চার
বলে দরকার ১৯ রান। ম্যাচ অনেকটাই হেলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের দিকে।
কিন্তু টানা তিন বলে বৈভাব আরোরাকে দুই ছক্কা ও এক চারে ম্যাচ জমিয়ে দিলেন
শুভাম দুবে। শেষ বলে ৩ রানের সমীকরণে আর পারলেন না তিনি। রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে
নাটকীয় জয় পেল কলকাতা।
রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে রোববার কলকাতার জয় ১ রানে। ইডেন গার্ডেন্সে কলকাতার ২০৬ রানের জবাবে রাজস্থান করে ২০৫।
শেষ
ওভারে তিন উইকেট হাতে নিয়ে রাজস্থানের প্রয়োজন ছিল ২২ রান। পেসার আরোরার
প্রথম বল কাভার দিয়ে জোরের ওপর খেলেন ইংলিশ পেসার জফ্রা আর্চার,
বাউন্ডারিতে রিঙ্কু সিংয়ের দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে দুই রানের বেশি অবশ্য হয়নি।
পরের বলে আর্চারের সিঙ্গলে স্ট্রাইক পান দুবে। ‘ইমপ্যাক্ট বদলি’ নামা এই
বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের রান তখন ১০ বলে ৮।
আরোরার শর্ট বল পুল করে ডিপ
ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে লড়াইয়ে উত্তেজনা ফেরান দুবে।
চতুর্থ বলে চার মারেন ডিপ ফাইন লেগ দিয়ে। পঞ্চম বলটি ইয়র্কারের চেষ্টায়
আরোরা দেন ফুল টস, এবার ছক্কা লং অফ দিয়ে।
শেষ বলে চাই ৩। উত্তেজনার
পারদ তখন তুঙ্গে। এবার ঠিকমতো ইয়র্কার করতে পারেন আরোরা, দুবে খেলতে পারেন
লং অফের দিকে। লং অফ থেকে রিঙ্কু ক্ষিপ্রতায় এগিয়ে এসে বল ধরে থ্রু করেন নন
স্ট্রাইক পান্তে, বল ধরে স্টাম্প ভেঙে দেন আরোরা, দ্বিতীয় রানের চেষ্টায়
রান আউট হয়ে যান আর্চার। গর্জে ওঠে ইডেন গার্ডেন্স, উল্লাসে মাতে কলকাতা।
অধিনায়ক রিয়ান পারাগের ৮ ছক্কা ও ৬ চারে ৪৫ বলে ৯৫ রানের পর দুবের (১৪ বলে ২৫*) শেষের ঝলকে আশা জাগালেও পেরে উঠল না রাজস্থান।
শেষটা
রোমাঞ্চকর হলেও একপর্যায়ে মনে হচ্ছিল অনায়াসে জিতে যাবে কলকাতা। আন্দ্রে
রাসেলের ২৫ বলে ৫৭ ও রিঙ্কুর ৬ বলে ১৯ রানের সুবাদে বড় পুঁজি গড়ার পর প্রথম
দুই ওভারে তারা তুলে নেয় দুই উইকেট।
টি-টোয়েন্টিতে সর্বকনিষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে সেঞ্চুরির পর টানা দ্বিতীয় ম্যাচে দুই বল খেলে আউট হন ১৪ বছর বয়সী বৈভাব সুরিয়াভানশি।
তৃতীয়
উইকেটে ইয়াশাসভি জয়সওয়ালের (২১ বলে ৩৪) সঙ্গে ৩১ বলে ৫৮ রানের জুটিতে
শুরুর ধাক্কা সামাল দেন পারাগ। কিন্তু দ্রুত আরও তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে
অষ্টম ওভারে তাদের স্কোর হয়ে যায় ৫ উইকেটে ৭১।
সেখান থেকে শিমরন হেটমায়ারের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে ৪৮ বলে ৯২ রানের বিস্ফোরক জুটিতে দলের আশা বাঁচিয়ে রাখেন পারাগ।
ত্রয়োদশ
ওভারে ইংলিশ স্পিনার মইন আলিকে টানা পাঁচটি ছক্কা মারেন পারাগ। পঞ্চম
ক্রিকেটার হিসেবে আইপিএলে এক ওভারে পাঁচ ছক্কা মারার কীর্তি গড়েন ২৩ বছর
বয়সী ব্যাটসম্যান।
মুখোমুখি পরের বলে ভারুন চক্রবর্তিকে ছক্কা মেরে গড়েন আরেক কীর্তি। এই টুর্নামেন্টে টানা ছয় বলে ছক্কা মারা প্রথম ক্রিকেটার তিনিই।
শেষ
পাঁচ ওভারে রাজস্থানের দরকার ছিল ৫২ রান। কিন্তু হার্শিত রানার পরপর দুই
ওভারে হেটমায়ার (২৩ বলে ২৯) ও পারাগের বিদায়ে লড়াই থেকে দূরে সরে যায় তারা।
দুবে শেষ ওভারে আশা জাগালেও দলের আরেকটি হার এড়াতে পারলেন না।
চলতি
আসরে একবার সুপার ওভারে, একবার ২ রানে, এবার ১ রানে হেরে গেল রাজস্থান। সব
মিলিয়ে ১২ ম্যাচের ৯টিতে হারল তারা। তাদের প্লে অফে যাওয়ার আশা শেষ হয়ে
গেছে আগেই।
এই জয়ে প্লে অফে যাওয়ার লড়াইয়ে ভালোমতোই রইল কলকাতা। ১১ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে আছে আজিঙ্কা রাহানের দল।