় না। কিন্তু দেখার ভিড়ও কমে না।
বন জঙ্গল কমে যাওয়াতে চিড়িয়াখানা ব্যতিত অন্য কোথাও প্রাণী দেখার সুযোগ নেই। কিন্তু চিড়িয়াখানায় দেওয়ার মত বেকুর আর বয়সও নেই।
সোলেয়মানতারপর উঠে দাঁড়িয়েছিল। তাকে কেউ বলেনি আরেকটু বসেন, আপনার পরাণের কথা বলে যান। মানুষের দীর্ঘ দৃষ্টি তাকে এবং বেকুকে অনুসরণ করে বেশি দূর যেতে না পারলেও প্রত্যেকের মনের মুকুরে সেই দৃশ্য রয়েই গেল
------------------কবিতা---------------------
আহাম্মেদ কবীর
আদিবাসী ছড়া
আমরা থাকি পাহাড় দেশের বন-বনানী সবুজ ঘাসের
ছোট্ট ঘরে, উপত্যাকার নরম মাটির ঠিক উপরে শক্ত বাঁশের
বাসায় থাকি, ছবি আঁকি, মেঘের সাথে ডাকাডাকি
মা-বাবাদের প্রেমের-পাখি খোলা আঁকি চাঁদ-জোনাকি
দেখে দেখে বিজুর ফাঁকে আমোদ ভরা হৃদয় নিয়ে
রাঙামাটির রুপার দেশে, হেসে হেসে আমরা থাকি।
আমরা হলাম কৃষি জ্ঞানের ঝুম-চাষি ভাই
কলাপিঠার মতই সরল, তঞ্চঈ্যার তাই তুলনা নাই।
ফুল দিয়ে প্রেম নদীর জলে, মাটির দেহের অন্তরালে।
আমরা হলাম আদিবাসী নম্র-লাজুক বাগান- হাসি
বাংলা-পালির মিশেল দিয়ে বলতে কথা ভালোবাসি
থামী পরা মা জনননী, পিতার পোশাক জামা-ধুতি
মালায় বোনের রুপার দ্যুতি অলংকারের শুদ্ধ-মতি
বিন্নি পিঠা পাঁচন সাথে সবজি-ভাতে ভোজন করি
আমরা ঘড়ি, সময় ধরি কর্মে পটু নিবাস-ছড়ি
তাই আমাদের নিজের বাড়ি আমরা বলি সুখের ‘অরক’
এসো সবাই দূর পাহাড়ের কোল ঘেষে যেই আছে সড়ক
তোমরা এলে সেই সেখানে মজা হবে আমোদ হবে
আসবে কবে তোমরা সমবে?
ওরা কারা
জুবাইদা নূর খান
চলে গেলে কেউ আসে না ফিরে
হারায় বুঝি নীল সাগরের ঝিনুক নুড়ির ভিড়ে?
মায়ের স্নেহ, পিতার শাসন, প্রিয়জনের অনুরাগ
সবটুকু সত্যি নয় বটে; পেছনে সন্তর্পণে লুকানো থাকে
প্রাপ্তি -অপ্রাপ্তির যোগ- বিয়োগ জটিল সব গুণ-ভাগ।
হলদে সোনালু ফুলও দোল খেতে খেতে চেয়ে নেয়ে একটুখানি হাসি;
অথবা, জারুলের ডালে বেগুনি বোশেখের ইচ্ছে হয় জড়াতে প্রেমের ফাঁসি।
জীবনকে আঁকড়ে ধরে বাঁচার আকুতি নিয়ে পলে পলে লুটায় মৃত্যু দুয়ারে,
সকল আপনের মুখোশে বিষধর কীটেরা ভেসে আসে কালাপানির জোয়ারে;
বেঁচে থাকার অধিকার হারিয়ে হৈমন্তীরা একটু একটু করে নিক্ষিপ্ত হয় চিতার অনলে;
আর, পলাশেরা মরে গিয়ে বেঁচে যায়; সুস্মিতার সিঁথিতে তখনও রক্ত সিঁদুর জ্বলজ্বল করে জ্বলে।
মশিউর রহমান রিপন
প্রতিদিনের মা
১.
