
ঘরের মাঠে এমন লজ্জা! দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হোয়াইটওয়াশ তো হলোই, নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে বড় হারের রেকর্ডও গড়লো ভারত।
আজ
(বুধবার) গুয়াহাটিতে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে
৪০৮ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে ভারত। রানের হিসেবে এটিই টেস্টে ভারতের
সবচেয়ে বড় পরাজয়।
এর আগে সবচেয়ে বড় হারটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে,
সেটিও ঘরের মাঠে। ২০০৪ সালের অক্টোবরে নাগপুরে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৩৪২ রানে
হেরেছিল ভারত।
তৃতীয় স্থানে আছে ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে করাচিতে
পাকিস্তানের বিপক্ষে নাকাল হওয়া ম্যাচটি। ওই টেস্টে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের
কাছে ৩৪১ রানে হেরেছিল ভারত।
পরের দুইটি বড় হার অস্ট্রেলিয়ার কাছে। ২০০৭
সালের ডিসেম্বরে মেলবোর্নে ৩৩৭ এবং ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুনেতে
অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৩৩৩ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছিল ভারত।
অর্থাৎ রানের হিসেবে ভারতের সবচেয়ে বড় পাঁচ হারের তিনটিই ঘরের মাঠে। পুনে, নাগপুরের পর এবার গুয়াহাটিতে এমন লজ্জায় পড়লো ভারত।
যারা
মাঝে এক যুগ ধরে ঘরের মাঠে কোনো টেস্ট সিরিজ হারেনি, সেই ভারত গত ১২ মাসে
হোয়াইটওয়াশড হয়েছে দুটি সিরিজে। দুটি ব্যর্থতাই গৌতাম গাম্ভিরের কোচিংয়ে
হওয়ায়, তার সামর্থ্য নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। যে আলোচনা
স্বাভাবিকভাবেই ভালো লাগছে না ভারতের প্রধান কোচের। তাই তার সময়ের
সাফল্যগুলোর কথাও মনে করিয়ে দিলেন দেশটির সাবেক ব্যাটসম্যান।
২০২৪ সালের
জুলাইয়ে সাড়ে তিন বছরের চুক্তিতে ভারতের দায়িত্ব নেন গাম্ভির। এরপর সাফল্য
যেমন ধরা দিয়েছে তার হাতে, ব্যর্থতার তেতো স্বাদও তিনি পেয়েছেন।
গত
বছরের নভেম্বরে ঘরের মাঠে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন টেস্টের সিরিজে
হোয়াইটওয়াশড হয় ভারত। দেশের মাঠে তিন বা এর বেশি ম্যাচের টেস্ট সিরিজে
প্রথমবার এই অভিজ্ঞতা হয় তাদের।
বছর ঘুরতেই এবার নিজ আঙিনায় ভারত
হোয়াইটওয়াশড হলো দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। কলকাতায় স্পিন সহায়ক উইকেট
বানিয়ে প্রথম টেস্টে তারা হারে ৩০ রানে। বুধবার গুয়াহাটিতে তাদের হার ৪০৮
রানে। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে রানের হিসেবে যা তাদের সবচেয়ে বড় পরাজয়।
ভারতের
প্রধান কোচের দায়িত্বের জন্য গাম্ভির উপযুক্ত কি-না, বিশেষ করে টেস্ট
ক্রিকেটে, তা নিয়ে চলছে চর্চা। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে হারের
পর তার সংবাদ সম্মেলনে সেই প্রসঙ্গ উঠলে, বোর্ডের কোর্টে বল ঠেলে দেন সাবেক
ওপেনার।
“এটা বিসিসিআইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়। প্রধান কোচ হিসেবে
দায়িত্ব নেওয়ার পর আমার প্রথম সংবাদ সম্মেলনে এটা বলেছিলাম। ভারতীয় ক্রিকেট
গুরুত্বপূর্ণ, আমি গুরুত্বপূর্ণ নই। আর এখানে বসে ঠিক একই কথা বলছি।”
গাম্ভিরের
কোচিংয়েই রোহিত শার্মা, বিরাট কোহলিকে ছাড়া ইংল্যান্ডে গিয়ে পাঁচ ম্যাচের
টেস্ট সিরিজ ড্র (২-২) করে ফিরেছে ভারত। এছাড়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও এশিয়া
কাপের শিরোপা জিতেছে তারা।
সেই সাফল্যের কথা মনে করিয়ে দিয়ে গাম্ভির বললেন, ভারতের তরুণ এক দলকে গুছিয়ে উঠতে সময় দিতে হবে।
“আমি
সেই একই ব্যক্তি যার কোচিংয়ে একটি তরুণ দল নিয়ে ইংল্যান্ডেও ভালো ফলাফল
পেয়েছিল ভারত। আর আমি নিশ্চিত আপনারা খুব শিগগিরই ভুলে যাবেন, কারণ অনেকে
এখনও নিউ জিল্যান্ড সিরিজ নিয়েই কথা বলছে। আমি সেই একই ব্যক্তি যার
দায়িত্বে আমরা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এবং এশিয়া কাপ জিতেছি।”
“হ্যাঁ, এই দলটির অভিজ্ঞতা কম। তাদের শেখা চালিয়ে যেতে হবে এবং তারা পরিস্থিতি বদলের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে।”
