দুদকের দায়ের করা অর্থ আত্মসাৎ এর মামলায় বেকসুর খালাস পেয়েছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি’র মহাসচিব সাবেক প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. রেদোয়ান আহমেদ। একই সাথে ৫০ লাখ টাকা জরিমানার রায়ও বাতিল করা হয়। ড. রেদোয়ান আহমেদ কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) সংসদীয় আসন থেকে ৪ বার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিএনপি ক্ষমতামলে তিনি দুইবার প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক খসরুজ্জামান এর একক ব্যঞ্চ বেকসুর খালাস এর ওই রায় প্রদান করেন। ওই মামলার অপর আসামী মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের তৎকালীন মহাসচিব শাহ আলম চৌধুরীকে আগেই খালাস দেয়া হয়েছিলো।
এর আগে ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ-২ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান এর আদালত বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেদোয়ান আহমেদের ৩ বছরের কারাদন্ডের রায় দিয়েছিলো। একই সঙ্গে তাঁকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানার রায় প্রদান করা হয়।
এব্যাপারে এলডিপি’র কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা অধ্যক্ষ আবুল কাশেম বলেন- ২০২৩ সালের ওই রায় স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পরিকল্পিত ও পূর্ব নির্ধারিত ডিজাইনের অংশ ছিলো। মামলাটি ছিলো সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আমরা মামলা দায়েরের পর থেকেই বলে এসেছি এটি মিথ্যা মামলা।
২০২৩ সালে রায় ঘোষণার পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ওই রায়কে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক বলে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছিলেন। এছাড়াও ওই সময় এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ মামলাটিকে অসত্য ও রাজনৈতিক দলের জনপ্রিয় নেতাকর্মীদের জনগণের নিকট থেকে দূরে রাখার পরিকল্পিত ছকের অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।
১/১১ পরবর্তী সময়ে ফখরুদ্দীন-মঈনুদ্দিন সরকার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের অংশ হিসেবে ২০০৭ সালে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে রাজধানীর রমনা থানায় রেদোয়ান আহমেদসহ তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। মামলার অপর দুই আসামি হলেন- মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের তৎকালীন চেয়ারম্যান কবির আহমেদ ও মহাসচিব শাহ আলম চৌধুরী। পরে ২০২০ সালের ২০ আগস্ট রেদোয়ান ও শাহ আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত।
এব্যাপারে ড. রেদোয়ান আহমেদ এর আইনজীবী এস.এম শাহজাহান বলেন, দুদক তার এখতিয়ার বহির্ভূত ভাবে ওই মামলাটি দায়ের করেছিলো। অর্থ আত্মসাৎ এর বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ফলে মামলাটি ছিলো পরিপূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক।
এব্যাপারে ড. রেদোয়ান আহমেদ বলেন- এক-এগারোর সরকার সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করেছিলো। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে প্রভাব খাটিয়ে তাদের নেতাকর্মীদের সকল মামলা প্রত্যাহার করে। কিন্তু বিরোধী পক্ষকে দমন পীড়নের হাতিয়ার হিসেবে আমাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলাগুলো বহাল রেখে রেখেছিলো।
