স্বপ্নের
মতো এক শুরু ছিল রংপুর রাইডার্সের। টানা ৮ ম্যাচ জিতে সবার আগে প্লে অফ
নিশ্চিত করেছিল তারা। এমন শুরুর পর শেষের বাস্তবতা হয়তো কল্পনাও করেনি
রাইডার্সরা! গ্রুপ পর্বের শেষ চার ম্যাচে টানা হারে এলিমিনেটরে জায়গা হয়
তাদের। এলিমিনেটরে 'ডু অর ডাই' ম্যাচ হওয়ায় মাঠে নামার আগে স্কোয়াডের শক্তি
বাড়ায় রংপুর। নতুন করে তিন বিদেশি তারকাকে উড়িয়ে আনা হয়। আন্দ্রে
রাসেল-টিম ডেভিডদের অন্তর্ভুক্তিতে ফেভারিট তকমা নিয়েই আজ মাঠে নেমেছিল
রাইডার্সরা। তবে মাঠের পারফরম্যান্সে সেটার কোনো ছাপই রাখতে পারল না তারা।
খুলনা
টাইগার্সের স্পিন জালে ফেসে চোখে সর্ষে ফুল দেখেছেন রংপুরের ব্যাটাররা।
নাসুম আহমেদ-মেহেদি হাসান মিরাজদের ঘূর্ণিতে রীতিমতো ছেড়ে দে মা কেঁদে
বাঁচি অবস্থা রাইডার্সদের! প্রথম সারির পাঁচ ব্যাটারের কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে
পারেননি। এমনকি পুরো ইনিংসে মাত্র দুই ব্যাটার তা করতে পেরেছেন। ব্যাটিং
ব্যর্থতায় এলিমিনেটরেই থামতে হলো এক সময়ের টেবিল টপারদের। ৯ উইকেটের জয়ে
কোয়ালিফায়ারে ওঠল খুলনা।
৮৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই মিরাজকে হারায়
খুলনা। ইনফর্ম এই ব্যাটারের ব্যর্থতার পরও জয় পেতে খুলনাকে খুব বেশি বেগ
পেতে হয়নি। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে অ্যালেক্স রসকে সঙ্গে নিয়ে বাকি পথটা
দাপটের সঙ্গেই পাড়ি দিয়েছেন নাঈম শেখ।
শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং
করেছেন নাঈম। অবিচ্ছিন্ন ৮৭ রানের জুটিতে নাঈমের ব্যাট থেকে এসেছে ৩৩ বলে
অপরাজিত ৪৮ রান। আর রস অপরাজিত ছিলেন ২৭ বলে ২৯ রান করে।
এর আগে টস জিতে
শুরুতে ব্যাটিং বেছে নিয়েছিলেন রংপুর অধিনায়ক নুরুল হাসান। ব্যাট করতে
নেমে মহাবিপদে পড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে সিঙ্গেল নিতে গিয়ে
জেমস ভিন্সের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউটের ফাঁদে পড়েন সৌম্য। পরের
ওভারে নাসুমের শিকার হয়ে ফিরেছেন ভিন্স। ৭ বলে মোটে ১ রান করতে পেরেছেন এই
ব্যাটার।
পরপর দুই ওপেনারের বিদায়ের পর হাল ধরতে পারেননি সাইফ হাসান ও
শেখ মেহেদীরা। নাসুম আহমেদের দারুণ এক ডেলিভারিতে স্ট্যাম্প উপড়ে গেছে
মেহেদীর। পরের ওভারে খুলনা কাপ্তান মেহেদী হাসান মিরাজের বলে মোহাম্মদ
নেওয়াজের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন সাইফও। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে
এসেছে ১০ বলে ৪ রান।
আজ ব্যাটিংয়ে কিছুটা ওপরের দিকে খেলার সুযোগ
পেয়েছিলেন সাইফউদ্দিন। কিন্তু সুযোগটা কাজে লাগাতে পারলেন না তিনিও। হাসান
মাহমুদের বলে এলবিডব্লিউ হয়েছেন। রিভিউ নিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। এক চারের
মারে ৮ বলে ৮ রানে থেমেছে তার লড়াই। টপ-অর্ডারের ৫ ব্যাটারকে হারিয়ে
ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে যায় রংপুর।
অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান দলকে টেনে
তোলার চেষ্টায় ছিলেন। মিরাজের বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে
এসেছে ২৫ বলে ২৩ রান। প্লে-অফের জন্য উড়িয়ে আনা হয়েছিল ক্যারিবীয় ব্যাটিং
দানব আন্দ্রে রাসেলকে। সেই সঙ্গে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার মারকুটে ব্যাটার টিম
ডেভিড। দুজনই ব্যর্থ হয়েছেন। ডেভিড করেছেন ৯ বলে ৭ রান। রাসেল ৯ বলে ৪ রান
করেন।
শেষ দিকে লড়াই চালিয়েছেন আকিফ জাভেদ। ১৮ বলে ৩২ রানের ঝলমলে ইনিংস
খেলে দলের রানটাকে ৮৫ পর্যন্ত টেনে নেন আকিফ। খুলনার হয়ে ৩টি করে উইকেট
নিয়েছেন নাসুম আহমেদ এবং মেহেদী হাসান মিরাজ। ১টি করে উইকেট শিকার করেন
হাসান মাহমুদ, মোহাম্মদ নওয়াজ এবং মুশফিক হাসান।