কুমিল্লা প্রতিনিধি।।
দেশব্যাপী
আলোচিত কুমিল্লার মুরাদনগরের কড়ইবাড়িতে দুই সন্তানসহ নারীকে কুপিয়ে ও
পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার আট আসামিকে তিন দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে
পাঠিয়েছেন আদালত। তবে পুলিশ জানিয়েছে, তিন দিনের রিমান্ডে গুরুত্বপূর্ণ
তথ্য দিয়েছে আসামিরা। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মামলাকে এগিয়ে নিতে সহায়ক
ভূমিকা রাখবে। তদন্তের স্বার্থে তা গোপন রাখা হচ্ছে।
রবিবার (১৩ জুলাই)
দুপুর আড়াইটার দিকে কুমিল্লার আমলি আদালত-১১ এর বিচারক মমিনুল হকের আদালতে
আট আসামিকে হাজির করা হলে বিচারক সবাইকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক (এসআই) নয়ন কুমার চক্রবর্তী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আসামিরা
হলেন কড়ইবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া (৫৫), রবিউল আওয়াল (৫৫),
আতিকুর রহমান (৪২), মো. বায়েজ মাস্টার (৪৩), দুলাল (৪৫), আকাশ (২৪), মো.
সবির আহমেদ (৪৮) ও মো. নাজিমউদ্দীন বাবুল (৫৬)।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা
এসআই নয়ন কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘আলোচিত মুরাদনগরের কড়ইবাড়িতে দুই সন্তানসহ
নারীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার আট আসামিকে গত ৭
জুলাই বিকালে ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। ৯ জুলাই বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওই
আবেদনের শুনানি শেষে কুমিল্লার আমলি আদালত-১১ এর বিচারক মমিনুল হক প্রত্যেক
আসামির তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পর দিন বৃহস্পতিবার তাদের
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কারাগার থেকে আমাদের হেফাজতে নেওয়া হয়। আজ রবিবার সকালে
তাদের তিন দিনের রিমান্ড শেষ হলে দুপুর আড়াইটার দিকে তাদের আদালতে উঠানো
হয়। পরে বিচারক মমিনুল হক আসামিদের কুমিল্লা কেন্দ্রীয় করাগারে পাঠানো
নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল্লাহ বলেন, ‘তিন দিনের জিজ্ঞাসাবাদে
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মামলাকে এগিয়ে নিতে
সহায়ক ভূমিকা রাখবে। তবে তদন্তের স্বার্থে তথ্যগুলো বলা যাবে না। এই
মামলায় অভিযুক্ত বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।
গত ৩ জুলাই সকালে উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে ‘মব’ সৃষ্টি করে মা, মেয়ে ও ছেলেসহ একই পরিবারের তিনজনকে হত্যা করা হয়।
নিহত
ব্যক্তিরা হলেন কড়ইবাড়ি গ্রামের খলিলুর রহমানের স্ত্রী রোকসানা বেগম ওরফে
রুবি (৫৩), তার ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে তাসপিয়া আক্তার ওরফে জোনাকি
(২৯)। এ ছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন রোকসানার আরেক মেয়ে রুমা আক্তার (২৭)।
হত্যার
ঘটনায় পর দিন শুক্রবার গভীর রাতে ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ২৫
জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন নিহত রোকসানার বড় মেয়ে রিক্তা আক্তার।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে স্থানীয় আকুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি)
চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহকে। এরই মধ্যে এ মামলায় মোট নয়জনকে গ্রেপ্তার করা
হয়েছে।