আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের অঙ্গীকার তুলে ধরেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৮০তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি। একই সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগ, ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাক্সক্ষা, জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং রোহিঙ্গা সংকটও তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), বিটিভি নিউজ ও বাংলাদেশ বেতার প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার করে। অনুষ্ঠান সূচি অনুযায়ী, নিউইয়র্ক স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় ইউএনজিএ অধিবেশন পুনরায় শুরু হয়। প্রধান উপদেষ্টা অধিবেশনে ১০ম বক্তা হিসেবে ভাষণ দেন।
প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে বলেন, জাতিসংঘ সনদের আট দশক পূর্তি উপলক্ষ্যে এই মহান পরিষদে উপস্থিত সকল সদস্য রাষ্ট্রকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। এবারের অধিবেশন অতীত দর্শন ও ভবিষ্যতের রূপরেখা তৈরি— উভয়ের জন্যই বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
গত আট দশক ধরে জাতিসংঘ ধারাবাহিকভাবে তার কর্মপরিধি সম্প্রসারিত করেছে এবং নানা ক্ষেত্রে আরো গভীরভাবে সম্পৃক্ত হয়েছে। বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা, মানবাধিকার, বিশ্বব্যাপী মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন, ন্যায়বিচার, ন্যায্যতা ও সমতা প্রসারে জাতিসংঘ অনস্বীকার্য ভূমিকা রেখেছে। জাতিসংঘের কারণেই আজ বিশ্বের ১২০ টি দেশের প্রায় ১৩ কোটি বিপদাপন্ন মানুষকে জরুরি খাদ্য ও মৌলিক মানবিক সহায়তা, এবং ৪৫ শতাংশ শিশু-কে টিকা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে।
জাতিসংঘের সংস্থাগুলো বহুপাক্ষিক সহযোগিতায় বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশন, টিকা এবং অন্যান্য জীবনরক্ষাকারী সেবা ও সরঞ্জামের যোগান দিয়ে দুর্দশাগ্রস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।
পাশাপাশি, গত কয়েক দশকে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংঘাত নিরসন এবং বহু বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জাতিসংঘের সীমাবদ্ধতাও আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। তবু সামগ্রিকভাবে জাতিসংঘের ভূমিকা মানবজাতির জন্য ইতিবাচক ও কল্যাণকর।
প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে বলেন, গত বছর, এই মহান সভায় আমি দাঁড়িয়েছিলাম সদ্য গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত একটি দেশের রূপান্তরের আকাঙ্ক্ষা আপনাদের শোনানোর জন্য। আজ আমি এই রূপান্তরের অগ্রযাত্রায় আমরা কতটুকু অগ্রসর হতে পেরেছি তা বলবো।
পৃথিবীর প্রতি ১০০ জনের মধ্যে তিনজনের মতো বাংলাদেশে বাস করে। কিন্তু সেকারণে অথবা ভূ-রাজনৈতিকভাবে বিশ্বের একটি গুরুত্ব্বপূর্ণ অবস্থানে বাংলাদেশ রয়েছে বলে আমাদের এ ইতিহাস জানার দরকার, তা কিন্তু নয়।
বরং এ কারণে বাংলাদেশের এই বর্ণনাটি গুরুত্বপূর্ণ যে তা সাধারণ মানুষের অসাধারণ ক্ষমতার উপর আস্থা তৈরি করবে, এ কারণে বর্ণনাটি গুরুত্বপূর্ণ যে তা বিশ্বের সকল দেশের মধ্যে আশার সঞ্চার করবে, যে সংকট যত গভীরই হোক না কেন বা তার নিরসন যত অসম্ভবই মনে হোক না কেন, কখনই তা থেকে উত্তরণের পথ হারিয়ে যায় না।
অধ্যাপক ইউনুস বলেন, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের দাবিতে এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ জন্ম লাভ করে। কিন্তু যে অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা বিশাল আত্নত্যাগ করেছিলাম তা গত পাঁচ দশকে বার বার বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। বারবার আমাদের ছেলেমেয়েদের নেতৃত্বে আমাদের জনগণকে অসংখ্য ত্যাগ স্বীকার করে সে অধিকারকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে হয়েছে।
