
কুমিল্লা
নগরের যানজট নিরসনে প্রশাসনকে ৭২ ঘণ্টা আলটিমেটাম দেয়া হয়েছে। ‘যানজট
মুক্ত নগর চাই’ ব্যানারে সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকালে কুমিল্লা নগরীর পূবালী
চত্বরে মানববন্ধন থেকে এই আলটিমেটাম দেয়া হয়। যানজট নিরসনে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে
কোন সাদৃশ্য পদক্ষেপ না দেখা গেলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক দপ্তর গুলোতে তালা
লাগিয়ে দেয়া হবে বলে মানববন্ধনে অংশ নেয়া বক্তারা হুশিয়ারি দেন।
মানববন্ধন
ও সমাবেশ শেষে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো.
শাহ আলমের কাছে ১০ দফা দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি জমা দেন।
মানববন্ধন
থেকে কুমিল্লাবাসীর পক্ষে ১০ দফা দাবি উপস্থাপন করেন কুমিল্লা মহানগর জাতীয়
নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর যুগ্ম সমন্বয়কারী ও ‘যানজট মুক্ত নগর চাই’-এর
সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ রাশেদুল হাসান। তিনি বলেন, সড়ক ব্যবস্থাপনা,
পরিবহন নিয়ন্ত্রণ ও প্রশাসনিক তদারকির ঘাটতির কারণে কুমিল্লা শহরের যানজট
এখন নাগরিক দুর্ভোগের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন মানুষ ঘণ্টার
পর ঘণ্টা আটকে থেকে ভোগান্তিতে পড়ছে। আমরা কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন, জেলা
প্রশাসন ও ট্রাফিক বিভাগকে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিচ্ছি। যদি এর মধ্যে আশু
কোন সমাধান না দেখা যায় তাহলে আমরা দপ্তরে দপ্তরে তালা লাগিয়ে দিব।
মানববন্ধনে
জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোজাহিদ
চৌধুরী বলেন, এই ১০ দফা দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে কুমিল্লার যানজট আরও ভয়াবহ
রূপ নেবে, যা নাগরিক জীবনে অচলাবস্থা সৃষ্টি করবে।
সভাপতির বক্তব্যে
জেলা এবি পার্টির আহ্বায়ক ও যানজট মুক্ত নগর চাই-এর সদস্য মিয়া মো. তৌফিক
বলেন, আমরা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে
দাবিগুলোর বাস্তবায়নে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে; অন্যথায় গণআন্দোলনের
কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন কুমিল্লা মহানগর এবি
পার্টির সদস্য সচিব গোলাম মো. সামদানী, সদস্য সাজিদুল ইসলাম রাফি, আবু
নাঈম, আব্দুল হান্নান ও মো. জাবের হোসেন প্রমুখ।
কুমিল্লা শহরের যানজট
নিরসনে ১০ দফা দাবি গুলো হলো: কুমিল্লা শহরে সীমিত সংখ্যক অটো ও মিশুক চলবে
এবং চালকদের জন্য নির্দিষ্ট ড্রেস ও আইডি কার্ড বাধ্যতামূলক করতে হবে।
প্রতিটি রোডের ভাড়া প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারণ করে চার্ট আকারে প্রকাশ করতে হবে।
শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা বাড়াতে হবে; প্রয়োজনে ট্রাফিক সহায়ক নিয়োগ দিতে হবে।
অবৈধ পার্কিং ও ফুটপাত দখল অপসারণে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে।
কুমিল্লা
সিটি কর্পোরেশনের ভোটার ব্যতীত কেউ অটো বা মিশুকের মালিক হতে পারবে না;
একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ একটি অটো বা মিশুকের মালিক হতে পারবেন।
নির্ধারিত স্থানে অটো ও মিশুক থামিয়ে যাত্রী উঠা-নামা নিশ্চিত করতে হবে এবং চালকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
চিহ্নিত ড্রেস পরিহিত চালকদের অযথা হয়রানি করা যাবে না।
চুরি ও ছিনতাই প্রতিরোধে পুলিশের টহল টিম বাড়াতে হবে।
শহরের বেহাল সড়কগুলো দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা নিতে হবে।
দাবিগুলো
বাস্তবায়নে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বা সমপর্যায়ের কর্মকর্তাকে প্রধান করে
একটি টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে, যা নাগরিক সেবা উন্নয়ন ও যানজট নিরসনে
সময়সীমাবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে।
