ফেডারেশন
কাপের ফাইনালের হারের ক্ষতে কিছুটা প্রলেপ দিতে, প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা
স্বপ্ন আরও জোরাল করতে যতটুকু মরিয়া হওয়ার প্রয়োজন ছিল, তার ছিটেফোঁটাও
দেখা গেল না আবাহনীর খেলায়। বরং লিগ শিরোপা ‘হাতছাড়া’ জেনেও সেরাটা নিংড়ে
দিল বসুন্ধরা কিংস। আবাহনীর বিপক্ষে জোড়া গোল করলেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম।
জয়ের আনন্দ সঙ্গী হলো ভ্যালেরি তিতের দলের।
বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় শুক্রবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ত্রয়োদশ রাউন্ডের ম্যাচে আবাহনীকে ২-০ গোলে হারিয়েছে কিংস।
প্রথম পর্বের দেখায় সুমন রেজার একমাত্র গোলে জিতেছিল আবাহনী। সে হারের মধুর প্রতিশোধও ফিরতি লেগের দেখায় নিয়ে নিল কিংস।
কিংসের
জয়ে লাভ বরং হলো মোহামেডানেরই বেশি। দিনের অন্য ম্যাচে পুলিশ এফসিকে ৩-১
গোলে হারানো মোহামেডান ১৩ ম্যাচে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে শিরোপার পথে আরও এগিয়েছে।
দ্বিতীয় স্থানে থাকা আবাহনী এই হারে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে পিছিয়ে
পড়েছে ৭ পয়েন্টের ব্যবধানে। কিংস তৃতীয় স্থানে আছে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে।
আক্রমণ,
প্রতি-আক্রমণে শুরু থেকে জমে ওঠা ম্যাচে প্রতিপক্ষের বক্সে গিয়ে কেউ
কার্যকর হতে পারছিল না। একাদশ মিনিটে একাধিক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে একাই
চেষ্টা করেন রিমন হোসেন, বল চলে যায় পোস্টের অনেক বাইরে দিয়ে। ভালো জায়গায়
থেকেও রিমনের কাছ থেকে বল না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেন কিংসের ফরোয়ার্ড রাকিব
হোসেন।
পাঁচ মিনিট পর রাকিবের কাছ থেকে ফিরতি পাস ধরে নিখুঁত শটে জাল
খুঁজে নেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। নিজের সাবেক ক্লাব আবাহনীর বিপক্ষে গোলের
উদযাপন তিনি সারেন আকাশি-নীল সমর্থকদের উদ্দেশ্যে করজোড়ে ক্ষমা চাওয়ার
ভঙ্গিতে। এই গোল হজমের পর আবাহনী খেলতে থাকে বিবর্ণ ফুটবল।
২৬তম মিনিটে
সতীর্থের ক্রসে সুমনের হেড অল্পের জন্য যায় পোস্টের বাইরে; তাতে বিরতির আগে
প্রথম ভালো সুযোগটি নষ্ট হয় কদিন আগে কিংসের কাছে ফেডারেশন কাপের ফাইনালে
হেরে আসা আবাহনীর।
একটু পর ভালো জায়গায় বল পেয়েও মোহাম্মদ হৃদয়ের চ্যালেঞ্জে তালগোল পাকিয়ে জনি বল হারালে নষ্ট হয় কিংসের ব্যবধান দ্বিগুণের সুযোগ।
দ্বিতীয়ার্ধের
শুরুতেই ব্যবধান হয় দ্বিগুণ। রাকিবের পাস ধরে দারুণ কোনাকুণি শটে জাল
খুঁজে নেন ফাহিম। গোলরক্ষক মিতুল মারমা ঝাঁপিয়ে পাননি বলের নাগাল। এরপর
কিংসের খেলায় গতি কমে।
৮১তম মিনিটে বাইলাইনের ওপর থেকে ফাহিমের পাস ধরে
উড়িয়ে মেরে সুবর্ণ সুযোগ নষ্টের হতাশায় মুখ ঢাকেন ইনসান আলি। এর ছয় মিনিট
পর ইভান্স ইত্তির প্লেসিং শট পোস্টে প্রতিহত হলে ব্যবধান আর বাড়িয়ে নিতে
পারেনি কিংস।
দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে গোলমুখ থেকে আরমান ফয়সাল আকাশ
গোলকিপারকে একা পেয়েও তাড়াহুড়ো করে উড়িয়ে মারলে ব্যবধান কমানো গোলের দেখাও
পায়নি আবাহনী।
অন্তিম সময়ে সোহেল রানা ও আসাদুল মোল্লার মধ্যে বলের
নিয়ন্ত্রণ নিয়ে হওয়া সংঘর্ষের উত্তাপে হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কিতে জড়ায় দুই
পক্ষ। রেফারি দ্রুত এসে শান্ত করেন পরিস্থিতি। ওই ঘটনায় কিংসের সোহেল,
সাদউদ্দিন ও আবাহনীর শাহিন আহমেদকে দেখান লাল কার্ড। মিনিট পাচেঁক পর খেলা
শুরুর পরপরই শেষের বাঁশি বাজান রেফারি। এরপর ডাগআউটেও কিছুক্ষণ থাকে
উত্তপ্ত পরিস্থিতি!