এই বছর আমরা ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’-এর প্রথম বার্ষিকী পালন করেছি—যে অভ্যুত্থানে আমাদের তরুণসমাজ স্বৈরাচারকে পরাভূত করেছিল, যার ফলে আমরা বৈষম্যমুক্ত ও ন্যায়বিচার ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের অভিযাত্রা নতুনভাবে শুরু করতে পেরেছি। সেই বৈষম্যমুক্ত ও ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের আকাঙ্ক্ষা পূরণের দায়িত্ব দেওয়া হয় আমাকে ও আমার সহকর্মীদের। ভেঙেপড়া রাষ্ট্র কাঠামোকে পুনর্গঠন করে জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য প্রয়োজন ছিল ব্যাপক প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের। যে বিপুল জনসমর্থনের মাধ্যমে আমরা দায়িত্ব পেয়েছিলাম, তার প্রেক্ষাপটে আমাদের জন্যে সহজ পথ ছিল নির্বাহী আদেশে সংস্কার কাজগুলো করা। কিন্তু আমরা বেছে নেই কঠিন পথ—অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই পথ।
আমাদের লক্ষ্য ছিল ক্ষমতার ভারসাম্যপূর্ণ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো গড়ে তোলা—যেখানে আর কোনো স্বৈরশাসকের আবির্ভাব হবে না, কোনো নির্বাচিত নেতা রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক স্বরূপকে ক্ষুণ্ন করতে পারবে না, কিংবা রাষ্ট্র ও জনগণের রক্ষকরা ভক্ষকে পরিণত হতে পারবে না।
শাসনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম, নারী অধিকারসহ সকল জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার করার জন্য আমরা ১১টি স্বাধীন সংস্কার কমিশন প্রতিষ্ঠা করি। কমিশনগুলো জনমত যাচাই ও গভীর পর্যালোচনা করে বিস্তারিত সংস্কার কার্যক্রম সুপারিশ করে।
এ সংস্কার সুপারিশগুলো টেকসইভাবে বাস্তবায়নের জন্য আমরা একটি জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন গঠন করি যারা ৩০টিরও বেশি রাজনৈতিক দল ও জোটকে নিয়ে আলোচনায় বসে। এ কমিশনের লক্ষ্য ছিল সংস্কার প্রস্তাবগুলোর প্রতি দলমত নির্বিশেষে একটি টেকসই সামাজিক অঙ্গীকার তৈরি করা। আমাদের এই অন্তর্ভুক্তিমূলক পদক্ষেপ সফল হয়। আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে সকলে মিলে “জুলাই ঘোষণা”-র মাধ্যমে এই সংস্কার কার্যক্রমের প্রতি আমাদের সময়াবদ্ধ অঙ্গীকার ব্যক্ত করি। অর্থাৎ আগামী নির্বাচনে যেই দলই জনগণের সমর্থন পাক না কেন, সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নে আর কোনো অনিশ্চয়তার অবকাশ থাকবে না।
আপনারা জানেন যে, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আমরা জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছি। পাশাপাশি, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও আইনের শাসন নিশ্চিত করবার জন্য আমরা নিরবচ্ছিন্নভাবে নাগরিকবান্ধব সংস্কার চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, গত বছর দায়িত্ব গ্রহণের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই আমি জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারকে আমন্ত্রণ জানাই পতিত স্বৈরশাসক কর্তৃক সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নৃশংসতার চিত্র উদ্ঘাটন করার জন্য। তারা মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করে বিস্তারিত প্রতিবেদনের পাশাপাশি ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্যে যে সুপারিশমালা দিয়েছে, তা আমরা আমাদের জাতীয় সংস্কার কার্যক্রমে যুক্ত করেছি।
গত বছর সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের পূর্বেই আমরা গুম সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক কনভেনশনে যোগ দিয়েছিলাম। এখন এর বিধানসমূহ জাতীয়ক্ষেত্রে বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে। এ বছর, আমরা জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী কনভেনশনের ঐচ্ছিক প্রোটোকলে যোগ দিয়েছি এবং এর বাস্তবায়নে একটি স্বাধীন প্রতিরোধমূলক জাতীয় প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছি।
নিবর্তনমূলক স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা হতে মানবাধিকার সুরক্ষাকারী একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্যে প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমরা আমাদের দেশে তিন বছর মেয়াদে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের একটি মিশন পরিচালনার অনুমোদন দিয়েছি যা ইতোমধ্যেই কার্যক্রম শুরু করেছে।
