বিশেষ প্রতিবেদক:
কুমিল্লার
চান্দিনায় দিন দুপুরে বাড়িতে গিয়ে এক প্রবাসীকে সিআইডি পরিচয় দিয়ে প্রায় ৯
ভরি স্বর্ণালংকার, আইফোন লুটে করে ওই প্রবাসীকে বাড়ি থেকে তুলে নেয়ার ঘটনা
ঘটেছে। পরে প্রবাসীর স্ত্রীকে ফোন করে ২ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে
চক্রটি। এ ঘটনার কয়েক ঘন্টার মধ্যে পৃথক অভিযানে চান্দিনা পৌরসভা শ্রমিকদল
নেতাসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়।
রবিবার (১৩ জুলাই) দুপুর থেকে রাত ১১টা
পর্যন্ত সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে প্রবাসীকে উদ্ধার করার পাশাপাশি
চক্রের ৫ সদস্য আটক করা হয়। রাতেই ৬জনকে আসামী করে চান্দিনা থানায় মামলা
দায়ের করেন ভূক্তভোগী প্রবাসী মো. সোহেল সরকার।
আটককৃতরা হলো- চান্দিনা
উপজেলা সদরের মহারং মুন্সিবাড়ি এলাকার মৃত আজিজ মুন্সির ছেলে সোহেল মুন্সি
(৩৯), সে নিজেকে চান্দিনা পৌরসভা শ্রমিকদল যুগ্ম আহবায়ক ও ১নং ওয়ার্ড
শ্রমিকদল সভাপতি বলে দাবী করেন। অন্যরা হলো- মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান
থানার মালাপদিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফ শেখ এর ছেলে সোহাগ আহমেদ (৩৫),
টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানার হাড়িয়া গ্রামের মো. চাঁন মিয়ার ছেলে মো.
রাসেল মিয়া (২৯), নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার বীর চরমধুয়া গ্রামের মো.
লিয়াকত আলীর ছেলে মো. হানিফ (২৭) ও কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার শ্রীমন্তপুর
গ্রামের মো. ইসমাইল এর ছেলে মো. ফয়সাল (২৭)।
সংঘবদ্ধ এই আন্তঃজেলা ছিনতাইকারী চক্রের কাছ থেকে লুট হওয়া প্রায় ৯ ভরি স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন উদ্ধার করে পুলিশ।
ভূক্তভোগী
প্রবাসী মো. সোহেল সরকার নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার দক্ষিণ বটতলী
গ্রামের মো. জব্বার সরকারের ছেলে। গত ১১ জুলাই রাতে মালয়েশিয়া থেকে
বাংলাদেশে এসে সরাসরি শ^শুরবাড়ি চান্দিনার ছায়কোট গ্রামে আসেন।
তিনি
জানান- রবিবার (১৩ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে ৫-৬জন লোক আমার শ^শুর বাড়িতে
গিয়ে আমাকে খোঁজেন। এসময় তারা নিজেদের সিআইডি পরিচয় দেন। আমি ঘর থেকে বের
হয়ে আসতেই তারা আমাকে ঝাপটে ধরে এবং আমার কাছে অবৈধ মাল আছে বলে জানায়। পরে
তারা আমার শ^শুরের ঘর থেকে আমার বিদেশ থেকে আনা প্রায় ৯ ভরি স্বর্ণাংকার,
১টি আইফোন ও ১টি স্মার্ট ফোনসহ আমাকে বাড়ি থেকে তুলে আনে। তারা আমাকে
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনার কাঠেরপুল এলাকায় এনে ২ লক্ষ টাকা দাবী
করে আমার স্ত্রীকে ফোন দেয়। আমার স্ত্রী চান্দিনা সেনা ক্যাম্পে গিয়ে
বিষয়টি জানালে সেনা বাহিনীর সদস্যরা আমাকে তাদের কবল থেকে উদ্ধার করে এবং
সাথে সাথে সোহেল মুন্সিসহ ২জনকে আটক করে।
চান্দিনা থানার অফিসার
ইন-চার্জ (ওসি) জাবেদ উল ইসলাম জানান- সেনা বাহিনীর সদস্যরা ২জনকে আটক করে
থানায় দিলে আমরা অভিযান চালিয়ে আরও ৩জনকে আটক করি। সোমবার (১৪ জুলাই)
তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠনো হয়েছে।
এদিকে, উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক কাজী আরশাদ জানান- সোহেল মুন্সি শ্রমিকদলের সাথে যুক্ত থাকলেও তার কোন পদ পদবী নেই।