আজকের দিনটা ভরে উঠেছে
ছবিতে, পোস্টে, চেনা হাসিতে।
মা যেন একটি সংক্ষিপ্ত মুহূর্ত,
ডিজিটালের আলোয় ঝলমল।
কিন্তু সেই মুখটি,
যে ভোরবেলা উঠে
গ্যাসের চুলা জ্বালায়,
তার তো নেই তেমন আলো।
সে বুঝে না “মা দিবস” কাকে বলে,
সে জানে, কবে চাল শেষ,
কার ওষুধ পড়েছে ফুরিয়ে।
মা, একটি দিনে নয়,
তিনি আছেন প্রতিটি ধাপে
অবহেলার ছায়ায়,
আর অকারণ কান্নার ভিতরে।
২.
ঘুমভাঙা ঘরে ছড়িয়ে পড়ে
রান্নার হালকা ধোঁয়া,
জানলা খুলে যে দাঁড়ায়
সে তো মা।
বৃষ্টিতে কাঁপে না সে,
রোদে পোড়ে না মুখ,
শুধু নিঃশব্দে কাজ করে যায়,
চায়ের কাপ গুনে রাখে চুপচাপ।
পাশের শিশুটির সর্দি-জ্বর
তারই চোখে ঘুমহীনতা,
তবু সে বলেনি, “আজ আমার দিন।”
মায়ের জন্য কোনো ঘোষণার দরকার নেই
তিনি আছেন,
যেখানে প্রয়োজন শব্দ ছাড়াও বোঝা যায়।
৩.
ছাদের এক কোণে দাঁড়িয়ে,
ভেজা কাপড় ছড়িয়ে দেয় যে হাত,
তাতে লেগে থাকে
ভাতের গন্ধ,
আর দিনের শেষ আলো।
মা,
তিনি খবরের পাতায় নন,
তিনি খবরের আগেই জানেন
কে কেমন ঘুমিয়েছে,
কার চোখে দুঃস্বপ্ন।
একটি গায়ের চাদর টেনে
সে ঢেকে দেয় বাড়ির ক্লান্তি,
নিজের গা ভিজিয়ে রাখে,
তবু কাউকে কিছু বলে না।
প্রতিদিনের রোদ যেন
তাঁর নিঃশব্দ কাব্য।
৪.
বাড়ির সবাই ঘুমিয়েছে,
রান্নাঘরে জ্বলছে শুধু হালকা আলো।
একটা একটা থালা ধুয়ে
মা রাখেন তাকের কোণে।
জলের শব্দে মিশে থাকে
তার নরম দীর্ঘশ্বাস,
যা শোনা যায় না,
তবে বুঝি, ভোরবেলায়
চা পেতে দেরি হয় না বলে।
মা,
আপনি তো কোনো স্বীকৃতির অপেক্ষা করেন না,
তবু আমরা কী অকৃতজ্ঞ!
একটি দিন দিলে আপনাকে মনে রাখি
বাকি দিনে চোখ ফিরিয়ে থাকি।
৫.
মা,
আপনি আছেন,
গোটা বছরের প্রতিটি ছায়ায়,
ঘামের গন্ধে,
মলিন জামার পাশে ভাঁজ করা হাসিতে।
একটি দিনে ফুল দিলে কিছু হয় না,
যদি বাকি দিনে দরজা না খোলে
আপনার জন্য।
আমরা চাই,
এই একদিনে নয়
আপনার জন্য হোক সকালের ভাত,
দুপুরের শান্তি,
রাত্রির প্রশান্ত নিঃশ্বাস।
কারণ আপনি শুধু মা নন
আপনি আমাদের প্রতিদিন।
লায়
চা পেতে দেরি হয় না বলে।
মা,
আপনি তো কোনো স্বীকৃতির অপেক্ষা করেন না,
তবু আমরা কী অকৃতজ্ঞ!
একটি দিন দিলে আপনাকে মনে রাখি
বাকি দিনে চোখ ফিরিয়ে থাকি।
৫.
