সরকারি
তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে ঢাকার
মহাখালীতে রেলপথ অবরোধ করে রাখার ছয় ঘণ্টা পর রাজধানী থেকে ট্রেন চলাচল
শুরু হয়েছে। ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক শাহাদাত হোসেন সোমবার রাত
পৌনে ১০টার দিকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ছাত্ররা রাতে অবরোধ
তুলে নেওয়ার পর আমরা ট্রেন চালানো শুরু করেছি।
“প্রথমে তেজগাঁও স্টেশনে
আটকে থাকা উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছেড়ে যাবে। আর আমাদের এখান থেকে প্রথমে
যাবে রাজশাহীগামী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস। আমরা সিগন্যাল দিয়েছি, ট্রেনটি
ছাড়তে হয়ত ১০ মিনিট সময় লাগবে।”
স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে
মহাখালীতে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের রেলপথ অবরোধে টঙ্গী জংশন হয়ে সারা
দেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
কমলাপুরসহ বিভিন্ন স্টেশনে বেশ
কয়েকটি ট্রেন আটকে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। নির্ধারিত ট্রেনে
যাত্রা করতে দুপুরের পর থেকেই কমলাপুরে আসেন যাত্রীরা।
ট্রেন না ছাড়ায় ক্ষুব্ধ যাত্রীরা স্টেশন ম্যানেজার শাহাদাত হোসেনকে সন্ধ্যার পর অবরুদ্ধ করে রাখেন যাত্রীরা।
সে সময় শাহাদাত হোসেন বলেন, আটকেপড়া যাত্রীরা ট্রেন ছাড়ার জন্য তাকে চাপ দিচ্ছেন।
“মহাখালীতে
রেললাইন অবরোধ করার পর রাত সোয়া ৯টা পর্যন্ত কমলাপুর থেকে ১৬টা ট্রেন যেতে
পারেনি। অনেক যাত্রী স্টেশনে আটকা পড়েন। তারা আমাদের কাছে জানতে চাইছেন
কখন ট্রেন ছাড়বে। বিষয়টি নিয়ে আমরা খুব ঝামেলায় আছি।”
এর আগে রাত ৯টা ৩৬ মিনিটে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একগুচ্ছ ‘আশ্বাসে’ কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা।
মহাখালী
রেলক্রসিংয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘তিতুমীর ঐক্যের’ নেতা ও
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম বলেন, “আমরা অনশন প্রত্যাহার করছি।”
সেখানে
আন্দোলনরত আরেক শিক্ষার্থী নায়েক নূর বলেন, “আমরা আন্দোলন ৭ দিনের জন্য
স্থগিত করছি। মন্ত্রণালয় যেসব আশ্বাস দিয়েছে তা বাস্তবায়নে কার্যকর অগ্রগতি
না দেখলে আগামী সপ্তাহে আমরা আবার আন্দোলনে নামব।”
পরে অনশনরত
শিক্ষার্থীদের জুস খাইয়ে অনশন ভাঙান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব
নুরুজ্জামান ও কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শিপ্রা রাণী মণ্ডল।
গত ২৬
জানুয়ারি রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায়
দফায় সংঘর্ষ হয়। পরদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে সাত কলেজকে মুক্ত করার ঘোষণা দেন।
এই
সাত কলেজ নিয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কথা ভাবছে সরকার। তবে তিতুমীর
কলেজের শিক্ষার্থীরা চাইছেন, তাদের প্রতিষ্ঠানটিকে স্বতন্ত্র
বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ দেওয়া হোক।
ওই দাবিসহ সাত দাবিতে মঙ্গলবার থেকে
ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে শাটডাউন কর্মসূচি পালন করছিলেন তিতুমীরের
শিক্ষার্থীরা। পরদিন বিকাল থেকে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয়
স্বীকৃতির দাবিতে আমরণ অনশন’ লেখা ব্যানার টাঙিয়ে কলেজের মূল ফটকের সামনে
অনশন শুরু করেন তাদের কয়েকজন।
আর বৃহস্পতিবার থেকে বিরতি দিয়ে চলছিল সড়ক অবরোধ কর্মসূচি, যাকে তারা বলছেন, ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি’।
আন্দোলনকারীদের
প্ল্যাটফর্ম ‘তিতুমীর ঐক্যর’ সাত দফার মধ্যে রয়েছে, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি
দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ;
‘বিশ্ববিদ্যালয়’প্রশাসন গঠন করে ২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা এবং
শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা কিংবা শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন
করা।