আমাদের এ সকল পদক্ষেপ ও অঙ্গীকার জনগণের প্রত্যাশারই প্রতিফলন। আর এ প্রত্যাশা মূলত একটি গণতান্ত্রিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বহুত্ববাদী সমাজ গড়ে তোলারই প্রত্যাশা।
প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে আরো বলেন, আমাদের উন্নয়ন কৌশলের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে—সুশাসন, সামাজিক অন্তর্ভুক্তি ও টেকসই উন্নয়ন। বিগত দেড় দশকের অভিজ্ঞতায় আমরা দেখেছি যে জবাবদিহিতা ছাড়া যে কোনো উন্নয়ন ক্ষণস্থায়ী ও ভঙ্গুর। রাজনৈতিক হীনস্বার্থ ও দুর্নীতির উদ্দেশ্যে গৃহীত অবকাঠামো প্রকল্প শুধু যে অর্থনীতির উপরই চাপ বাড়ায় তা নয়, তা জনগণের কোনো কল্যাণও করে না। দায়িত্ব গ্রহণের পর আমরা একে একে আবিষ্কার করি দুর্নীতি ও জনগণের সম্পদ চুরি কি ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করেছিল এবং তার ফলশ্রুতিতে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা কি ভয়ানক নাজুক ও ভঙ্গুর হয়ে পড়েছিল।
আমরা এর অবসান ঘটাচ্ছি যেন আর কখনোই উন্নয়নকে জনগণের সম্পদ আত্মসাতের অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা না যায়। দেশের নাজুক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মজবুত করতে আমরা সংস্কারমূলক কিছু কঠিন কিন্তু প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি সংস্কার হলো রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থাপনার সংস্কার— যেখানে নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সংস্থাকে পৃথক করার জন্য আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে, এবং রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি পাবে। এই উদ্যোগগুলো সদ্যসমাপ্ত ঋঋউ৪ সম্মেলনে গৃহীত সেভিয়া অঙ্গীকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
আমরা আশা করি যে, বাংলাদেশে যেমন সেভিয়া অঙ্গীকারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সংস্কার করবার চেষ্টা করছি, তেমনি উন্নত বিশ্বও সেভিয়ার সামষ্টিক অঙ্গীকার অনুসারে তাদের দায়িত্ব পালনে আন্তরিক হবে।
একই সাথে আমরা মনে করি, আন্তর্জাতিক অর্থায়ন ব্যবস্থায় বৈশ্বিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া ও ব্যবস্থাপনার সংস্কার, একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক আন্তর্জাতিক কর সহযোগিতার বৈশ্বিক কাঠামো, অবৈধ আর্থিক প্রবাহ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সমন্বিত বৈশ্বিক পদক্ষেপ গ্রহণ এবং অবৈধ ও দুর্নীতিলব্ধ অর্থ ও পাচারকৃত সম্পদ পুনরুদ্ধারেও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মাননীয় সভাপতি,
দেশের পাচার হওয়া অবৈধ সম্পদ পুনরুদ্ধার করা বর্তমানে আমাদের অন্যতম শীর্ষ অগ্রাধিকার। গত ১৫ বছরে দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি ডলার অবৈধভাবে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। আমরা নিরলসভাবে এই সম্পদ ফেরত আনার চেষ্টা করছি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর আইনি প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য নানাবিধ প্রতিবন্ধকতার কারণে আমাদের এই প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর দৃঢ় সদিচ্ছা ছাড়া আমরা পাচার হওয়া অবৈধ সম্পদ পুনরুদ্ধারে সফল হব না। বিশ্বের বিদ্যমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থা উন্নয়নশীল দেশ থেকে সম্পদের এই অবৈধ পাচার কার্যকরীভাবে প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। কোন কোন ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিধি বিধানগুলো বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন ট্যাক্স হেভেন এ বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ স্থানান্তরে উৎসাহিত করছে।
তাই, যেসব দেশ ও প্রতিষ্ঠান এ পাচারকৃত সম্পদ গচ্ছিত রাখবার সুযোগ দিচ্ছে, তাদের আমি আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন এই অপরাধের শরিক না হয়— এ সম্পদ তার প্রকৃত মালিককে অর্থাৎ কৃষক, শ্রমিক ও সাধারণ করদাতাদের নিকট ফিরিয়ে দিন। আমি উন্নয়নশীল দেশ হতে সম্পদ পাচার রোধে কঠোর আন্তর্জাতিক বিধি বিধান প্রণয়ন এবং এর প্রয়োগ নিশ্চিতের প্রস্তাব করছি।