শিক্ষার
ক্ষেত্রে নারী শিক্ষার অন্যতম পীঠস্থান, কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার
ঐতিহ্যবাহী রামচন্দ্রপুর আকাব্বরের নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২৩ সালের
ব্যাচের দুই অদম্য ও পরিশ্রমী মেধাবী শিক্ষার্থী চলতি শিক্ষাবর্ষে
(২০২৫-২৬) দেশের দুটি শীর্ষস্থানীয় মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির
সুযোগ পেয়ে এক অনন্য কীর্তি স্থাপন করেছেন। এই গৌরবময় সাফল্যে বিদ্যালয়
পরিবার, শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবক মহল এবং পুরো মুরাদনগর উপজেলার জনপদে
আনন্দের বন্যা বয়ে গেছে।
বিদ্যালয়ের এই দুই কৃতী শিক্ষার্থী হলেন,
সামিহা মেহেরিন ও নুসরাত জাহান নিপা। বিদ্যালয়ের অন্যতম কৃতী ছাত্রী সামিহা
মেহেরিন তাঁর মেধা ও কঠোর অধ্যবসায়ের ফলস্বরূপ দেশের অন্যতম প্রাচীন ও
স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির
সুযোগ লাভ করেছেন। সে হোমনা উপজেলার চান্দেরচর ইউনিয়নের শোভারামপুর গ্রামের
মেয়ে। তাঁর বাবা শরিফ উদ্দিন আহমেদ বাঞ্ছারামপুর সরকারি কলেজের রসায়ন
বিভাগের প্রভাষক এবং মা সাবিনা খানম গৃহিণী। শিক্ষকের মেয়ে হিসেবে সামিহা
মেহেরিন বাল্যকাল থেকেই শিক্ষার প্রতি গভীর আগ্রহ ও নিষ্ঠা দেখিয়েছেন এবং
নিজের লক্ষ্য পূরণে সফল হয়েছেন। তিনি তাঁর বাবা-মায়ের প্রথম সন্তান।
অন্যদিকে,
আরেক মেধাবী ছাত্রী নুসরাত জাহান নিপা তাঁর মেধার স্বাক্ষর রেখে গোপালগঞ্জ
মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। নিপা উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ
ইউনিয়নের কৈজুরী গ্রামের মেয়ে। তাঁর বাবা হারুনুর রশিদ কুয়েত প্রবাসী এবং
মা নুরজাহান বেগম গৃহিণী। বিদেশ থেকে বাবার পাঠানো অর্থ ও মায়ের
অনুপ্রেরণায় নিপা প্রতিকূলতা জয় করে তাঁর কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম
হয়েছেন। নিপা তাঁর বাবা-মায়ের দ্বিতীয় সন্তান।
তাদের সম্পর্কে
বিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক বিল্লাল হোসেন
বলেন, সামিহা মেহেরিন পড়াশোনার পাশাপাশি মিষ্টি কন্ঠে রবীন্দ্র সঙ্গীতের
চর্চাসহ প্রতিটি জাতীয় দিবস ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। নুসরাত জাহান
নিপা ক্লাশে কখনো প্রথম ছাড়া দ্বিতীয় হয়নি।
এই দুই শিক্ষার্থীর অভাবনীয়
সাফল্যে রামচন্দ্রপুর আকাব্বরের নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সকল
শিক্ষক-শিক্ষিকা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান
শিক্ষক মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন এক বিবৃতিতে তাঁদের আন্তরিক অভিনন্দন জ্ঞাপন
করেছে। তাঁরা এই দুই শিক্ষার্থীকে কঠোর অধ্যবসায় ও শিক্ষার প্রতি তাঁদের
অবিচল নিষ্ঠার জন্য সাধুবাদ জানায়।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সাবেক
সভাপতি ডাঃ আবদুল্লাহ আল মামুন দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে বলেন, সামিহা
মেহেরিন এবং নুসরাত জাহান নিপা ডাক্তার হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করে
ভবিষ্যতে মানব সেবায় ব্রতী হবেন এবং দেশ ও সমাজের কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ও
অপরিসীম ভূমিকা রেখে বিদ্যালয়ের সুনাম অক্ষুন্ন রাখবেন। তাঁদের এই সাফল্য
উপজেলার অন্যান্য শিক্ষার্থীদের জন্যও এক উজ্জ্বল অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
