কুমিল্লার
লালমাই উপজেলার হলুদিয়া উসমানিয়া মহিলা আলিম মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ
আবু তাহের মো: নুরুল ইসলাম এর এমপিও (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) স্থগিত
করেছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর।
গত ফেব্রুয়ারী মাসের ২৫ তারিখ মাদ্রাসা
শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জ্যেষ্ঠতা অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দারিত্ব
হস্তান্তরের নির্দেশনা প্রদান করা হলেও তিনি অধ্যাবধি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ
দায়িত্ব হস্তান্তর করেননি যা যথাযথ দায়িত্ব পালনে অবজ্ঞা ও উধাতন
কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করায় শামিল বলে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী
পরিচালক (অর্থ) স্বাক্ষরিত একটি নোটিশ প্রদান করা হয়।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের জ্যেষ্ঠতার বিষয় নিয়ে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাতা , দাতা সদস্য ও অভিভাবক সদস্যদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
এবিষয়ে
কথা বলতে গিয়ে দাতা সদস্য মো: জয়নাল মাষ্টার বলেন মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠা কাল
১৯৮৪ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানের সুখে দুঃখে রয়েছি। প্রতিষ্ঠাতা মরহুম এবিএম
সিদ্দিকুর রহমান তিনি জেলা শিক্ষা অফিসার ছিলেন এই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা
করেছেন। আমার বাড়ির সামনে মাদ্রাসা এর মান সম্মান আমাদের সকলের সাথে জড়িত।
২০২১ সালে সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা আবুল কাশেম অবসরে যাবেন। মাদ্রাসার তখন
সভাপতি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মালেক। সে মোতাবেক নতুন অধ্যক্ষ
নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। ওই সময় অধ্যক্ষ নিয়োগ না দিতে পেরে আমরা
যথাযথ নিয়ম মেনে ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২১ সালে শিক্ষক, পরিচালনা কমিটির সভাপতি
সহ সকলের সম্মতিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনোনীত করা হয় । চাকুরীতে যোগদানের
জ্যেষ্ঠতায় বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আরবি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবু
তাহের মো : নুরুল ইসলাম আর এমপিওতে জ্যেষ্ঠ, অধিদপ্তরে অভিযোগকারী আরবি
বিভাগের আরেক সহযোগী অধ্যাপক মো: আলমগীর হোসেন। এছাড়া সহযোগী অধ্যাপক
আলমগীর ওই সময় সহকারী অধ্যক্ষ হওয়ার আবেদন করেছেন এবং যেহেতু মহিলা
মাদ্রাসা সেজন্য অভিভাবকদের পক্ষ থেকে এর বিরুদ্ধে আপত্তিকর অভিযোগ থাকায়
তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগের সময় অভিযোগ না করে
কয়েকবছর পর অভিযোগ করা উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে জানান।
অভিভাবক সদস্য জামাল উদ্দিন বলেন শুনেছি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বেতন বন্ধ হয়ে আছে। সভাপতির সাথে কথা বলে আমরা সমাধানের চেষ্টা করবো।
অধিদপ্তরে
অভিযোগকারী আরবি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো: আলমগীর হোসেন বলেন আমার
বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা ভিত্তিহীন। অধিদপ্তর থেকে চিঠি দিয়েছে
দায়িত্ব হস্তান্তরের জন্য কিন্তু ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও মাদ্রাসা পরিচালনা
কমিটি তা বাস্তবায়ন করছে না।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু তাহের মো : নুরুল
ইসলাম বলেন, যথাযথ নিয়ম মেনে আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া
হয়েছে। একজন শিক্ষক হয়ে কিভাবে অন্য শিক্ষকের বেতন বন্ধের আবেদন করে তা
বোধগম্য নয়। কয়েক মাস বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। দায়িত্ব
হস্তান্তরের কথা বলা হয়েছে আমি কার কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবো ওই সময়
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় দায়িত্ব নিতে পারবেন না বলে জানান। বর্তমানে
এডহক কমিটি হয়েছে, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর সহ তারা যে সিদ্ধান্ত নিবে
সেভাবে কাজ করবো।
মাদ্রাসা পরিচালনায় এডহক কমিটির সভাপতি মো: মাসুদুর
রহমান সিদ্দিকী বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সাথে আলোচনা করে সমস্যার
সমাধান করা হবে।
লালমাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদুল্লাহ
বলেন জ্যেষ্ঠতা নিয়ে যে অভিযোগ তা নিরসনে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটিকে এগিয়ে
আসতে হবে। তারা চাইলে সমাধান খুব সহজে হবে।