নিজস্ব প্রতিবেদক:
দীর্ঘদিন
ধরে সংস্কার না হওয়ায় কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার প্রধান সড়কটিতে অসংখ্য
খানা-খন্দ সৃষ্টি হয়েছে। এরমধ্যে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার সামনে
থেকে শুরু হয়ে টঙ্গীরপাড় মাদরাসা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার সড়কের বেহাল
দশা। প্রকল্পটি চতুর্থ বারের মতো টেন্ডারে যাওয়ায় বিলম্ব হচ্ছে বলে
জানিয়েছে সওজ কর্তৃপক্ষ। ফলে সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি সড়কের দুর্ভোগে তিন
উপজেলার হাজারো মানুষ।
সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার
সামনে থেকে শুরু হয়ে টঙ্গীরপাড় হয়ে লালমাই উপজেলার হাজতখোলা সড়কটি দিয়ে
প্রতিদিন চলাচল করেন পথচারী, শিক্ষার্থী, রোগীসহ তিন উপজেলার হাজারো মানুষ।
কুমিল্লা শহরে প্রবেশ করার জন্য সদর দক্ষিণ, লালমাই ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার
মানুষ এই সড়কটি বিকল্প সড়ক হিসাবে ব্যবহার করে থাকে। এছাড়াও কুমিল্লা সদর
দক্ষিণ উপজেলা পরিষদ, সদর দক্ষিণ মডেল থানা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
এসড়কের পাশেই অবস্থিত। গত বছরের ভয়াবহ বন্যা ও দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে
সড়কের বিভিন্ন অংশে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত আর খানা-খন্দে যেমন যানবাহন চলাচল
ব্যাহত হচ্ছে তেমনি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে এ এলাকার মানুষদের।
সরেজমিনে
গিয়ে দেখা যায়, সড়কটির পিচ-ঢালাই উঠে গিয়ে ছোট-বড় গর্তে পরিণত হয়েছে।
সামান্য বৃষ্টিতে কাঁদা সৃষ্টি হওয়ায় প্রতিনিয়ত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা,
ভ্যানগাড়ি ও মোটরসাইকেল আরোহীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এ
সড়ক দিয়ে নিয়মিত চলাচলকারী মাজহারুল ইসলাম বাপ্পি জানান, এ সড়ক দিয়ে
প্রতিদিন স্কুল, কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ এলাকার হাজারো মানুষ আসা-যাওয়া করে।
এ সড়কের অনেক স্থানে পিচ-ঢালাই উঠে মাটি বেড়িয়ে কয়েক ফুট গর্ত হয়েছে।
বৃষ্টির দিনে সড়কের গর্তগুলো পানিতে ঢাকা পড়ায় বেশিরভাগ গাড়ি, দুর্ঘটনার
শিকার হয়ে থাকে। শুকনো মৌসুমে এসব গর্ত পেড়িয়ে গাড়ি চলাচল করলেও একটু
বৃষ্টি হলেই সড়ক যেন মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়। অথচ সড়কটি মেরামতের জন্য কেউ
কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেননি। টেন্ডার হয়েছে বলে গত দুই বছর যাবত শুনে আসছি।
বাস্তবতা হচ্ছে এর বিপরীত। সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে যেকোনো সময় বড়
ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানান তিনি।
পিপুলিয়া দিঘিরপাড় টি আই কে
মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণিতে ছাত্রী ফাতেমাতুজ যোহরা জানান,
খুব কষ্ট করে আমরা এ সড়ক দিয়ে কলেজে আসা-যাওয়া করি। ভাঙ্গা সড়কে চলাচল করতে
অনেক কষ্ট হয়। সামনে এইচএসসি পরীক্ষা, বাধ্য হয়ে এই সড়ক দিয়ে কলেজে আসতে
হয়।
অটোচালক ওয়াদুদ জানান, বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী আনা-নেওয়ার জন্য এই সড়কে
যানবাহন চলাচল করতে হচ্ছে । কিন্তু সড়কটি অনেক দিন সংস্কার না করায় পিচ ও
খোয়া উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্ত পাড় হয়ে গাড়ি চলাচল
ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। অনেক সময় সড়কে গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনা ঘটছে। এছাড়াও
অসুস্থ বয়স্ক রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। আর বৃষ্টি
হলে সড়কের গর্তগুলো যেন একেকটা ছোট নর্দমায় পরিণত হয়। সব মিলিয়ে ঝুঁকি
নিয়েই সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
এবিষয়ে কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের
নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা বলেন, জনদুর্ভোগ লাগবে দ্রুত
সময়ের মধ্যে সড়কটির কাজ শুরু করতে আন্তরিকতার সাথে কাজ করা হচ্ছে।