মা,
আপনি আছেন,
গোটা বছরের প্রতিটি ছায়ায়,
ঘামের গন্ধে,
মলিন জামার পাশে ভাঁজ করা হাসিতে।
একটি দিনে ফুল দিলে কিছু হয় না,
যদি বাকি দিনে দরজা না খোলে
আপনার জন্য।
আমরা চাই,
এই একদিনে নয়
আপনার জন্য হোক সকালের ভাত,
দুপুরের শান্তি,
রাত্রির প্রশান্ত নিঃশ্বাস।
কারণ আপনি শুধু মা নন
আপনি আমাদের প্রতিদিন।
আমার বন্ধু মাতাল ঋত্বিক
আহমেদ সাব্বির
অর্থনীতি থেকে রাজনীতি,
যৌনতা থেকে শোষণের গল্প করতে করতে,
কখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল,
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়,
টের পাওয়া যায়না৷
টিএসসি থেকে উদ্যান,
মোড়ঘুরে ক্যারাম ঘর কিংবা ক্যাফেটেরিয়া।
সিগারেটের পথ চলতে চলতে,
আড্ডারগুলো অনিকের প্রান্তরে শেষ হয়।
পূর্বের মেটা ম্যাসেজ ধরে,
শরবতের দাম নিয়ে কথা কাটাকাটি।
ঘামের বা বৈশাখের অজুহাত দিয়ে,
আলিঙ্গনের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়া।
মাতাল ঋত্বিক কবিতার উপত্যকা মেলে ধরে।
ফ্রয়েড বা অ্যাডলার ভেঙে,
হরহামেশা বুদ্ধ বা বেদের প্রবেশ।
একত্রে একে অপরের যাতনা ঢাকবার চেষ্টা।
ক্রমশ মিত্র থেকে মিতা,
মিতা থেকে ভ্রাতা।
ভ্রাতা থেকে খুব আপন হয়ে উঠে।
যার যাতনার জোছনায়,
কান ও চোখ না পোড়ালে
একেকটি দিন যেন যুদ্ধ বিরতির মতো মনে হয়।
মাতাল ঋত্বিক কখনো জেফ্রি ডার্মার,
কখনোবা শ্রীকান্ত।
কখনোবা দেবদাস হয়ে ধরা দেয়৷
মিতা থেকে ভ্রাতার খাল খুলে,
তার জগৎের গন্ধম ভক্ষণ করে
দিও থেকে মাতাল হয়ে উঠি৷
ঢেউগুলো যাচ্ছে বয়ে
ইয়াসিন আশরাফ
ঢেউগুলো যাচ্ছে বয়ে
আমরা সকলেই তার যাত্রী
আশা ছিল তার কাছে অনেক তারা
তবে কেন সে মৃদুমন্দ,যতিচিহ্ন হারা
চৈত্রের ইস্পাত রোদ্দুর দুপুরে
কার যেন কান্না আসছে ভেসে
আমরা ভাগ করে নিচ্ছি আপেল ও
বারুদের স্ফূরণ
বন্ধ চোখে কতো মায়াবী গানের দর্শন
হয়তো একদিন প্রতীক্ষা আসবে নেমে
কেউ যাবে আবার ফিরে আসার
অর্থ রেখে পথে
কেউ রয়ে যাবে ছাদ ও মাটির চোখে
ঢেউগুলো যাচ্ছে বয়ে এখনও।
তুমি কি হাত বাড়াবে
তাবেদার রসুল বকুল
হালনাগাদ করবো আমাদের সম্পর্ক
তোমার কালো কাজল চোখে
চোখ রাখতে পারিনি
ঋনের বোঝা এতো বেশী
হালখাতায় জমা করতে পারিনি কিছুই।
দূরত্ব বেড়ে গেলে
দেনাও বেড়ে যায়
তোমার দুয়ারে দাড়িয়ে
এবার হালনাগাদ করতে চাই
তুমি কি হাত বাড়াবে।
ঝড়
জোহরা জ্যোতি
একটি ফুলের ঝড় এসে
যদি তোমায় উড়িয়ে দেয় !
বুনো ফুলেরা মাখিয়ে দেয় তোমায়
পরাগ রেণু !
ঈশান কোণে লু হাওয়ায়
এনে দেয় বিধ্বস্ত বজ্রাঘাত
যদি ভুলে যাও সেই
বালুকাবেলার আঁধার রাত।।
যদি কখনো দেখা হয় আচমকা
কোন পথে ,চলন্তে
যদি ঝরো ঝরো ঝর্ণা বহে
হৃদ প্রান্তে
মেঘ হয়ে ভাসিয়ে দিও
উন্মুক্ত আকাশের সীমান্তে।
যদি জারুল বনে বিরহী
ডাহুকীর...
ভেসে আসে কান্নার সূর
ভেবে নিও যতকথা ছিলো
তা হারিয়েছে দূর...বহুদূর ।
যদি ঝড় হয়ে আসো
বৈরী বাতাসে
বৃষ্টি হয়ে ঝরে যেয়ো...
যদি ব্যথার ভার বইতে না
পারো...
হারিয়ে যেয়ো
অতল গহ্বরে ।