শিক্ষাছুটির
অনিয়মের কারনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগে শিক্ষক সংকট দেখা
দিয়েছে। মাত্র ৫ জন শিক্ষক দিয়ে পাঠ্য কার্যক্রম চলছে বিভাগটিতে। ফলে সঠিক
শিক্ষা-কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে সেশনজট।
জানা যায়,
ফার্মেসি বিভাগে সর্বমোট ১২ জন শিক্ষক রয়েছেন। এর মধ্যে বিভাগে কর্মরত
আছেন ৫ জন শিক্ষক। বাকি ৭ জন শিক্ষক রয়েছেন শিক্ষাছুটিতে। তবে
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী একটি বিভাগে ১০ শতাংশের বেশি শিক্ষক একসাথে
ছুটিতে থাকতে পারেন না। কিন্তু ফার্মেসী বিভাগে ৫৮ শতাংশ শিক্ষক ছুটিতে
রয়েছেন।
বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিভাগটিতে মোট
৬টি ব্যাচ বর্তমান রয়েছে। ৬টি ব্যাচে সর্বমোট ২০০ ক্রেডিটের কোর্স চলমান।
বর্তমানে বিভাগের নির্ধারিত সংখ্যক শিক্ষক না থাকায় নিয়মিত ক্লাস গ্রহণে
বিঘ্ন ঘটছে। অনেক সময় নির্দিষ্ট বিষয়ের ক্লাস অনিয়মিতভাবে পরিচালিত হয়।
এছাড়াও শিক্ষা মূল্যায়ন কার্যক্রম তথা অ্যাসাইনমেন্ট যাচাই, পরীক্ষার
প্রশ্নপত্র তৈরি ও খাতা মূল্যায়ন নির্দিষ্ট সময়ে সম্পন্ন করা যাচ্ছে না।
ফলে তৈরি হচ্ছে সেশনজট।
ফার্মেসি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের
শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত বলেন, "আমাদের বিভাগে কাগজে-কলমে ১২ জন শিক্ষক
রয়েছেন, কিন্তু বর্তমানে বিভাগে কর্মরত আছেন মাত্র ৫ জন। এর মধ্যে একজন
বিজ্ঞান অনুষদের ডিন হওয়ায় কার্যত ক্লাস নিচ্ছেন মাত্র ৪ জন শিক্ষক। ফলে
প্রতিটি ব্যাচে একজন শিক্ষকের ওপর দুটি করে কোর্স পড়ানোর চাপ পড়ছে। এই
সংকটের কারণে আমরা সেশনজটে পড়ছি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি
জানাই, যেন দ্রুত আমাদের বিভাগে নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়।"
এ বিষয়ে
বিভাগীয় চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. প্রদীপ দেবনাথ বলেন, "এই সংকট
দৃশ্যমান। শিক্ষক সংকটের কারনে বর্তমানে কর্মরত শিক্ষকদের উপর বাড়তি চাপ
পড়ছে। বিভাগে মোট ছয়টি ব্যাচ চলমান। পাঁচ জন শিক্ষক দিয়ে মোট ২০০ ক্রেডিটের
কোর্স পড়াতে হয়। ফলে সঠিক ভাবে কোর্স সম্পন্ন ও মূল্যায়ন করা যাচ্ছে না।
আমরা বিষয়টি উপাচার্যকে বিষয়টি জানিয়েছি। শিক্ষক সংকেটের কারনে ইউজিসি থেকে
শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে উপাচার্যের সাথে কথা হয়েছে।"
উপাচার্য
অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, ‘এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে মাত্র ৫ জন
শিক্ষক দ্বারা একটি বিভাগ পরিচালিত হচ্ছে। শিক্ষকদের কারা ছুটি দিয়েছেন তা
আমি জানি না। তবে আমরা “লিভ ভ্যাকেন্ট পোস্টে” শিক্ষক নিয়োগের জন্য
ইউজিসিতে আবেদন করব।’