তানভীর দিপু:
ব্যাপক
দুর্নীতি এবং অনিয়মের অভিযোগে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালের
পরিচালক মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজের প্রসারণ দাবিতে হাসপাতালের সামনে
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে নিপীড়িত নাগরিক সমাজ। এছাড়া
কুমিল্লার ছাত্র জনতা ও সচেতন এলাকাবাসীর ব্যানারেও পরিচালক এবং তার প্রধান
সহকারী দেলোয়ার ও ড্যাব মহানগরের সভাপতি এমএম হাসানেরঅপসারণ দাবি করেন
তারা। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টা থেকে ১২টা পর্যন্ত কুমিল্লা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে ঘন্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালন
করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, সম্প্রতি কুমিলা মেডিকেল
কলেজ হাসপাতালের ঔষধ কেনাকাটায় কোটি-কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিচালক মাসুদ পারভেজসহ বেশ কয়েকজন
চিকিৎসক নেতার বিরুদ্ধে। একই সাথে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হয়েছেন পরিচালকের
প্রধান সহকারী দেলোয়ার হোসেনও। এছাড়া দীর্ঘদিন হাসপাতালে অনিয়ম ও দালালের
দৌড়াত্মের বিরুদ্ধে বারবার প্রতিবাদ করে আসলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোন
পদক্ষেপ নিতে পারেনি। বরং তাদের বিরুদ্ধে পরপর দুর্নীতির অভিযোগ উঠে
আসছে। তাই কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম জনবান্ধব করার
লক্ষ্যে বর্তমান পরিচালক ও দুর্নীতিগ্রস্ত সকল চিকিৎসক ও
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অপসারণ করা জরুরি।
এ সময় মানববন্ধনে বক্তব্য
রাখেন জাতীয় নাগরিক পার্টি কুমিল্লা মহানগর শাখার যুগ্ম সমন্বয়কারী
মোহাম্মদ রাশেদুল হাসান, এবি পার্টি কুমিল্লা মহানগরের আহবায়ক গোলাম মোঃ
সামদানীসহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অনিয়মের ভুক্তভোগী ও সচেতন এলাকাবাসী।
উল্লেখ্য,
সম্প্রতি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ঔষধ কেনাকাটায় হাসপাতালের
পরিচালকসহ বেশ কয়েকজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ থেকে জানা
গেছে, হাসপাতালে ২০২৪-২০১৫ অর্থবছরের ওষুধপত্র (এমএসআর) গ্রুপে পাঁচ কোটি
টাকার ওষুধপত্র কেনা হয়। চাহিদাপত্রের ৩ নম্বর ক্রমিক অনুযায়ী ইনজেকশন
পেনটোথাল সোডিয়াম এক গ্রাম (পানিসহ) চার হাজার ভায়েল ক্রয় করা হয়েছে। যার
প্রতি ভায়েলের এমআরপি ১০১ টাকা। কিন্তু প্রতি ভায়েল ক্রয় করা হয়েছে ১২৯৯
টাকা দরে। এক আইটেমে সরকারের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৪৭ লাখ ৯২ হাজার টাকা।
এই ওষুধ শুধুমাত্র অ্যানেসথেসিয়া বিভাগে ব্যবহার করা হয়। দরপত্রের শর্ত
অনুযায়ী ওষুধপত্র গ্রুপের প্রতিটি আইটেম এমআরপি এর মধ্যে ক্রয় করার সরকারি
বিধান রয়েছে। ইনঃ পেনটোথাল সোডিয়াম (পানিসহ) ১ গ্রাম ৪০০০ ভায়েল ক্রয় করা
হয়েছে ৫১ লাখ ৯৬ হাজার টাকায়। এক্ষেত্রে প্রতি ইউনিটের মূল্য ধরা হয়েছে
১২৯৯ টাকা। অথচ খুচরা বাজার দরেই এর প্রকৃত মূল্য হলো ১০১ টাকা। অর্থাৎ
মাত্র ৪ লাখ ৪ হাজার টাকার ওষুধ কেনা হয়েছে ৫১ লাখ ৯৬ হাজার টাকায়।
তবে
অভিযোগের প্রেক্ষিতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিচালক মোঃ মাসুদ
পারভেজ জানান, এটি প্রিন্টিং মিসটেক। এর বেশি আর কোনো মন্তব্য করতে চাননি
তিনি।
