৯০
মিনিট শেষে যোগ করা দুই মিনিটও তখন প্রায় শেষ। আক্রমণে ইন্টার মায়ামি।
ধারাভাষ্যকার বলছিলেন, “ম্যাচের শেষ মুহূর্তৃ।” বক্সের বাঁ পাশ থেকে
প্রতিপক্ষের তিনজনের মাঝ দিয়ে বল বাড়িয়ে দিলেন সান্তিয়াগো মোরালেস। চকিতে
বক্সে ঢুকে পাশে থাক ডিফেন্ডার আর আগুয়ান গোলকিপারকে ফাঁকি দিয়ে আলতো টোকায়
বল জালে পাঠালেন লিওনেল মেসি। গ্যালারি থেকে ভেসে এলো তুমুল উল্লাস। কে
বলবে, ঘরের দল গোল হজম করল!
জ্যামাইকায় এটিই মেসির প্রথম ফুটবল সফর।
কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স কাপে ক্যাভালিয়ার এফসির সঙ্গে ইন্টার মায়ামির লড়াই।
এমনিতে নিজেদের ম্যাচগুলি তিন হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতার মাঠে খেলে থাকে
ক্যাভালিয়ার। কিন্তু মেসির জন্যই এই ম্যাচ সরিয়ে নেওয়া হয় জাতীয় স্টেডিয়াম
কিংস্টনের ইন্ডিপেন্ডেন্টস পার্কে।
লম্বা সময় পর্যন্ত সেই দর্শকদের
উৎকণ্ঠায় থাকতে হয় মেসিকে ডাগআউটে বসে থাকতে দেখে। শেষ পর্যন্ত
দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামানো হয় আটবারের ব্যালন দ’র জয়ীকে। তিন ম্যাচ পর মাঠে
নেমে গোলের দেখাও পেয়ে যান তিনি।
মায়ামির জয় নিয়ে এমনিতে সংশয় খুব একটা
ছিল না। মেসির গোল তাতে বাড়তি রঙের ছোঁয়া দিয়েছে। চ্যাম্পিয়ন্স কাপের শেষ
ষোলো সিরিজের দ্বিতীয় লেগে ক্যাভালিয়ার এফসিকে ২-০ গোলে হারিয়ে শেষ আটে
পৌঁছে গেছে মায়ামি।
বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকালে শেষ হওয়া ম্যাচে ৩৭তম
মিনিটে লুইস সুয়ারেসের পেনাল্টি গোলে এগিয়ে যায় মায়ামি। তার বদলি নেমেই
ম্যাচের শেষ সময়ে গোল করেন মেসি।
ওই প্রথম লেগসহ মায়ামির টানা তিনটি
ম্যাচে ছিলেন না মেসি। চোট নাকি বিশ্রাম, এসব নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল শুরুতে।
পরে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অবসাদজনিত কারণে মেডিকেল টিমের পরামর্শেই
তাকে খেলানো হচ্ছে না।
এই ম্যাচের জন্য জ্যামাইকা সফরের স্কোয়াডে মেসিকে
রাখা হয়। তাতে উন্মাদনা শুরু হয় সেখানে। ম্যাচবড় মাঠে সরিয়ে নেওয়া হয়।
মায়ামি দলকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান জ্যামাইকার সংস্কৃতি, লিঙ্গ, বিনোদন ও
ক্রীড়া বিষয়ক মন্ত্রী।
গত বুধবার মেসিকে স্কোয়াডে রাখার খবর জানান কোচ
হাভিয়ের মাসচেরানো। তবে মাঠে নামানোর নিশ্চয়তা তিনি দেননি। অবশেষে ম্যাচের
৫৩তম মিনিটে তাকে নামানো হয়।
জয়ের পর মায়ামির কোচ বললেন, উপযুক্ত সময়ের অপেক্ষায় ছিলেন তারা।
“আমরা
জানতাম, লিও তিন-চার ম্যাচ ধরে খেলছে না। অবশ্যই আমরা তাকে খেলাতে
চাচ্ছিলাম। তবে এটা আমাদের বোঝা ও খোঁজার দরকার ছিল, তাকে মাঠে নামানোর
সময় কোনটি।”
“আমার মনে হয়, যা হয়েছে, ভালোই হয়েছে। সে মাঠে ভালো অনুভব
করেছে। গোল করেছে। জ্যামাইকার মানুষ তাকে দেখতে পেয়েছে। সবারই জন্যই দারুণ
এক রাত।”
চ্যাম্পিয়ন্স কাপের শেষ আটে মেসিদের প্রতিপক্ষ লস অ্যাঞ্জেলস এফসি।