সোমবার ২৩ জুন ২০২৫
৯ আষাঢ় ১৪৩২
পাচার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিন
প্রকাশ: রোববার, ২২ জুন, ২০২৫, ১:১৪ এএম |

পাচার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিন
সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (এসএনবি) এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে গত বৃহস্পতিবার। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউরোপের দেশ সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের জমা অর্থের পরিমাণ এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ৩৩ গুণ। ২০২১ সালের পর গত বছরই বাংলাদেশিদের সর্বোচ্চ পরিমাণ অর্থ জমা হয়েছে সুইস ব্যাংকগুলোয়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের ফলে বিগত সরকারের সময়ের সুবিধাভোগীদের একটি বড় অংশ দেশ থেকে পালিয়েছে। এর পর থেকে আওয়ামী লীগ সরকারঘনিষ্ঠদের অর্থ-সম্পদ বাজেয়াপ্ত হতে শুরু হয়। এতে অনেকে এক দেশ থেকে অন্য দেশে অর্থ সরিয়ে থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে বলে ধারণা করছেন অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে জমা হয়। বাংলাদেশের অনেক ব্যাংকেও বৈধ পথে দেশটির ব্যাংকে অর্থ জমা রাখে। আবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিরাও সুইস ব্যাংকে অর্থ জমা রাখেন। এ ছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সুইস ব্যাংকের শাখাগুলোতে সেসব দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিরাও অর্থ জমা রাখেন।
সেগুলোও সুইস ব্যাংকে জমা অর্থ হিসেবে বিবেচিত হয়। সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন দেশ থেকে জমা হওয়া এসব অর্থ সে দেশের দায় হিসেবে আর্থিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করে থাকে। 
এসএনবির বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সাল শেষে সুইস ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের নামে জমা অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৯ কোটি ৪০ লাখ সুইস ফ্রা। প্রতি সুইস ফ্রা ১৫০ টাকা হিসাবে বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৮ হাজার ৯১০ কোটি টাকা। আগের বছর ২০২৩ সাল শেষে এই অর্থের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৮০ লাখ ফ্রা বা ২৭০ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরে বাংলাদেশিদের জমা অর্থের পরিমাণ বেড়েছে ৫৭ কোটি ৬০ লাখ ফ্রা বা প্রায় ৮ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ৩৩ গুণ বেশি। যদিও ২০২৩ সালে এ আমানত ৬৭ শতাংশ কমে গিয়েছিল। অবশ্য এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তখন অর্থ পাচার নিয়ে তীব্র সমালোচনার কারণে এসব অর্থ সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। 
গোপনে অর্থ গচ্ছিত রাখার জন্য খ্যাত সুইজারল্যান্ড। কঠোরভাবে গ্রাহকদের নাম-পরিচয় গোপন রাখে সুইস ব্যাংকগুলো। ফলে সুইস ব্যাংকে অবৈধ আয় ও কর ফাঁকির টাকা জমা রাখা হয় বলে এক বিশ্বাস প্রচলিত আছে। সুইজারল্যান্ডের পক্ষ থেকে বরাবরই বলা হয়েছে, অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তরের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ সরবরাহ করা হলে তারা তথ্য দিয়ে সহায়তা করবে। বর্তমান সরকারও দেশ থেকে যে অর্থ পাচার হয়েছে তা ফেরত আনতে বদ্ধপরিকর। এসএনবির এ পরিসংখ্যানে বাংলাদেশের কোনো নাগরিক অন্য কোনো দেশের নাগরিকত্ব পরিচয় ব্যবহার করে অর্থ জমা রাখলে তা অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
 একইভাবে মূল্যবান শিল্পকর্ম, স্বর্ণ বা দুর্লভ সামগ্রী আমানত হিসেবে রাখলে তার আর্থিক মূল্যও এ হিসাবে দেখানো হয় না। বাংলাদেশ ব্যাংক-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের সঞ্চিত অর্থের সবই পাচারকৃত, তা বলা যাবে না। কারণ সুইজারল্যান্ড, ইউরোপসহ অন্যান্য দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিরাও বৈধভাবে দেশটিতে অর্থ জমা রাখেন। ব্যক্তির পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিকভাবেও অর্থ জমা রাখা হয় সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে।
এক বছরের ব্যবধানে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থ জমার পরিমাণ বৃদ্ধির বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। এ ব্যাপারে সরকার সুইজারল্যান্ড সরকারের 
সঙ্গে যোগাযোগ করে বাংলাদেশি গ্রাহকদের বিষয়ে তথ্য চাইতে পারে। একই সঙ্গে দেশ থেকে অর্থ পাচারের প্রবণতা যাতে না বাড়ে, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক রাখতে হবে।



 












সর্বশেষ সংবাদ
কুমিল্লায় করোনা ও ডেঙ্গুতে দুইমৃত্যু
কুমিল্লায় সরকারি তথ্যের সাথে ডেঙ্গু সংক্রমণের বাস্তবতার মিল নেই
সাবেক সিইসি নূরুল হুদা পুলিশ হেফাজতে
কুমিল্লা জেলা বাস ও মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ শ্রমিকদের বিরুদ্ধে
চান্দিনায় পুলিশ পরিচয়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে এনজিও কর্মকর্তার বাড়িতে ডাকাতি
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লায় করোনা ও ডেঙ্গুতে দুই জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় এয়ারসফট পিস্তল ওয়াকিটকি ও ধারালো অস্ত্রসহ যৌথবাহিনীর অভিযানে দুই যুবক আটক
৫৮ লাখ টাকার অপচয়ে আকাশমুখী লিফট
প্রধানমন্ত্রী পদে কেউ ১০ বছরের বেশি থাকতে পারবেন না: ডা. তাহের
সাবেক সিইসি নূরুল হুদা পুলিশ হেফাজতে
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২