নিজস্ব
প্রতিবেদক: কুমিল্লার দেবিদ্বারে মো: শফিউল্লাহ (৩৮) নামে এক ভ্যান চালককে
শাবল জাতীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে ওয়ার্কশপে লাশ ফেলে পালিয়েছে
ঘাতক। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার ভানী ইউনিয়নের ত্রিবিদ্যা গ্রামের
চৌরাস্তায় একটি অটো রিকশা গ্যারেজে ঘটনাটি ঘটে। নিহত শফিউল্লাহ ভানী
গ্রামের বীর মুক্তিযুদ্ধা মোছলেম উদ্দীনের ছেলে। ঘাতক রাসেল ওই ওয়ার্কশপের
মালিক বলে জানা গেছে। অভিযুক্ত রাসেল ভানী ইউনিয়নের আন্দিরপার গ্রামের
জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার বিকেল দুপুরে ত্রিবিদ্যা
চৌরাস্তায় একটি ওয়ার্কশপের মালিক রাসেলের সাথে ইজিবাইক চালক শফিউল্লাহর
পাওনা টাকার জেরে ধরে হাতাহাতি হয়। হাতাহাতির এক পর্যায়ে লোহা দিয়ে মাথায় ও
চোখে আঘাত করলে ওয়ার্কশপের ভেতরে অজ্ঞান হয়ে পড়ে শফিউল্লাহ। পরে
শফিউল্লাহকে অজ্ঞান অবস্থায় ওয়ার্কশপের ভিতরে ফেলে শাটার বন্ধ করে ঘাতক
রাসেল পালিয়ে যায়। পরে ঘাতক রাসেল এই সবুজ নামের এক যুবককে ফোন করে জানায়
ওয়ার্কশপের ভেতরে শফিউল্লাহ পড়ে আছে। এই ফোন পেয়ে সবুজ শফিউল্লাহর পরিবারের
সদস্যদের কে জানালে সন্ধ্যায় তারা গিয়ে ওই ওয়ার্কশপের ভেতর থেকে
শফিউল্লাহকে মৃত অবস্থায় পায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে
পুলিশ।
এদিকে নিহত শফিউল্লাহর ৩ ছেল ও ৩ মেয়ের জনক। মৃত্যুর পর তার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
নিহত
শফিউল্লাহর স্ত্রী কান্নাজড়িত কন্ঠে তাসলিমা বেগম বলেন, আমার স্বামীকে কেন
মারলো, আমার এই ছেলে মেয়ে গুলোরে কেন এইভাবে এতিম করলো? এই ছোট খাটো ঝগড়ায়
একটা মানুষরে এমনে মারতে পারে না।
এদিকে শফিউল্লাহর নিহতের ঘটনায় তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছলেম উদ্দিন শোকে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
এ
ব্যাপারে দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ শামশুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াস
বলেন, খবর পেয়ে আমি এবং দেবিদ্বার থানার একদল পুলিশ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ভানী
ইউনিয়নের ত্রিবিদ্যা গ্রামের একটি ওয়ার্কশপ থেকে শফিউল্লাহ নামে একজনের
লাশ উদ্ধার করেছি। ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল প্রেরণ করা হয়েছে।
পাওনা টাকার জের ধরে গ্যারেজের মালিক রাসেলই অটো চালক শফিউল্লাহকে মেরেছে
তার প্রমাণ আমাদের কাছে আছে, এই ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ঘাতক
রাসেলকে গ্রেফতার অভিযান চলছে।
ওসি শামসুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াস আরো
বলেন, শফিউল্লাহকে ধারালো শাবল জাতীয় কোন অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। তার
মাথায় ও চোখে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।